v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-01-27 16:03:02    
স্তন্যদান মায়ের বহুমুত্র রোগ প্রতিরোধে সহায়ক

cri
    যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তদন্ত থেকে জানা গেছে , শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো মা'র বহুমুত্র রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার কমাতে পারে ।

    হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ মেডিক্যাল কলেজের তদন্ত থেকে জানা গেছে , মা যদি সন্তানকে নিজের দুধ এক বছর খাওয়ান , তাহলে তাঁর বহুমুত্র রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ১৫শতাংশ কমবে ।

    দ্বিতীয় বছর থেকে মা সন্তানকে যত সময় করে নিজের দুধ খাওয়ান তাঁর বহুমুত্র রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা ততই কমবে । তার ভুমিকা মা'র শেষ সন্তান জন্ম দেয়ার পরবর্তী ১৫ বছর পযন্ত কার্যকরথাকবে ।

    তদন্তের ফলাফল " মার্কিন মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট পত্রিকায়" প্রকাশিত হয়েছে । তদন্ত-রিপোর্টে বলা হয়েছে , এক কোনো মা'র যদি দুই সন্তান থাকে এবং যদি তিনি তাঁর প্রত্যেক সন্তানকে নিজের দুধ এক বছর করে খাওয়ান তাহলে তাঁর বহুমুত্র রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা এক-তৃতীয়াংশ কমবে ।

    হার্ভার্ড মেডিক্যাল কলেজের গবেষণা-গ্রুপ দুটো আলাদা গবেষণা প্রকল্পে এক লক্ষ ৫৭ হাজার মায়ের মধ্যে জরিপ চালিয়ে অবশেষে এই ফলাফল পেয়েছে ।

    গবেষণা গ্রুপের প্রধান গবেষক স্ডুবেই বলেছেন , বহু বছর ধরে আমরা কেবল জানতাম যে, মা'র দুধ খাওয়া শিশুর জন্যে উপকারী । কিন্তু তদন্ত থেকে জানা যায়, মা'র দুধ খাওয়ানো স্বয়ং মা'র জন্যে কল্যাণকর ।

    এক দিকে বলতে গেলে গর্ভধারণ বহুমুত্র রোগ হওয়ার আগের এক ধরণের অবস্থা , ইন্সিউলিনের বিরুদ্ধে অনেক এন্টিবডি সৃষ্টি হয় । এটা ভ্রূণের যথেষ্ট সুগার পাওয়ার নিশ্চয়তাবিধান করার এক পথ । দুধ খাওয়ানোর সময়পর্বশুরু হওয়ার পর এই সময়ে মা সাধারণত বহুমুত্ররোগ বিরোধী অবস্থায় থাকেন ।

    গবেষকরা স্বীকার করেন , সন্তানের জন্ম হওয়ার পর যদি মা সন্তানকে নিজের দুধ না খাওয়ান তাহলে তাঁর বহুমুত্র রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়ে যাবে ।

    স্ডুবেই মনে করেন যে , গবেষনাটি থেকে সন্তানকে মা'র দুধ খাওয়াতে উত্সাহ দেয়ার আরও এক যুক্তি প্রমানিত হয়েছে । তথ্য থেকে জানা গেছে , যে মা সন্তানকে নিজের দুধ খাওয়ান, তাঁর দিনে গড়ে ৫০০ ক্যালরি নষ্ট হয় । যেন তিনি ধীর গতিতে ৪-৫ মাইল পথ দৌঁড়েছেন ।

    এর আগেকার কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে যে , মা'র দুধ খাওয়ানো সম্ভবত মিট্যাবলিজমের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত । এই পরিবর্তনগুলো বহুমুত্র রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে । স্ডুবেই বলেন ,আমাদের গবেষণার ফলাফল তাদের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে ।

    স্ডুবেই জোর দিয়ে আরও বলেছেন যে ,হরমোন ও শারীরিক উপাদানে মা'র দুধ খাওয়ানো মা'র উপর যে কি ধরণের প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে আরও গবেষণা চালানো দরকার ।

    তাছাড়া জাতিসংঘ শিশু তহবিল সংস্থার সাম্প্রতিক এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে , মা'র স্তন্যদান প্রত্যেক বছরে ৬০ লক্ষ শিশুর প্রাণ বাচাঁতে পারে । যদি মা'র দুধ খাওয়ানোর প্রস্তাব আরও বেশী জোর করে উল্লেখ করা হয় তাহলে এতে আরও বেশী শিশু উপকৃত হবে ।

    জাতিসংঘ শিশু তহবিল সংস্থার কার্যনিবাহী চেযারম্যান ভিনিমান বলেছেন , পুরোপুরিভাবে মা'র দুধ খাওয়ানোর উপর নির্ভর করা শিশুর অনাহার ও মৃত্যুর সঙ্গে আমাদের লড়াইয়ের এক শক্তিশালী অস্ত্র । কারণ মা'র দুধ শিশুকে প্রয়োজনীয় ও উত্তম পুষ্টি ও ব্যাধি প্রতিরোধক শক্তি সরবরাহ করতে পারে ।

