v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-02-09 16:10:17    
ছোট নগর নানশিয়েন

cri
    আগে আপনাদের চীনের অনেক জায়গায় বেড়াতে নিয়ে গেছি । এ সব জায়গার মধ্যে কোন কোন জায়গা ছিল চীনের বিখ্যাত দশর্নীয়স্থান, কোনকোন জায়গা ছিল শতাধিক বছরসম্পন্ন প্রাচীনকালের ছোট ছোট নগর আবার কোন কোনজায়গা ছিল চীনের নাম-করা নদনদী আর পাহাড়গুলো। ।

    চীনের পূবার্ঞ্চলের জেচিয়াং প্রদেশে একটি উর্বর সমতলভূমি আছে। এটা হল হানচিয়াহু সমতলভূমি । এই সমতলভূমি এমন একটি জায়গা যেখানে ধানের খুব ফসল হয় এবং নদনদীতে পযার্প্ত মাছ ধরা যায়। তা ছাড়া এই জায়গাকে রেশমের জন্মস্থান বলা হয়। নানশিয়েন নামে একটি ছোট নগর এই সমতলভূমিতে অবস্থিত। ইতিহাসে এই ছোট নগরে অনেক লোক ব্যবসা করতেন। এখনও এই ছোট নগরে এ সব ব্যবসায়ীদের নিমির্ত বাড়ীঘর দেখা যায়। তাদের নিমির্ত ছোট-বড় উদ্যান ২০টিও বেলী।

    নানশিয়েন নগরের ইতিহাস ৭ শতাধিক বছরের। এখানকার সংস্কৃতি সুদীর্ঘকালের এবং দৃশ্য সুন্দর। ছোট ছোট নদী নগরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সড়ক আর বাড়ীঘর সবই নদীর পাশে তৈরী হয়। সড়ক বেশী বড় নয় এবং সড়কের দু'পাশের দোকানপটগুলোও ছোট আকারের। বেশীর ভাগ বাড়ীঘর কাঠের তৈরী। দরজারগুলোর উপর লান্ঠন ঝোলানো হয়। লোকেরা এ সব দেখে চীনের পুরাতন ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি অনুভব করতে পারেন। স্থানীয় লোক মিষ্টার জেন শিয়ে ফন বললেন, এই নগরের আয়তন মাত্র ৩ বর্গকিলোমিটারও বেশী। তবে এখানে বেশী কয়েক জন ধনী ব্যবসায়ীর জন্ম হন। তিনি বললেন,

    এই নগর বড় নয়, কিন্তু অতীতে এখানে বেশী কয়েক জন ধনী ব্যবসায়ীর জন্ম হন। যাদের মধ্যে ১২ জনের সম্পত্তি ১ লক্ষ লিয়েনের রৌপ্য হন। ১৭ শতাব্দী থেকে এই নগরের ব্যবসায়ীরা রেশমের ব্যাবসায় নিয়োজিত হন। তখন থেকে নানশিয়ের রেশম বাণিজ্য দেশজুড়ে বিখ্যাত। ১৮০ বছর আগে. ভারত , মিসর, সিরিয়া প্রভৃতি দেশগুলোতে এখানকার রেশম বিক্রি হত। ১৯১৫ সালে নানশিয়ের রেশম পানামা বিশ্ব প্রদর্শনীতে স্বর্ণপদক অজর্ন করে। রেশম ব্যবস্থা নানশিয়েনের ব্যবসায়ীদের জন্যে বিপুল অংকের অর্থ এনে দিয়েছে। তাদের ধনসম্পদ দেখানোর জন্যে তারা এই ছোট নগরে বিলাসী বাড়ীঘর তৈরী করেছেন। শিওলিয়েন ছুন অথবা শিওলিয়েন গ্রাম হল লিওইয়ং পরিবারের বসতবাড়ী ছিল যিনি এক সময় এখানকার সবচেয়ে ধনী লোক। বতর্মানে এটা হলো এই ছোট নগরের সবচেয়ে বড় উদ্যান। তাঁর এই বসতবাড়ীর আয়তন ১৭ হাজার বর্গমিটার। এই বসতবাড়ী নিমার্ন করতে ৪০ বছরও বেশী সময় লেগেছে। শিওলিয়েছুনের উত্তর দিকে একটি ছোট নদী আছে। নদীর তীরে একটি বড় বট গাছ। এই গাছ এই নগরের ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ছোট নদীর উপরের সেতু আমাদের এই পুরাতন উদ্যানে নিয়ে গেল। এই উদ্যানের স্থাপত্য স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। উদ্যানের কেন্দ্রীয় স্থানে এই পদ্ম পুকুর। এই পুকুরের চার দিকে ছোট-বড় কয়েকটি বুথ নিমির্ত হয়েছে। উদ্যানের ভিতরে আরও কয়েকটি ছোট ছোট উদ্যান আছে। এ সব ছোট ছোট উদ্যানে সাধারণত কৃত্রিম পাহাড় নিমির্তি হয়। এ সব কৃত্রিম পাহাড়ের উপর দাঁড়ালে বাইরের ধানের মাঠ দৃষ্টগোচর হয়।। লি বেই নামে একজন পযর্টক সংবাদদাতাকে বললেন, তিনি এ সব উদ্যানের বিন্যাস খুব পছন্দ করেন।তিনি বললেন,

