সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সুদূর পেইচিং থেকে আপনাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের সুরের ভুবন পরিবেশন করছি আমি আপনাদের বন্ধু লিলি। আপনাদের সাথে সুরের ভুবন অনুষ্ঠানে কথা বলার সুযোগ পেয়ে আমি খুব খুশি। আগের মতো আমাদের অনুষ্ঠানে আপনারা বিভিন্ন ধরণের সুন্দর গান শুনতে পাবেন।
প্রথমে আমার সঙ্গে চীনের কেন্দ্রীয় সঙ্গীত দলের গ্লী ক্লাবের গাওয়া "হে বন্ধু, বিদায়" নামে একটি গান শুনবেন। তা হচ্ছে প্রাক্তন জুগোস্লাভিয়ার চলচ্চিত্র সেতুর একটি গান। এতে মাতৃভূমি ও জাতির গৌরবের জন্যে প্রাক্তন জুগোস্লাভিয়ার তরুণ সৈন্যদের দেখানো মৃত্যুর পরোয়া না করার দুঃসাহসী ভাব-মানস প্রকাশ পেয়েছে। গানে বলা হয়েছে:
আমার বন্ধু, বিদায় দিচ্ছি, আমি যুদ্ধে নিহত হলে দয়া করে আমাকে উঁচু পাহাড়ে কবর দেবে, তার উপরে একটি সুন্দর ফু্ল সাজাবেন। আচ্ছা, এখন গানটি শুনবো আমরা।
চীনের কেন্দ্রীয় সঙ্গীত দলের গ্লী ক্লাব ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তা হচ্ছে চীনে প্রথম শ্রেণীর পেশাদার গ্লী ক্লাব। তার সদস্যরা সবাই চীনের বিভিন্ন উচ্চ সঙ্গীত ইন্সটিটিউটের সেরা স্নাতক। ৫০ বছর ধরে চীনের কেন্দ্রীয় সঙ্গীত দলের গ্লী ক্লাব বহু বার দেশী-বিদেশী শৈল্পিক তত্পরতায় অংশ নেয় এবং চীনের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা ইত্যাদি দেশ ও অঞ্চল সফর করে সুনাম অর্জন করে। এখন আমরা একসাথে এই দলের গাওয়া " বৃদ্ধবৃদ্ধার নদী" নামে একটি মার্কিন গান শুনবো। তা হচ্ছে বিশ্বে ব্যাপকভাবে প্রচলিত একটি বিখ্যাত গান। এতে কৃষ্ণাঙ্গদের অত্যাচার-পীড়িত অবস্থা বর্ণনা করা হয়। গানের সুর খুব গভীর, বিষন্ন ও নমনীয়। এই দলের পরিবেশনায় স্বাধীনতার প্রতি মানুষের আকাংক্ষা ও প্রতীক্ষা খুব ভালোভাবে প্রকাশ পায়। এখন গানটি শুনি।
দীর্ঘকালীন শিল্পচর্চার মাধ্যমে চীনের কেন্দ্রীয় সঙ্গীত দলের গ্লী ক্লাব যেমন সরল ও নম্র, তেমনি উদাত্ত ও সূক্ষ্ম শৈলী গড়ে তুলে। সে সঠিকভাবে বিভিন্ন সময়পর্বের এবং বিভিন্ন রীতিনীতির শিল্প-কর্ম গাইতে পারে। এই গ্লী ক্লাব সবসময় চীনের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমান সংগীত পরিবেশন করে, চলচ্চিত্র ও টিভি নাটকের জন্যে সঙ্গীত রেকর্ড করে এবং প্রচুর আদর্শ CD সংকলন প্রকাশ করে। এখন আমরা একসাথে এই গ্লী ক্লাবের গাওয়া কাছিউসা নামে একটি গান শুনবো। তা হচ্ছে প্রাক্তন সোভিয়েট ইউনিয়নের দেশ রক্ষাযুদ্ধের সময়পর্বের একটি আবেগপূর্ণ গান। গানটিতে সীমান্তে প্রহরারত প্রেমিকের প্রতি সুন্দরী মেয়ে কাছিউসার আন্তরিক প্রেম প্রকাশ পেয়েছ। চীনের কেন্দ্রীয় সঙ্গীত দলের গ্লী ক্লাবের গাওয়া গান প্রাণবন্ত ও মনো-মুগ্ধকর। তার পরিবেশনায় প্রেমের প্রতি মেয়েটির বিশ্বস্ততা পুরোপুরিভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানের বাকী সময় চীনের উচ্চকন্ঠের গায়িকা ফু হাইইয়ানের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো। প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা এখন যে গান শুনছেন তার নাম হচ্ছে " গানের পাখায় চড়ে"। তা হচ্ছে জার্মানীর সংগীতকার মেন্দেলসোনের রচিত একটি বিশ্ব বিখ্যাত গান। ফু হাইইয়ান তাঁর মিষ্টি কন্ঠে মানুষের কাছে একটি উষ্ণ ও স্বপ্নময় দৃশ্য বর্ণনা করেন। চমত্কার গানের মধ্যে লোকেরা সুন্দর গঙ্গা নদীর তীরে এসে কুলুকুলু জল-স্রোতের ধ্বনি শুনে শুনে সুন্দর প্রেমের জীবন কল্পনা করেন।
ফু হাইইয়ান বহুবার চীনের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইতালি ইত্যাদি বিশাধিক দেশ ও অঞ্চল সফর করেন এবং স্থানীয় দর্শকদের মাঝে দারুণ সমাছত হন। আজকের অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা একসাথে তাঁর গাওয়া চেক সংগীতকার দভোরাকের শিল্প-কর্ম " চাঁদের প্রশংসা"শুনবো। গানে বলা হয়েছে:
আকাশে রুপালী চাঁদ ভাসমান, তোমার আলোতে চারদিক আলোকিত।
চাঁদ, আমাকে বলো, আমার প্রিয়তম এখন কোথায়,
দয়া করে তাঁকে একটি কথা বলো, আমি এখানে তাঁর জন্যে অপেক্ষা করছি।
সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানে শেষ হলো। আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের কোনো মতামত থাকলে আমাদের জানাবেন। আজকের অনুষ্ঠান শোনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
|