    জাতিসংঘ শিশু তহবিল সংস্থা প্রস্তাব করে বলেছে , জন্ম থেকে ৬ মাস পযন্ত শিশুকে পুরোপুরিভাবে মা'র দুধ খাওয়াতে হবে । এর পরবর্তী দু বছর বা আরও দীর্ঘ সময়কালে শিশুর বয়স অনুসারে মা বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন।

    কিন্তু জাতিসংঘ শিশু তহবিল সংস্থা উন্নয়নমুখী দেশগুলোর মা'র দুধ খাওয়ানোর অবস্থার উপর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ।

    গর্ভবতীদের কিকি জিনিস বেশী খাওয়া নিষিদ্ধ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক তথ্য বলা যাক ।

    গর্ভধারণ হচ্ছে ভ্রূণের সহজে বিকৃত হওয়ার এক বিপদ্জনক সময় , এই সময়ে ভ্রূণ খুব দ্রুতগতিতে বড় হয়ে যায় বলে এই সময়ে তরুণী গর্ভবতীদের পুষ্টি আহরনের উপর বেশী মনোযোগ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিকর জিনিস গ্রহণ এড়িয়ে যাওয়ার যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালানো উচিত । এক, চীনের তেলে ভাজা রুটি । রুটিটি প্রক্রিয়া করার সময়ে ফিটকিরি এতে মিশাতে হয় , ফিটকিরি এলুমিনিয়ামজাতের অজৈব পদার্থ, তাই তেলে ভাজা রুটি বেশী খেলে অতিরিক্ত এলুমিনিয়াম আহরন করার ফলে ভ্রূণের গুরু-মস্তিস্কের ক্ষতি হয় , যার ফলে জন্মগত বুদ্ধিহীনতার হার বেড়ে যায় । দুই, ফল, ফলের শতকরা ৯০ ভাগ হল পানি, তার পর ফল-সুগার , গ্লুকৌস, আখের সুগার আর ভিটামিন ।এই সব সুগার সহজে মানুষরা গ্রহণ করেন ,বেশী ফল খেলে শরীরের ওজন দ্রুত বেড়ে যায়, তাই সাধারণ সময়ে খাবারের এক ঘন্টা আগে বা পরে গর্ভবতীরা পরিমানমতো ফল খেতে পারেন । তিন , পালংশাক , পালংশাকের প্রধান উপাদান হল অক্সালিক এসিড, অক্সালিক এসিড দস্তা আর ক্যালসিয়াম দুটোরই ক্ষতিসাধন করে , বেশী পালংশাক খাওয়ার ফলে গর্ভবতীদের শরীরের দস্তা আর ক্যালসিয়ামের অভাব হয় এবং মায়ের স্বাস্থ্য আর ভ্রূণের বড় হওয়ার ক্ষতি হয় । চার , লোনা মাছ, লোনা মাছের ভেতরে এক ধরণের উপাদান মানুষের শীরে মিশে যাবার মাধ্যমে আরেক ধরণের উপাদানে পরিণত হয় , যা সহজে ক্যান্সার ডেকে আনে । পরীক্ষা থেকে জানা গেছে , সহজে ক্যান্সার ডেকে আনতে পারে এমন উপাদানটি গর্ভের ফুলের মধ্য দিয়ে ভ্রূণের শরীরে ঢুকতে পারে । পাঁচ, চা ও কফি , কফির মধ্যে নেশা সৃষ্টিকারী পদার্থ ক্যাফেইন আছে , ক্যাফেইন স্নায়ুকে উত্তেজিত করতে পারে , হৃত্পিন্ডের স্পন্দন দ্রুততর করতে পারে , রক্ত চাপ বাড়াতে পারে এবং গর্ভের ফুলের মাধ্যমে ভ্রূণের উপর প্রভাব বিস্তার করবে । ক্যাফেইন ভিটামিন বি-১ গ্রহণে বাধা দেয়ায় গর্ভবতীরা ফোলা রোগে আক্রান্ত হবেন । ছয়, ঠান্ডা পানীয় , অতিরিক্ত ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার ফলে পাকস্থলীর নড়াচড়ায় গোলমাল হতে পারে , অন্ত্রের নড়াচড়া বেড়ে যাওযায় গর্ভকোষে সংকোচন হয় এবং যার ফলে গর্ভপাত বা অকাল প্রসব হতে পারে । তাছাড়া , কোকজাতীয় পানীয়ের ভেতরকার ক্যাফেইন , রাসায়নিক বস্তু প্রভৃতি ভ্রূণের বড় হওয়ার অনুকুল নয় ।