v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-12-05 21:01:58    
শেনচৌ ৬ নম্বর নভোযানের নভোযাত্রী

cri
    গত ১২ই অক্টোবর সাকাল ৯টায় চীনের শেনচৌ ৬ নম্বর নভোযান উতক্ষেপন করা হয়, দু'জন চীনা নভোচারী ফেই চিয়ুন লুং আর নিয়ে হাই শেং তাঁদের বহু দিনের মহাশূন্যযাত্রা শুরু করেছেন। অল্পদিনের মধ্যে এই দু'জন নভোচারী সারা পৃথিবীর নজর আকর্ষণ করেছেন।

    দু'বছর আগে চীনের মানব-বাহী নভোযান শেনচৌ ৫ নম্বর সাফল্যের সঙ্গে উতক্ষেপন করা হয়। ইয়াং লি ওয়েইর নাম মহাশূন্যে যাওয়া চীনের প্রথম নভোচারী হিসেবে অনেকের মনে প্রবেশ করেছে। এখন শেনচৌ ৬ নম্বরের উতক্ষেপনের সাফল্য অন্য দু'জনের নতুন নাম ইতিহাসে রেকর্ড করেছে। তাঁরা হলেন ফেই চিয়ুন লুং আর নিয়ে হাই শেং।

    দক্ষিণ চীনে ৪০ বছর বয়স্ক ফেই চিয়ুন লুং আর ৪১ বছর বয়স্ক নিয়ে হাই শেংয়ের জন্ম হয়। তাঁদের বাব মা কৃষক। তাঁরা দু'জনই বিমান বাহিনীর বিমানচালক ছিলেন। তাঁদের অভিজ্ঞতার মধ্যে অনেক মিল আছে। তাঁদের বন্ধু ইয়াং লি ওয়েই বলেছেন, দু'জনের চরিত্র ভিন্ন হলেও দু'জনই ভালো নভোচারী।

    "আমি নিয়ে হাই শেংকে ভালো করে জানি। সে একজন ধীরস্থির মানুষ। তিনি ভালোভাবে প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে এবং সূক্ষ্মভাবে তা ব্যবহার করতে পারেন। ফেই চিয়ুন লুং আরো প্রাণচঞ্চল। দু'জন সহযোদ্ধা উভয়ই শ্রেষ্ঠ। তাঁরা শেনচৌ ৬ নম্বর নভোচারী হিসেবে যে নির্বাচিত হলেন তার প্রমান পাওয়া গেছে।" তিনি আরো বলেছেন, এই সুযোগ পাওয়ার জন্য ফেই চিয়ুন লুং আর নিয়ে হাই শেং বিপুল প্রয়াস চালিয়েছেন। তাই ১৪ প্রার্থীর মধ্য থেকে তাঁরা বেরিয়ে এসেছেন।

    ১৯৯২ সালে চীনে নভোচারীদের প্রশিক্ষণ ও বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত চীনের প্রথম কিস্তির নভোচারী হিসেবে ১৪জন নভোচারীকে নির্ধারণ করা হন। তারা সবাই ১ হাজারেও বেশী ঘন্টা বরে সামরিক বিমান চালিয়েছেন। তাদের সবার প্রাক স্নাতক তারও উচ্চ ডিগ্রী আছে। উচ্চতা ১.৭ মিটার, ওজন ৬৫ কেজির কাছাকাছি। ১৪জন নভোযারী ৭টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রশিক্ষণ নেন এবং তাঁদের ফলাফল অনুসারে শ্রেণীবিন্যস্ত করা হয়।

    নভোচারীদের প্রশিক্ষণ আর তাদের নির্বাচনের প্রক্রিয়া একইসঙ্গে চলেছিল। প্রতি গ্রুপের নভোচারীরা মৌলিক তত্ত্ব, দৈহিক প্রশিক্ষণ, মানসিক প্রশিক্ষণ, মহাশূন্যের পরিবেশে ধৈর্য্যশীলতা এবং এই পরিবেশের সংখ্যা খাপ খাওয়ার প্রশিক্ষণ, নভোযান পরিচলনা এবং ত্রাণ ও অস্তিত্বের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

    চীনের নভোচারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তি উ বিন বলেছেন,

    "ফেই চিয়ুন লুং আর নিয়ে হাই শেং হলেন চীনের নভোচারীদের শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি। তাদের সার্বিক মান উঁচু, প্রশিক্ষণের ফল প্রথম শ্রেণীর। তাদের আচরণ চমত্কার।"

    গত ১২ই অক্টোবর ভোরবেলায় চিয়ো ছুয়ান উপগ্রহ উতক্ষেপন কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও জনগণ তাদের জন্য বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন।

    মানুষরা ঢাক-ঢোলা বাজিয়ে দু'জন নভোচারীর কাছে তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এবং তাদের কল্যান কামনা করেছেন। ৯টায় দু'জন নভোচারী শেনচৌ নভোযানে ঢুকে তাদের বহু দিনের মহাশূন্য যাত্রা শুরু করেছেন।

    শেনচৌ ৬ নম্বর নভোযানে ফেই চিয়ুন লুং প্রধান নির্দেশ দেন, পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ এবং নভোযানের বামদিকের পেনল নিয়ন্ত্রণ করেন। নিয়ে হাই শেং ডানদিকের পেনল নিয়ন্ত্রণ করেন। নিয়ে হাই শেং নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন,

    "মহাশূন্যের জীবন চমত্কার। আমরা মহাশূন্য থেকে আমাদের সুন্দর পৃথিবী দেখতে পারি। এখানকার চমত্কার জীবন ভিডিওতে রেকর্ড করতে পারি। মাঝে মাঝে গান শুনি, অনুষ্ঠান দেখি।" এই সময়ে নিয়ে হাই শেং তার ৪১ বছরের জন্মদিন কাঁটিয়েছেন। জন্মদিনের আগের রাতে তাঁর ১৪ বছরের মেয়ে নিয়ে থিয়েন সিয়াং পেইচিংয়ের মহাকাশ সদর দপ্তরে বিশেষ যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে বাবার জন্মদিনের জন্য তার শুভেচ্ছা জানিয়েছে। নিয়ে থিয়ান সিয়াং বলেছেন,

    "হাই বাবা, আমি কথা বলছি। আপনার কথা খুব মনে করছে। শুভ জন্মদিন। আশা করি আপনি সাফল্যের সঙ্গেকাজ শেষ করেন নিরাপদে ফিরে আসবেন।" এরপর নিয়ে থিয়েন শিয়াং বাবার জন্য শুভ জন্মদিনের গান গেয়েছে। সদর সপ্তরে প্রায় সবাই থিয়েন শিয়াংয়ের মিষ্টি গানের সঙ্গে হাততালি দিয়েছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, শেনচৌ ৬ নম্বর নভোযান মহাশূন্যে কয়েকদিনের যাত্রার পর উত্তর চীনের অন্তঃমঙ্গলিয়ার তৃণভূমিতে অবতরণ করেছে। এতে ফেই চিয়ুন লুং ও নিয়ে হাই শেং তাদের মহাশূন্য যাত্রা সমাপ্ত হয়েছে।