v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-12-09 19:00:58    
তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের নেতা  একাদশ পাঞ্চেন

cri
    দশ বছর আগে অর্থাত্ ১৯৯৫ সালের ৮ ডিসেম্বর তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের নিয়ম অনুসারে পাঁচ বছর বয়সী এক তিব্বতী ছেলে পাঞ্চেন এর্দিনির উত্তরাধিকারী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে একদশ বাঞ্চেন হয়েছেন। ৮ ডিসেম্বর একাদশ পাঞ্চেন হওয়ার দশম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি বিরাট উদযাপনী অনুষ্ঠান দক্ষিণ তিব্বতের শিগাজে শহরের তাশিলুংপো মন্দিরে আয়োজিত হয়েছে । সেদিন এই মন্দিরে আনন্দমুখর পরিবেশ বিরাজমান ছিল । মন্দিরের ভিতর ও বাইরে বৌদ্ধধর্মাবল্বীদের ভীড় জমে । তারা হাতে ধুপ , হাদা ও ফুল নিয়ে উত্সবের পোশাক পরে একাদশ পানছেনকে অভিনন্দন জানান । তিব্বতের পূর্বাঞ্চলের কামদো থেকে আসা জামপা টাশি বলেছেন ,দুই সপ্তাহ আগে তিনি টেলিভিশন থেকে এই উদযাপনী অনুষ্ঠানের খবর পেয়ে খুব খুশি । তাই তিনি কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে ৮ ডিসেম্বর সকালেই গাড়ী করে শিগাজে গিয়েছেন । তিনি বলেছেন , এবার আমরা একাদশ বাঞ্চেনকে প্রণাম করে আমাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছি , একাদশ বাঞ্চেন আমাদের মাথায় হাত বুলিয়ে আমাদের আশির্বাদ করেন । আমরা আশা করি এই ধরনের অনুষ্ঠান আমাদের জন্মস্থানেও অনুষ্ঠিত হবে । গ্রামবাসী ও পশুপালকরা একাদশ পাঞ্চেনকে শ্রদ্ধা করেন , তাঁর আশির্বাদ পেয়ে তারা খুব খুশি হবেন ।

    পাঞ্চেন তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের অন্যতম নেতা , পাঞ্চেন অর্থ জ্ঞানী । আঠার শ' শতাব্দীর প্রথম দিক থেকে কেন্দ্রীয় সরকার বাঞ্চেনের উত্তরাধিকারী মনোনয়ন করে । বাঞ্চেনের উত্তরাধিকারী নির্বাচন তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের নিয়ম অনুসারে চালানো হয় । ১৬ বছর আগে দশম বাঞ্চেন তিব্বতে মৃত্যুবরণ করেন । তখন থেকে দশম পাঞ্চেনের উত্তরাধিকারী বেছে নেয়ার কাজ শুরু হয় । ১৯৯৫ সালের নভেম্বর মাসে দশম পাঞ্চেনের উত্তরাধিকারী নির্ণয়ের জন্য সোনালীপাত্র থেকে লটারি নেয়ার অনুষ্ঠান তিব্বতের রাজধানী লাসার জোকহান মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় । লটারি নেয়ার ফলে জিয়াটসেন নোপো নামে এক পাঁচ বছর বয়সের ছেলেকে দশম বানছেনের উত্তরাধিকারী হিসেবে নির্ণয় করা হয়েছে। চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন পেয়ে এই ছেলে সেই বছরের ৮ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে টাশিলুংপো মন্দিরে একাদশ পাঞ্চেন হলেন ।

    টাশিলুংপো মন্দির পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় প্রতিষ্ঠিত হয় । চতুর্থ পাঞ্চেন থেকে একাদশ পাঞ্চেন পর্যন্ত সবই এই মন্দিরে বৌদ্ধধর্ম চর্চা করেন । এই মন্দিরে একাদশ পাঞ্চেন তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের শাস্ত্র পড়েন । জামইয়াং জিয়াট্সো একাদশ পাঞ্চেনের ধর্মীয় শাস্ত্র শিক্ষক । তিনি বলেছেন , তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের শাস্ত্র এসোটেরিক শাস্ত্র ও এক্সোটেরিক দুই ভাগ নিয়ে গঠিত । এই দুটি ধর্মীয় শাস্ত্র আয়ত্ত করা সহজ ব্যাপার নয় । কিন্তু এই দুটি শাস্ত্র আয়ত্ত করতে না পারলে জ্ঞানী হতে পারে না ।

    আনন্দের ব্যাপার হচ্ছে একাদশ পাঞ্চেন এক বুদ্ধিমান ছেলে । তিনি অধ্যবসাইয়ের সঙ্গে ধর্মশাস্ত্র শিখেন । শাস্ত্র অধ্যয়নে একই সময় তিনি সাধারণ ধর্মাবলম্বীদের চেয়ে দ্বিগুন বিষয় আয়ত্ত করতে পারেন ।

    একাদশ পাঞ্চেন এখন অনেক বৌদ্ধ শাস্ত্র মুখস্থ করতে পারেন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ধর্মাবলম্বীদের আশির্বাদ করেন । গত দশ বছরে একাদশ পাঞ্চেন তিব্বতী জাতির অধ্যুষিত অনেক জায়গা পরিদর্শন করেছেন এবং শতাধিক ছোট-বড় অনুষ্ঠানে প্রায় তিন লক্ষ ধর্মাবলম্বী অধিবাসীর মাথায় হাত বুলিয়ে আশির্বাদ করেছেন । তিব্বতের পোতালা মন্দির , জোখাং মন্দির আর জাইবুং মন্দিরসহ ছোট বড় মন্দিরে সর্বত্রই একাদশ পানছেনের প্রতিকৃতি আছে । অনেক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী টাশিলুংপো মন্দিরে গিয়ে একাদশ পাঞ্চেনকে প্রণাম করে তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ।