v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-01-11 20:29:32    
সপ্তম এশিয়া শিল্পকলা উত্সব চীনের ফো সান শহরে আয়োজিত

cri
    গত বছরের ১১ই নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত সপ্তম এশিয়া শিল্পকলা উত্সব দক্ষিণ চীনের কুয়াং তুং প্রদেশের ফো সান শহরে আয়োজিত হয়েছে । ২১টি দেশের পাঁচ শতাধিক শিল্পী এই উত্সবে অংশ নিয়েছেন । সপ্তম এশিয়া শিল্পকলা উত্সবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের নাম দেয়া হয়েছে ' এশিয়ার আকাশ '। এই অনুষ্ঠানে ২১টি দেশের শিল্পীরা ২৬টি নাচ ও গান পরিবেশন করেছেন । এই সব নাচগানে এশিয়ার বৈশিষ্ট্যময় স্থাপত্যকর্ম যেমন কাম্পুচিয়ার এঙ্কার গুহা , ভারতের তাজমহল , থাইল্যান্ডের মন্দির , চীনের রাজপ্রাসাদ ও আরব দেশগুলোর প্রাচীন দুর্গ দেখানো হয়েছে । দর্শকরা সানন্দে কাম্পুচিয়ার ময়ুর নাচ , চীনের প্রজাপতি নাচ , থাইল্যান্ডের পুতুলনাচ , ইন্দোনেসিয়ার আদিবাসীর নাচ , জাপানের ঢাক নাচ আর ব্রুনেইয়ের নাচ উপভোগ করেছেন।

    ১৯৯৮ সালে চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এশিয়ার শিল্পকলা উত্সব সুচিত হয় । এটা এশিয়ার আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের বার্ষিক মহাসম্মিলনী । এই উত্সব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের জন্য নিজ দেশের বৈশিষ্ট্যময় সংস্কৃতি প্রদর্শনের একটি প্ল্যাটফর্ম যুগিয়েছে । বর্তমান এশিয়া শিল্পকলা উত্সবের শ্লোগান হলো বহুমুখী সংস্কৃতি প্রদর্শন করুন , অভিন্ন উন্নয়নের জন্য সচেষ্ট হোন । এশিয়া শিল্পকলা উত্সবের আকার ও প্রভাব বিস্তারের জন্য যে সব এশিয় দেশ এই উত্সবে অংশ নেয় নি বা কম অংশ নিয়েছে , বর্তমান উত্সবে সেই সব দেশকে বিশেষভাবে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে । তুরস্কের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রী আটিলা কোকের নেতৃত্বাধীন তুরস্কের জাতীয় শিল্পী দল এই প্রথমবার এশিয়া শিল্পকলা উত্সবে অংশ নিয়েছে । মিঃ আটিলা কোক মনে করেন , এশিয়ার একটি বড় দেশ হিসেবে চীন এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও সহযোগিতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে আরো বিরাট ভূমিকা নিতে পারে । তিনি বলেছেন , এশিয়া শিল্পকলা উত্সব সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের একটি ভালো ফ্ল্যাটফর্ম । শিল্ক পথের দুই প্রান্তে অবস্থিত চীন ও তুরস্কের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা উচিত । চীনের উচিত সিল্ক রোডের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করা আর সিল্ক রোডের মাধ্যমে এশিয়ার দেশগুলোকে ঘনিষ্ঠভাবে ঐকবদ্ধ করা ।

    চীনের বিভিন্ন জায়গার বৈশিষ্ট্যময় অপেরার শিল্পীরাও বর্তমান এশিয়া শিল্পকলা উত্সবে অংশ নিয়েছেন । জাতি সংঘ শিক্ষা , বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা—ইউনেস্কোর মানব জাতির মৌখিক ও অবস্তুগত উত্তরাধিকারের নামের তালিকা ভুক্ত কুয়ে অপেরা , পিকিং অপেরা , ইউয়ে অপেরা , ছুয়াং অপেরা ও কুয়াং তুং অপেরা শিল্পীরা এশিয়ার শিল্পকলা উত্সবে বিভিন্ন দেশের অতিথিদের চীনের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক অপেরা পরিবেশন করেছেন । মালয়েসিয়ার শিল্পী দলের প্রধান মাদাম হানিশ হাসান বলেছেন , চীন ও মালয়েসিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের চুক্তি আছে । চীনের শিল্পী দলগুলো মালয়েসিয়ার অনেক শিল্পকলা উত্সবে অংশ নিয়েছে । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন দু দেশের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের একটি বিষয় , এটা দুটি দেশের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বাড়িয়ে দিয়েছে । শিল্পকলা উত্সব বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের জন্য সাংস্কৃতিক নৈপুন্য উন্নত করার একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে ।

