সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সুদূর পেইচিং থেকে আপনাদের সুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের সুরের ভুবন পরিবেশন করছি আমি আপনাদের বন্ধু লিলি। প্রথমে আমি আপনাদের নিয়মিত উপস্থিতিকে স্বাগত জানাতে চাই। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের ডালসিমার আর লিউ ছিন দিয়ে চীনা শিল্পীদের পরিবেশিত বিদেশী সঙ্গীতের পরিচয় দেবো। প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা এখন যে সঙ্গীত শুনচ্ছেন তার নাম হচ্ছে কার্মেনের ফ্যান্টাসিয়া।
কার্মেন হচ্ছে স্পেনের যাযাবরদের জীবন-ভিত্তিক অপেরা। স্পেনের বিখ্যাত বেহালা বাদক সারাসাটি অপেরার মধ্যে স্পেনের শৈলীসম্পন্ন বেহালার সুর "কার্মেনের ফান্টাসিয়া রচনা করেন। আপনারা এখন যে সঙ্গীত শুনছেন তা হচ্ছে এই বেহালা সঙ্গীত অনুসারে চীনা শিল্পী হুয়াং হোর সংশোধিত ডালসিমার সঙ্গীত। চীনের জাতীয় বাদ্যযন্ত্র ডালসিমার দিয়ে বাজানো এই সঙ্গীত যেমন শ্রুতিমধুর ও সাবলীল, তেমনি প্রাণবন্ত ও উত্সাহব্যঞ্জক। এবার আমরা একসাথে তা শুনবো।
ডালসিমার হচ্ছে চীনের ঐতিহ্যবাহী বহু তার বিশিষ্ট একটি বাদ্যযন্ত্র। তার ধ্বনি খুব সুরেলা ও উদাত্ত। হুয়াং হো হচ্ছেন একজন সুদক্ষ ডালসিমার বাদক। তিনি ১৯৭৭ সালে চীনের কেন্দ্রীয় সঙ্গীত ইন্সটিটিউটে ভর্তি হন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি সেই ইন্সটিটিউটে শিক্ষকতা করেন। তাঁর বাজানোর কৌশল সুনিপুণ। এখন আমরা একসাথে শুনবো তাঁর পরিবেশিত ভূমিকা ও প্রত্যাবর্তন। এই সঙ্গীত ফ্রান্সের সুরকার মোন্টির বেহালার শিল্প-কর্ম অনুসারে রচনা করা হয় এবং ভূমিকা ও প্রত্যাবর্তন এ দু'টি অংশে বিভক্ত। ভূমিকা নমনীয়, তবে একটু বিষন্ন। প্রত্যাবর্তন খুব উত্সাহব্যঞ্জক ও সুউজ্জ্বল। আচ্ছা, এখন সঙ্গীত শুনবো।
বহু বছর ধরে হুয়াং হো বারবার চীনের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় বাদ্যযন্ত্র প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পান এবং জাপান ও জার্মানীতে বহুবার একক কনসার্টের আয়োজন করেন। তা ছাড়া, তিনি বহুবার চীনের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জাপান ইত্যাদি দেশ ও অঞ্চলে পরিবেশন করেন। জাপানের বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক ওজাওয়া সেইজি তাঁকে " প্রতিভাবান ডালসিমার বাদক" বলে অভিহিত করেন।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, দালসিমার দিয়ে পরিবেশিত সঙ্গীত শুনে কেমন লাগলো? আমাদের জানাবেন। এখন আমি চীনের আরেকটি জাতীয় বাদ্যযন্ত্র লিউ ছিন দিয়ে চীনের শিল্পী ওয়াং ইয়ানের পরিবেশিত কয়েকটি বিদেশী সঙ্গীত আপনাদের শোনাবো।
প্রথমে আমার সাথে " পায়রা" নামে একটি সঙ্গীত শুনবেন। তা হচ্ছে বিশ্বে ব্যাপকভাবে প্রচলিত একটি গান। স্পেনের সুরকার সেবাস্টিয়ান ইরাদিয়ার কিউবান সঙ্গীত অনুসারে তা রচনা করেন। লিউ ছিন সঙ্গীত রচিত হবার পর সুরের উল্লম্ফনমূলক ছন্দ আরো জোরদার হয়। সুগভীর ও নমনীয় সুরে সুদূরের প্রিয়জনের প্রতি মানুষের আবেগের প্রকাশ পায়।
ওয়াং ইয়ান হচ্ছেন চীনের বিখ্যাত তরুণ লিউ ছিন বাদক। ছোটবেলা থেকে তিনি খুব মনোযোগ দিয়েই লিউ ছিন শিখেন। বহু বছরের লেখাপড়া ও বাস্তব অনুশীলনের মাধ্যমে তিনি ধাপে ধাপে নিজের বিশেষ শৈলী গড়ে তুলেন। এখন আমরা একসাথে তাঁর পরিবেশিত " সাউন্ড অফ মিউজিক" নামে মার্কিন চলচ্চিত্রের একটি সঙ্গীত শুনবো। সঙ্গীতে জন্মস্থান, প্রকৃতি ও সঙ্গীতের প্রতি প্রধান চরিত্রের ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।
আচ্ছা, প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানে শেষ হচ্ছে। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। আজকের অনুষ্ঠান শোনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
|