v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-12-12 16:16:57    
শক্তি-সাশ্রয়ী বাতি চীনে ব্যাপক ব্যবহৃত হচ্ছে

cri
    বালব হলো মানুষের জীবনের এক রকম প্রয়োজনীয় জিনিস। বালব ছোট হলেও এর অনেক বিজ্ঞান আছে।

    পেইচিংয়ের একটি বাতির মেলায় ২০ বছর বয়স্ক মিস সু রোং তার নতুন বাড়ির জন্য বাতি বেছে নিচ্ছিলেন। বিভিন্ন রকমের বালব দেখে তিনি কিন্তু শুধু শক্তি-সাশ্রয়ী বাতি বেছে নিয়েছেন। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন:

    "শক্তিসাশ্রয় করার জন্য, আমি শক্তি-সাশ্রয়ী বাতি কিনেছি। এতে টাকা, বিদ্যুত উভয়ের সাশ্রয় হয়। পেইচিংয়ে থাকি। দৈনদিনে টাকা খরচ বেশী । এবং পেইচিং শক্তিসম্পদ অভাবের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। পেইচিংয়ের বাসিন্দা হিসেবে আমি নিজ থেকে শক্তিসাশ্রয়ের দায়িত্ব বহন করতে চাই।"

    শক্তি-সাশ্রয়ী বাতির প্রচলন প্রথমে বিদেশে দেখা দেয়। দশ বারো বছর আগে চীনে প্রবেশ হয়। এ রকম বাতি ব্যাপক ব্যবহারের জন্য চীন সরকার বিপুল চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু এরকম কন্দের দাম বেশী , প্রায় সাধারণ বাতির ২০ গুণ বলে মানুষরা তা কম ব্যবহার করতো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অর্থনীতি উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের নাগরিকদের ভোগ বা খরচের মানও ক্রমাগত বাড়ছে। একই সঙ্গে চীন সরকার শক্তি সাশ্রয় করে মিত্যব্যয়ী সমাজ গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। জন সাধারণের শক্তি সাশ্রয়ের চেতনাও স্পষ্ট বাড়ছে। এতে শক্তি-সাশ্রয়ী বাতি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে যাচ্ছে।

    চীনের থুলিয়াম সংস্থার বিশেষজ্ঞ লু শিয়েন লি বলেছেন, থুলিয়াম দিয়ে তৈরী ফ্লুরিসেন্স হলো শক্তি-সাশ্রয়ী বালব উত্পাদনের প্রধান পদার্থ। থুলিয়ামের বিশেষ প্রকৃতির কারণে এই বালব শক্তিসাশ্রয় করতে পারে। তিনি বলেছেন:

    "আলো দেয়া ছাড়া, সাধারণ বালবের কিছু বিদ্যুত তাপ-শক্তিতে পরিণত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। বরং থুলিয়াম বালব উত্পাদিত তাপ শুধু সাধারণ বালবের তার চার ভাগের এক ভাগ। তাই সাধারণ বালবের তুলনায় শক্তি-সাশ্রয়ী বালব ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ বিদ্যুত সাশ্রয় করতে পারে।"

    বিশেষজ্ঞরা হিসাব করে দেখিয়েছেন, ৪০ ওয়াটের সাধারণ বালবের পরিবর্তে ১১ওয়াটের শক্তি-সাশ্রয়ী বালব ব্যবহার করলে, ৮০ শতাংশ বিদ্যুত সাশ্রয় করা যায়। প্রতিদিন যদি ৪ ঘন্টা বালব ব্যবহার করা হয়, ১.৩ বিলিয়ন চীনা মানুষ এক বছরে ৯৩ বিলিয়ন কিলোওয়াট ঘন্টার বিদ্যুত বাঁচাতে পারে। তা চীনের বৃহত্তম বিদ্যুত উত্পাদন কেন্দ্র-ইয়াংসি নদীর তিনগিরিখাত জল-বিদ্যুত কেন্দ্রের এক বছরের বিদ্যুত বাঁচাতে পারে। চেয়েও বেশী। তাছাড়া, শক্তি-সাশ্রয়ী বালব ব্যবহারের মেয়াদ লম্বা। প্রতি বালব প্রায় ৮০০০ ঘন্টা ব্যবহার করা যায়। তা সাধারণ বালবের ৮ গুণ।

