বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ষষ্ঠ মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন ১৩ জানুয়ারী হংকংয়ে উদ্বোধন হয়। ছ'দিনব্যাপী সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দোহা দফা আলোচনার আলোচ্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, যাতে যথাসম্ভব আলোচনা বাস্তব অগ্রগতি অর্জিত হয়।
২০০১ সালের নভেম্বর কাটারের দোহায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার চতুর্থ মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে নতুন দফা বিশ্ব বহুপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা চালু হয়। এটা দোহা দফা। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা প্রতিশ্রুতি দেয়, দোহা দফায় উন্নয়নমুখী দেশগুলোকে আসল উপকার দেয়া হবে, সেজন্যে দোহা দফা আবার "উন্নয়ন দফা" ও "দোহা উন্নয়নের আলোচ্য বিষয়" বলা যায়।
দোহা দফা হল ১৯৯৫ সালের পয়লা জানুয়ারী প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রথম দফা বহুপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা। এর আগে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পূর্বরূপ সাবেক শুল্ক ও বাণিজ্য বিষয়ক সাধারন চুক্তি সংস্থার পরিচালনায় আটবার বহুপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দোহা দফা আলোচনায় আটটি আলোচ্য বিষয় হলো, কৃষি, অকৃষিজাত পণ্যের বাজারে প্রবেশ, পরিসেবা বাণিজ্য, নিয়ম আলোচনা, বাণিজ্য আর উন্নয়ন, মতভেদের সমাধান, মেধাস্বত্ব, বাণিজ্য আর পরিবেশ।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দোহা দফা ২০০৫ সালের পয়লা জানুয়ারীর আগে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মেক্সিকোর ক্যানকুনে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পঞ্চম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বিভিন্ন পক্ষ কৃষিসহ বিভিন্ন প্রশ্নে মতৈক্য হয় নি, সেজন্যে দোহা দফা আলোচনা অচলাবস্থায় পড়ে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা আর বিভিন্ন সদস্য দেশের প্রয়াসে, ২০০৪ সালের পয়লা আগস্ট বিভিন্ন সদস্য দেশ ও অঞ্চল দোহা দফা আলোচনার কাঠামো চুক্তি সম্পাদিত করে। বিভিন্ন সদস্য দেশ ও অঞ্চল আলোচনা সমাপ্ত করার সময় সীমা ২০০৬ সালের শেষ দিক পর্যন্ত স্থগিত রাখতে রাজী হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও ই ইউসহ প্রধান সদস্য দেশগুলো কৃষ ক্ষেত্রের মতভেদ দূর করতে পারে নি, সেজন্যে হংকং সম্মেলনে বিভিন্ন সদস্য দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে দোহা দফা সার্বিক চুক্তি সম্পাদন করার আরো বেশী অসুবিধা হয়। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক পাস্কাল লামী বলেছেন, যদিও বিভিন্ন সদস্য দেশ ও অঞ্চল হংকং সম্মেলনের অভীষ্ট কমিয়েছে, কিন্তু দোহা দফার প্রতি প্রত্যাশা কমানো যাবে না। বিভিন্ন সদস্যের উচিত আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস করা, যাতে ২০০৬ সালে আলোচনা সমাপ্ত করা যায়।
|