v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-01-10 21:29:48    
চীনারা খাদ্যবস্তুর পুষ্টির উপর আরো গুরুত্ব দিচ্ছে

cri
    ৩০ বছর বয়স্ক মিস্টার তুং লিয়াং চি পেইচিংয়ের একটি কম্পানির একজন কেরানী । সম্প্রতি প্রতিটি সপ্তাহশেষে তিনি চীনা স্বাস্থ্য রহ্মা সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত পুষ্টি আর স্বাস্থ্য রহ্মা সংক্রান্ত একটি প্রশিহ্মণ কোর্সে শিখতে যান । তিনি মনে করেন , পুষ্টি তাঁর স্বাস্থ্য এবং তাঁর কাজের উন্নতির জন্যে অতিব গুরুত্বপূর্ণ । তিনি বলেছেন ,

    পুষ্টি আমাদের স্বাস্থ্যের সংগে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছে বলে ভালো স্বাস্থ্য আর সুন্দর জীবন বজায় রাখতে চাইলে এবং নিজের কার সফলকাম করতে চাইলে সর্বপ্রথমে ভালো শরীর থাকতে হবে । আমরা কেমন করে স্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা লাভ করতে পারবো ? আমার মনে হয় সবচেয়ে মৌলিক উপায় সংগতিপূর্ণ খাওয়া-দাওয়া ।

    গত সপ্তাহের শেষের দিকে আমাদের সংবাদদাতা সেই প্রশিহ্মণ কোর্সে গিয়েছেন । তখন ক্লাস চলচ্ছিল । দেখা গেছে , ক্লাসরুম লোকে লোকারণ্য ছিল । শিহ্মার্থীদের মধ্যে যেমন চুলপাকা বৃদ্ধা ছিলেন , তেমনি তরুণ -তরুণী ছিলেন । চীনা স্বাস্থ্য রহ্মা সমিতির একজন কর্মী বলেছেন , এখন প্রশিহ্মণ কোর্সের রয়েছে দশ বারোটি ক্লাস । প্রতিটি ক্লাসে এক শরও বেশি শিহ্মার্থী আছে । গত দু বছরে মোট দশ হাজারেরও বেশি শিহ্মার্থী প্রশিহ্মণ লাভ করেছেন ।

    মিসেস চিয়া নেং ফাং এই প্রশিহ্মণ কোর্সে দশ বারোটি ক্লাস নিয়েছেন । তিনি বলেছেন , তাঁর ক্লাস নেয়ার লহ্ম্য হচ্ছে যুক্তিসংগতভাবে খাদ্যবস্তুর বিন্যাসের ব্যাপারে মোটা স্বামীকে সাহায্য করা । এখন তাঁর পরামর্শ অনুসারে তার স্বামী মাংশ কম খাচ্ছেন এবং শাকসব্জি আর দুধজাত দ্রব্য বেশি খাচ্ছেন । কিছু সময়ের বিন্যাসের ফলে তার স্বামীর ওজন অনেক কমে গেছে ।

প্রশিহ্মণ কোর্সের প্রতিটি শিহ্মা মেয়াদের ফি

    ৩৯০০ ইউয়ান । এটা চীনের বড় বড় শহরের সাধারণ কর্মচারীদের এক মাসের বেতনের সমান সমান । এই খরচ কম না হলেও ৩০ বছর বয়সের চিয়া নেং ফাং মনে করেন যে , এই খরচ অমুলক নয় । তিনি বলেছেন

    আমার মনে হয় , এই খরচ অনর্থক হবে না । আপনার তরুন বয়সে কিছু টাকা ব্যয় করে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে পারলে যখন আপনার বয়স বেশী হবে , তখন রোগ দেখার জন্যে আর বেশী টাকা খরচ করতে হবে না এবং ভালো শরীর নিয়ে জীবন যাপন করতে পারবেন ।

    বিশেষজ্ঞদের মতে একদিকে চীনাদের আয় বাড়ানোর সংগে সংগে জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত হয়েছে । অতিরিক্ত পুষ্টি আহরণের দরুন বহুমুত্রের মত রোগ বেশী করে দেখা দিচ্ছে । তাই পুষ্টিগত সমস্যা প্রকট হয়ে উঠেছে । অন্যদিকে জনসাধারণের চিকিত্সা জ্ঞান জানার সংগে সংগে তাদের স্বাস্থ্য রহ্মার সচেতনতাও বেড়ে চলেছে । কাজেই লোকেরা আগের চেয়ে খাদ্যবস্তুর পুষ্টির উপর আরও গুরুত্ব দিচ্ছে । চীনা স্বাস্থ্যরহ্মা সমিতির মিসেস সুন সু সিয়া বলেছেন ,

    আমাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের সংগে সংগে লোকদের বৈজ্ঞানিক সচেতনতা আরো উন্নত হয়েছে । অতীতে লোকেরা পেট ভরে খেতে পারতেন না এবং পুষ্টি সম্বম্ধে তাদের কোনো ধারণা ছিল না । এখন বিজ্ঞানের উন্নতি এবং লোকদের শিহ্মাগত মানের উন্নয়নের সংগে সংগে রোগ সম্পর্কে লোকদের সচেতনতা আরো উন্নত হয়েছে এবং জনসাধারণ স্বাস্থ্যরহ্মার উপর আরো গুরুত্ব দিচ্ছে । আমার মনে হয় এটা ভালো ব্যাপার ।

    পুষ্টি আর স্বাস্থ্যরক্ষার হিরিক নতুন নতুন পেশার জন্ম দিয়েছে । সম্প্রতি চীন সরকারের প্রকাশিত ১০টি নতুন পেশার মধ্যে " গণ পুষ্টিবিদ" অন্তভূক্ত রয়েছে । তাছাড়া পুষ্টিকর রেস্টোরেন্ট আর স্বাস্থ্যরক্ষা সংক্রন্ত পরামর্শদাতা কেন্দ্রও দেখা দিচ্ছে । পেইচিংয়ের ছিং নিয়াও শরীরচর্চা কেন্দ্রে বসানো রয়েছে বিশেষ পুষ্টিকর রেস্টোরেন্ট । এই রেস্টোরেন্টের জানালায় সাজানো আছে রংবেরংয়ের খাবার । এই সব খাবার পুষ্টিবিদদের তৈরি পুষ্টিকর খাদ্যবন্তু । এই সব খাবারে চীনা খাদ্যবস্তু , জাপানী খাদ্যবস্তু আর পশ্চিমা খাদ্যবস্তুর স্বাস্থ্যরক্ষার উপাদানের সমন্বয় ঘটেছে ।

    জীবনের ছন্দ দ্রুততর হওয়ার সংগে সংগে যে সব কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে দালানকোঠায় কাজ করেন , তাদের চাপ বেড়েছে । তারা রোজ কম্পিউটারের সামনে কাজ করেন বলে রক্তশুণ্যতা, মাথাঘোরা এবং দুর্বলতা সবসময় দেখা দেয় । তাঁদের কাছে বিজ্ঞানসম্মত অন্নসংস্থানের মাধ্যমে নিজেদের স্বাস্থ্যরক্ষা করা এখন জরুরী হয়ে পড়েছে ।তবে কাজের ব্যস্ততার কারণে তারা আত্মবিন্যাসের পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন না । অথচ এখন কিছু কিছু বিশেষ কম্পানি এই ব্যাপারে তাদের সাহায্য করতে পারছে ।

    উত্তর চীনের শান সি প্রদেশের রাজধানী থাই ইউয়ান শহরে রয়েছে এমন একটি কম্পানি যেটা বিশেষভাবে বড় বড় কম্পানির কর্মচারীদের জন্যে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করতে পারে । তাদের স্বাস্থ্যরক্ষার উপাদান অনুসারে এই কম্পানি বিভিন্ন লোকের চাহিদার সংগে সংগতিপূর্ণ খাদ্যবস্তু তৈরি করতে পারে ।

    আজ সাধারণ লোকেরাও পরিবারের তিনবেলার খাবারের পুষ্টিকর বিন্যাসের উপরও নজর দিতে শুরু করেছেন । অতীতে যখন চীনে অর্থনৈতিক অসুবিধা দেখা দিয়েছিল , তখন লোকেরা মিষ্টি আলো আর ভূট্টার মত খাদ্যকে পছন্দ করতেন না । কিন্তু এখন এই সব খাদ্য অনেকের মধ্যে বেশ সমাদর পাচ্ছে । কারণ এখন লোকেরা বুঝতে পারচ্ছেন , নানা ধরণের খাদ্য খেলে শরীরের পক্ষে হিতকর হবে । বহু সুপার মার্কেটে ভূট্টার ময়দা আর সোয়াবিন জাতীয় খাদ্য বিক্রির স্টল খোলা হয়েছে । বিভিন্ন খাদ্য দিয়ে তৈরি খাদ্যবস্তুও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে । চীনে একটি বিখ্যাত প্রবাদ আছে : সকালবেলায় ভালোভাবে খেতে হবে , দুপুরবেলায় পেটভরে খেতে হবে এবং সন্ধ্যাবেলায় কম করে খেতে হবে । সাধারণ গার্হ্যস্থলীর কাজে নিয়োজিত মহিলাদের পক্ষে চীনা ওষুধ দিয়ে খাবার তৈরির কয়েকটি পদ্ধতি আয়ত্তনও অস্বাভাবিক কিছু নয় ।