    শিওলিয়েনছুনের উদ্যানগুলোর মধ্যে যেমন পাথর্ক্য আছে তেমনি সম্পর্কও আছে। এ ধরনের নকশা চমত্কার। এখানে পাহাড় আছে , পানি আছে। এ সব উদ্যান শুধু দক্ষিণ চীনে দেখতে পাওয়া যায়। নানছুন ছোট নগরে আসলে পযর্টকরা এখানকার দৃশ্য আকৃষ্টিত হন। নানশিয়েনে শুধু শিওলিয়েছুন দেখার মতো জায়গা নয়, বেইচিয়েলোও একটি দেখার মতো জায়গা। সেইচিয়েলো হল নদীতে নিমির্ত স্থাপত্যসংগ্রহ। গাইড সেন ছিন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, এই স্থাপত্যসংগ্রহের ইতিহাস চাঁর শাতাধিক বছরের। তিনি বলেছেন,

    কিংবদন্তিতে বলা হয়েছে, ৪০০ বছর আগে, এখানের একজন স্থানীয় কমর্কতা একটি ধনী পরিবারের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে করতে চান। কিন্তু এই ধনী লোক রাজি হননি। তাই তিনি বললেন, ভবিষ্যতে তাঁর মেয়ের সঙ্গে এক শো কাজের মেয়ে থাকবেন। এই কর্মকর্তা সেই ধনী লোকের নিহিত অর্থ বুঝতে পেয়েছেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে অবিলম্বে এক শোটি বাড়ীঘর তৈরীর কথা প্রতিশ্রুতি দেন। এটা হল এখানকার বেইচিয়েনলো অথার্ত একশো ঘরের গল্প। এ সব ঘর দেখতে সাধামিধে। ঘড়ের সামনে বৃষ্টি প্রতিরোধের জন্যে বিশেষ হল নিমার্ন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ঘরের মাঝখানে এই দেওয়াল নিমির্ত হয়। কাল পরিবর্তনে এ সব ঘরের মালিকা আর কাজের মেয়ে নয়। উপরন্তু ঘরের সংখ্যা কমে গেছে।দেখতেও অতীতের মতো সুমহান নয়। তবে এ সব ঘরে অতীতের আমেজ দেখা যায়। গোট নগর শান্ত। সারা দিন খুব কম মানুষ দেখা যায়। মাঝে মাঝে সড়কের দু'পাশে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের গল্প বলতে দেখতে পাওয়া যায়। গল্প বলার সময়ও তারা ফিসফিস কথা বলছেন। মনে হয় তারা অন্যদেরকে বিরক্ত করতে চান না। শ্রোতা বন্ধুরা, এতক্ষণ আপনারা শুনলেন চীন আন্তজার্তিক বেতারের নিজস্ব সংবাদদাতার লেখা একটি প্রতিবেদন। আপনাদের কেমন লেগেছে? আশা করি, চীন ভ্রমণের সুযোগ পেলে সশরীরে এই ছোট নগর দেখতে যাবেন কেমন? খুব মজা হবে তো।