    সাধারণ বালবের তুলনায় শক্তি-সাশ্রয়ী বালবের কাঠামো একটু জটিল। তাই তার ব্যবহার ক্ষেত্রেও একটু মনোযোগ দেয়া উচিত। মাদাম জাং লি কয়েক বছর ধরে শক্তি-সাশ্রয়ী বালব ব্যবহার করেছেন। তিনি সংবাদদাতাকে কিছু চাবিকাঠিমূলক কলাকৌশল জানিয়েছেন:

    "যেমন টয়লেট ও রান্নাঘরের বাতি খুব বেশী ব্যবহৃত হয়, এমন জায়গায় শক্তিসাশ্রয়ী বালব ঘন ঘন খোলা বা বন্ধ করা ভালো নয়। কারণ শক্তিসাশ্রয়ী বালব খোলার সময়ে বেশী বিদ্যুত লাগে। দীর্ঘ সময় বাতি বন্ধ না করে কিছু বিদ্যুত নষ্ট হলেও অবশেষে বিদ্যুত সাশ্রয় করা যায়।"

    আরো বেশী রকমের শক্তি-সাশ্রয়ী বাতি কেনার সুযোগ দেয়ার জন্য চীনের কারখানাগুলো অব্যাহতভাবে নতুন বাতি গবেষণা করেছে। চীনের বাতির মেলায় এসে বিভিন্ন রকমের শক্তি-সাশ্রয়ী বাতি দেখা যায়। এমনকি এই সব বাতি সাদা রং ছাড়া হলুদ, লাল, সবুজ ও নীল ইত্যাদি রংয়ের আলো আছে।

    এছাড়া, শক্তি-সাশ্রয়ী বাতির প্রযুক্তিও অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। নতুন গুণ-সম্পন্ন বিভিন্ন বাতি বাজারে দেখা যায়। চীনের থুলিয়াম সংস্থার বিশেষজ্ঞ লু শিয়েন লি বলেছেন:

    "এক রকম হলো সূর্যের আলো সঞ্চিত বাতি । তা দিনে সূর্যের আলোয় ৫ থেকে ১০ মিনিট রাখার পর অন্ধকার জায়গায় ১২ থেকে ১৫ ঘন্টা আলো দিতে পারে। এবং তা ব্যবহারের মেয়াদ খুব লম্বা। এমন নতুন বাতি বিভিন্ন রকমের।"

    সাক্ষাত্কালে আমাদের সংবাদদাতা জেনেছেন যে, মক্তিসাশ্রয়ী বালব বাড়িঘরে ব্যবহার ছাড়া তা এখন বাস স্টেশন, দোকান, সিনেমা হল ইত্যাদি জনসাধারণের জায়গায় ব্যবহার হয়। এমন হলেও বাতির বাজারে শক্তিসাশ্রয়ী বাতির সংখ্যা যথেষ্ট নয়। তাই সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ প্রস্তাব দিয়েছেন যে, সরকারের উচিত শক্তি-সাশ্রয়ী বাতি উত্পাদন কারখানাকে সাহায্য করা। যেমন যদি তাদের কাছ থেকে কর কম আদয় করা হয়, তাহলে শক্তিসাশ্রয়ী বালবের দাম কমে যাবে। সঙ্গে সঙ্গে এই বাতির নতুন প্রযুক্তি গবেষণায় সাহায্য দিয়ে তাতে আরো বেশী রকমের শক্তি-সাশ্রয়ী বাতি বাজারের চাহিদা মেটাতে পারবে।