সম্প্রতি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চীনের গাড়ী বাজারেও কিছু নতুন প্রবণতা দেখা দিয়েছে। "মিনি-গাড়ী", "নব-শক্তিসম্পদ" এগুলো শব্দ চীনের গাড়ী বাজারে জনপ্রিয় হলো।
তেলের দাম বেড়ে গেলেও তরল তেল গ্যাস (মানে এল.পি.জি)র দাম বাড়েনি। তা একটি নতুন প্রবণতার সঙ্গে জড়িত। শাংহাই'র বৃহত্তম টেক্সি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ভোলকসওয়াগেন কোম্পানি দুতিন বছরের মধ্যে তার সব টেক্সিকে এল.পি.জি. জ্বালানি ব্যবহৃত টেক্সিতে পরিণত করবে।
তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ছোট সাইজের গাড়ী দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে গেছে। আগে অনবহিত ছোট গাড়ী ও মিত্যব্যয়ী গাড়ী তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বিক্রির সুযোগ পেয়েছে। এদের বিক্রির সুপ্রবণতা অব্যাহত থাকবে। এর প্রধান প্রতিনিধি হিসেবে শিয়ালি নামক মিনি গাড়ীর লাভ হয়েছে। ২০০৬ সালের প্রথম সাত মাসে চীনের গাড়ী বাজারে শিয়ালি পথম স্থানে রয়েছে। ১ লক্ষ ইউয়েন ও তার কম দামের গাড়ী বিক্রি বাজারের অর্ধেক অংশ দখল করেছে। সঙ্গে সঙ্গে ১.৬লিটার ও এর চেয়ে বড় ধরণের গাড়ীর বিক্রি পরিমান কমেছে। কিন্তু এর আগে মাঝারি গাড়ী চীনের গাড়ী বাজারের প্রধান অংশ ছিলো।
গাড়ীর মালিকদের মধ্যে একটি জরীপ চালানো হয়েছে। ৯৬ শতাংশ লোক প্রতি লিটার তেলের দাম পাঁচ ইউয়ান ও এর বেশী সহ্য করতে পারে না। দামী তেলের চাপে গাড়ীর মালিক বিভিন্ন তেল সাশ্রয়ের পদ্ধতি শিখতে মনযোগ দিয়েছে। যারা নতুন গাড়ী কিনতে চায়, তারা সৌখিন বা বিলাসী গাড়ির পরিবর্তে মিতব্যয়ী গাড়ীগুলোর উপরে দৃষ্টি রেখেছে।
একটি আনলাইন জরীপ থেকে জানা গেছে, ৮১.৮ শতাংশ লোকের ছোট গাড়ী কেনার ইচ্ছা আছে এবং ৮৬ শতাংশ মানুষ মনে করে যে, ছোট গাড়ী চীনের গাড়ী বাজারের প্রধান প্রবণতা হবে।
শক্তিসম্পদের সীমা বদ্ধতা থেকে মুক্ত হওয়া হলো গাড়ী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন নীতি ও দীর্ঘকালিণ প্রতিযোগী সামর্থ্যের একটি প্রধান অংশ। সম্প্রতি চীনের শাংহাই গাড়ী কোম্পানি জানিয়েছে, ২০০৮ সাল ওলিম্পিক্সের আগে তারা মিশ্র জ্বালানি ব্যবহৃত গাড়ী উত্পাদন শুরু করবে। ২০১০ সালে ব্যাপকভাবে মিশ্র জ্বালানি গাড়ী উত্পাদন করবে, সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানি ও বেটারি মিশ্র ব্যবহৃত গাড়ী পরীক্ষামূলকভাবে উত্পাদিত হবে।
বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করে বলেছেন, শাংহাই গাড়ী কোম্পানির এমন নতুন জ্বালানি গবেষণার কর্মসূচী থেকে দেখা যায়, চীনে নতুন শক্তিসম্পদ ব্যবহৃত গাড়ী গবেষণার প্রবণতা গড়ে উঠেছে।
আরেকটি নতুন প্রবণতা হলো চীনে ছোট গাড়ীর উপর বাধানিষেধ আরোপকারী ৮০টিরও বেশী শহরে এমন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। শাংহাই এর মধ্যে একটি।
বিশেষজ্ঞরা আরো মনে করে যে, যদিও গাড়ী উত্পাদন, বিক্রি ও নীতির এসব পরিবর্তন কেবল শুরু হয়, কিন্তু গোটা গাড়ী বাজারের ওপর এর্ প্রভাব হবে গভীর আর দীর্ঘকালিণ।
|