v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-02-13 13:57:50    
চীনের সর্বোচ্চ বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত পুরস্কার বিজয়ী- ইয়ে তু জেং

cri
    সম্প্রতি চীনে ২০০৫ সাল জাতীয় সর্বোচ্চ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। চীনের বিখ্যাত আবহাওয়াবিজ্ঞানী ইয়ে তু জেং ও অন্য একজন বিজ্ঞানী সর্বোচ্চ পুরস্কার পেয়েছেন।

    ৯০ বছর আগে, পূর্ব চীনের থিয়েনচিন শহরে ইয়ে তু জেং'য়ের জন্ম হয়। সেই বছরেই চীনের প্রথম আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্যের রেকর্ডেরও জন্ম। এ থেকে মিস্টার ইয়ে ও আবহাওয়ার মধ্যে সম্পর্ক শুরু হয়। বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার উপর ইয়ে তু জেং'য়ের আগ্রহও ক্রমেই বেড়ে যায়। চীনে তাঁর বেচালার ডিগ্রী পাওয়ার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে অধিকতর পড়াশোনা করে সেখানে ডক্টার ডিগ্রী পেলেন। ১৯৫০ সালে তিনি চীনে ফিরে এসে নয়া চীনের আবহাওয়া শিল্প স্থাপনের জন্য বিশেষ অবদান রেখেছেন।

    অর্ধেক শতাব্দীর গবেষণায় মিস্টার ইয়েই বায়ুমন্ডল গতিবিদ্যা, পৃথিবীর বায়ু প্রবাহ, আবহাওয়াবিদ্যা এবং পৃথিবী পরিবেশ পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বহু সাফল্য পেলেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি তাঁর সাফল্যের চাবিকাঠি সম্পর্কে বলেন:

    "গবেষণায় আমার একটি নীতি আছে। তা হলো সত্য অনুসন্ধান এবং অত্যন্ত মনোযোগ দেয়া। আমি মনে করি এই নীতি সকল গবেষকের অনুসরণ করা উচিত।"

    তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনি অনেকবার কঠিন পরিবেশের মালভূমি ও মরুভূমিতে গিয়ে ফার্স্ট-হ্যান্ড তথ্য অনুসন্ধানে গেলেন। তারপর তথ্যগুলো নিয়ে মনোযোগ দিয়ে গবেষণা করে মালভূমির আবহাওয়া গবেষণার এই নতুন বিষয় স্থাপন করেছেন। এতে তিনি তিব্বত-ছিংহাই মালভূমি পূর্ব-এশিয়ার বায়ুমন্ডল গতিবিদ্যা ও আবহাওয়া পরিবর্তনের ওপর যে প্রভাব ফেলে তা আবিষ্কার করেছেন।

    পৃথিবীর আবহাওয়া পরিবর্তন ক্ষেত্রের গবেষণায় মিস্টার ইয়ে হলেন বিশ্বের কয়েকজন স্থাপকের একজন। তিনি মানবজাতির জলসেচ ও চাষ ইত্যাদি তত্পরতা আবহাওয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করে "মানবজাতির তত্পরতার প্রভাবে আবহাওয়া" তত্ত্বের কাঠামো স্থাপন করেছেন। তা চীনের আবহাওয়া গবেষণার মান উন্নত করা এবং আবহাওয়া পুর্বাভাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যুগিয়ে দিয়েছে।

    ইয়ে তু জেং'য়ের গবেষণাকালে সবসময়ে দেশের চাহিদাকেই প্রথম স্থান দেন।

    "গবেষণা কাজের মাধ্যমে দেশের চাহিদা মেটাতে হবে। দেশের যা প্রয়োজন তাই হবে আমাদের গবেষণার লক্ষ্যবস্তু। পৃথিবীর অগ্রসর প্রযুক্তি ব্যবহার করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নিজের উদ্ভাবনও দরকার।"

    গবেষণা করার সঙ্গে সঙ্গে মিস্টার ইয়ে অনেক ছাত্রছাত্রীকেও শিখিয়েছেন। তিনি তাদের শুধু গবেষণার জ্ঞান শেখানো নয়, বরং মানুষ হবার নৈতিক তাও শিখিয়ে দেন। ৬০ বছর বয়স্ক হুয়াং রোং হুই মিস্টার ইয়ের ছাত্র ছিলেন। তিনি এখন চীনের বিজ্ঞান একাডেমির একাডেমিশন। তিনি মনে করেন, তার সাফল্যের মূলে রয়েছে মিস্টার ইয়ে'র ভাল শিক্ষাদান। তিনি বলেছেন:

    "মিস্টার ইয়ে'র ছাত্র হিসেবে আমি তাঁর কাছ থেকে অনেক গুণ শিখেছি। আমার সাফল্য মিস্টার ইয়ে'র শিক্ষাদানের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। তিনি গবেষণায় অত্যন্ত মনোযোগ দেন এবং অন্যদের সঙ্গে খুব উদার ব্যবহার করেন। তিনি শুধু বিদ্যার মাস্টার নন, বরং মানুষ হিসেবে তিনিও মাস্টার। তিনি আমার মনের গুরু।"

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বয়স বাড়া সত্ত্বেও ইয়ে তু জেং নিজের গবেষণা কাজ বন্ধ করেননি। চীনে প্রতিদিন ৮ ঘন্টা কাজ করার নিয়ম, তাও যথেষ্ট নয় বলে তিনি মনে করেন। ৯০ বছর বয়স্ক বুড়ো হিসেবে ইয়ে তু জেং'র স্বাস্থ্য কিন্তু খুব ভাল। তিনি বলেছেন স্বাস্থ্য থাকার চাবিকাঠি হলো শরীর চর্চা। অনেক বছর ধরে তিনি হেঁটে হেঁটে অফিসে যান এবং বাড়ি ফিরেন। তিনি বলেছেন, গবেষণা ছাড়া তিনি বই পড়তে পছন্দ করেন।

    "খুব ক্লান্ত হলে আমি কিছু ক্ষণ বই পড়ি, বিশেষ করে উপন্যাস। এতে আমার মাথা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারে। আমি "উশিয়া উপন্যাস", মানে কংফু সম্পর্কিত উপন্যাস পড়তে পছন্দ করি। বিখ্যাত উশিয়া লেখক চিনইয়ুং'য়ের সকল বই আমি পড়েছিলাম।"

    মিস্টার ইয়ে আরো জানিয়েছেন, সুখাদ্য খাওয়া তাঁর জীবনের আরেকটি শখ।