    বর্তমান এশিয়া সাংস্কৃতিক উত্সব দক্ষিণ চীনের কুয়াং তুং প্রদেশের ফো সান শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে । ফো সান শহর চীনের অন্যতম শিল্পোন্নত অঞ্চল ও দক্ষিণ চীন সংস্কৃতির উত্পত্তি স্থল । তাই এই সাংস্কৃতিক উত্সবে দক্ষিণ চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কিত প্রদর্শনীগুলো ও খেলাধুলার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে । যেমন পেপার কাটিং প্রদর্শনী , চিত্রপ্রদর্শনী , মাটির পাত্র প্রদর্শনী , ঐতিহ্যিক লণ্ঠন প্রদর্শনী আর ড্রাগন নৌকা প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।

    এশিয়া শিল্পকলা উত্সব চলাকালে এশিয়ার সংস্কৃতি মন্ত্রীদের ফোরামও অনুষ্ঠিত হয়েছে । চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাওয়ের প্রস্তাবে অনুষ্ঠিত চার দিন স্থায়ী এই ফোরামে ' ফোসান ঘোষনা ' স্বাক্ষরিত হয়েছে । ঘোষনায় বলা হয়েছে , ফোরামে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো সমতা ও পারস্পরিক কল্যাণের ভিত্তিতে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও বিভিন্ন সভ্যতার মধ্যে সংলাপ প্রতিষ্ঠায়সম্মত হয়েছে । তারা পরস্পরের সংস্কৃতি উপভোগ করতে চায় এবং বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক বিভাগগুলোর সমঝোতা ও যোগাযোগ বাড়াতে চায় । এই ফোরামের আয়োজন এশিয়ার সংস্কৃতি ও শিল্পকলার উন্নয়নে সক্রিয় ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব সৃষ্টি করবে । বিশেষ করে সংস্কৃতি মন্ত্রী ফোরাম ও লোক শিল্পকলার আদান-প্রদানের সমন্বয় থেকে চীন সরকারের আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বাড়ানোর নতুন প্রচেষ্টা ও আকাংখা প্রতিফলিত হয়েছে।

    চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বিষয়ক উপমন্ত্রী মেন সিয়াও সি মনে করেন , চীন সরকার সংস্কৃতির রকমারিতা সংরক্ষণকে গুরুত্ব দেয় । চীন আশা করে সমতার ভিত্তিতে আদান-প্রদান ও সহযোগিতার মাধ্যমে সমঝোতা বাড়ানো হবে , মনোমালিন্য দূর হবে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন জাতির অভিন্ন সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি বাস্তবায়িত হবে । বর্তমানে এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের পরিস্থিতি ভালো । তিনি বলেছেন , এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বেশ তত্পর রয়েছে । এ কথা বলা যায় যে চীন সর্বপ্রথমে এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে । পরবর্তীকালে আমরা এশিয়া শিল্পকলা উত্সব ও এশিয়া সংস্কৃতি মন্ত্রী ফোরামের মাধ্যমে এই ধরনের আদান-প্রদান আরো প্রসারের চেষ্টা করবো ।

    উপমন্ত্রী মেন সিয়াও সি আরো বলেছেন , রাজনীতি , অথর্নীতি ও সংস্কৃতি হলো চীন ও এশিয়ার অন্যান্য দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও আদান-প্রদানের তিনটি প্রধান বিষয় । বিভিন্ন দেশের মধ্যকার সাংস্কৃতিক সহযোগিতা ও আদান-প্রদান মৈত্রী ও সমঝোতা বাড়ানোর জন্যে হিত্যকর ।