২০০৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের শীর্ষ সম্মেলন নিইউয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে উদ্বোধন হয়েছে । চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন । জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিকী উপলক্ষে যৌথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার , যৌথ উন্নয়ন ত্বরান্বিত এবং জাতিসংঘ শক্তিশালী করার বিষয় নিয়ে পরামর্শের জন্য এই তিনদিনব্যাপী সম্মেলন আয়োজিত হয়েছে । সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের নেতারা জাতিসংঘের ভূমিকা জোরদার , জাতিসংঘের সংস্কার ত্বরান্বিত , বিশ্বের শান্তি রক্ষা এবং উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে পরামর্শ করেছেন । ১৫০টিরও বেশী দেশের নেতা বা সরকারের প্রধান এবং প্রায় ৪০টি দেশের ভাইস-প্রেসিডেন্ট , উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ।
১৯৯৮ সালের জুলাই মাসে জাতিসংঘ মহাসচিব কোফি আনান জাতিসংঘের সহস্রাব্দি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন । আনানের প্রস্তাবে ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর ৫৩ তম জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৫৫ তম জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সম্মেলনের উদ্বোধনের পর সহস্রাব্দি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে , যাতে বিভিন্ন দেশের নেতারা ২১ শতাব্দিতে জাতিসংঘের ভূমিকা এবং চ্যালেন্ঞ্জ ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে ব্যাপক পরামর্শ করতে পারেন ।
২০০০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সহস্রাব্দি শীর্ষ সম্মেলন জাতিসংঘের সদর দপ্তরে আয়োজিত হয়েছে । সম্মেলনের আলোচ্যবিষয় ছিল ২১ শতাব্দিতে জাতিসংঘের ভূমিকা । ১৫০টিরও বেশী দেশের নেতা বা সরকারের প্রধান সহ ১৮৯টি দেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন । এই বারকার শীর্ষ সম্মেলনে "জাতিসংঘের সহস্রাব্দি" ঘোষণা গৃহীত হয়েছে । এই ঘোষণার ৮ অংশ ছিল : মূল্য ও নীতি , শান্তি , নিরাপত্তা ও নিরস্ত্রীকরণ , উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচন , যৌথ পরিবেশ সুরক্ষা , মানবাধিকার , গণতন্ত্র ও সুশাসন , সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন লোককে রক্ষা করা , আফ্রিকার বিশেষ প্রয়োজন মটানো এবং জাতিসংঘের ভূমিকা জোরদার করা ইত্যাদি । সম্মেলন শেষের পরামর্শে সব সদস্যদেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে , ২০১৫ সালের আগে বিশ্বের অত্যন্ত দরিদ্র ও ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা অর্ধেক কমানো , প্রাথমিক শিক্ষা জনপ্রিয় করা , পুরুষ ও নারীর সমতা তরান্বিত ও নারীর অধিকার উন্নত করা , শিশুর মৃত্য হার কমানো , প্রসূতিদের স্বাস্থ্য ও চিকিত্সার মান উন্নত করা , এইড্জ , ম্যালেরিয়া ইত্যাদি রোগের প্রতিরোধ করা , পরিবেশের টেকসই সামর্থ্য নিশ্চিত করা এবং বিশ্বের যৌথ উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা ইত্যাদি ৮টি লক্ষ্য অথবা সহস্রাব্দি লক্ষ্য বাস্তবায়ন করবে ।
চলতি বছরের ৯ জুন , জাতিসংঘের সহস্রাব্দি উন্নয়ন লক্ষ্যের কার্যকরীকরণের পরিস্থিতি সংক্রান্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে , এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের ৫ বছরে দারিদ্র বিমোচনে এশিয়ার বিরাট অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে , তবে দরিদ্র লোকের সংখ্যা কমানো , স্বাস্থ্যের মান উন্নত করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের কর্তব্যভার খুবই দুরূহ ।
|