আচার্য ভাবলেন , উখোং এক নিরিহ মেয়েকে হত্যা করলো । তখন উখোং হাড়ি খুলে দেখালো যে সেখানে আছে শুধু ব্যাঙ বিচ্ছু কেন্নো । বললো যে ওর উদ্দেশ্য ছিল খুব খারাপ । সবাই তখন বুঝলো ব্যাপারটা ।
আচার্য ও শিষ্যরা ফর খেয়ে এগিয়ে যেতে লাগলেন । হঠাত্ এক বৃদ্ধা এলো তাঁদের দিকে । সঙ্গে সঙ্গে উখোং চিনতে পারলো সেই দানবিকে । এবার নতুন চেহারা । অমনি সে বসিয়ে দিলো তার মাথায় এক ঘা । দানবি আগের মতোই পালিয়ে গেলো । রেখে গেলো বৃদ্ধার লাশ । আচার্য আবার রেগে গেলেন বৃদ্ধার মৃত্যু দেখে । এবারও উখোং বুঝিয়ে বললেন যে এটা সেই দানবি । অন্য চেহারায় এসেছিলো ক্ষতি করতে ।
এমন সময় এক বৃদ্ধ এলো তাদের সামনে । প্রশ্ন করলো , তার স্ত্রি ও মেয়েকে দেখেছে কি না কেউ । আচার্য ও পাচিয়ে রেগেই ছিলো । উখোংকে কঠোর কথা বললো দুজনেই ।
এবারও উখোং বৃদ্ধকে দানবি বলে চিনতে পারলো । উখোং মন্ত্র পড়ে পর্বতদেব ও ধরিত্রিদেবিকে ডেকে আনলো । তারা দানবিকে ঘিরে ফেললে উখোং ডান্ডার আঘাতে বৃদ্ধকে বধ করলো । দেখা গেলো তার কঙ্কালে লেখা আছে "শ্চেত অস্থি দানবি" ।
পাচিয়ে আচার্যকে বললো , উখোং একে একে তিনটে লোক মেরে ফেললো । আপনি রেগে যাবেন তাই মন্ত্র পড়ে ও বৃদ্ধকে দানবিতে পরিণত করেছে । আচার্য রেগেই ছিলেন । তখনি তিনি উখোংকে শাস্তি দেয়ার জন্য মন্ত্র পড়তে লাগলেন ।
উখোং মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি দিতে লাগলো । উখোং বারবার বললো , আমাকে অন্য শাস্তি দিন , যাদুমন্ত্র পড়া বন্ধ করুন । আচার্য মন্ত্রপড়া বন্ধ করে বললেন , তুমি আকারণে ভালো লোকদের হত্যা করেছো । এমন করলে আমরা কখনই বৌদ্ধশাস্ত্র গ্রন্থ সংগ্রহ করতে পারবোনা । অতএব "আমি তোমাকে আমার শিষ্য হিসেবে মেনে নিতে চাইনা ।" কথাটি কাগজে লিখে তিনি উখোং-কে দিলেন । পাচিয়ে এতে খুশি হলো মনে মনে । উখোং-এর বাহাদুরি সব সময় তার ভালো লাগতো না ।
উখোং কেঁদে ফেললো । কি আর করা । ভিক্ষ শা-এর কাছে আচার্যের ভার দিয়ে আচার্যের কাছে থেকে সে বিদায় নিলো । তারপর মনভরা দুঃখ নিয়ে এক ডিগবাজি খেয়ে নিজের বাড়ি পুষ্পফল পর্বতে চলে এলো ।
পুষ্পফল পর্বতে এসে সে তার অনুচরদের নিয়ে রোজ সমরবিদ্যা চর্চা করে দিন কাটাতে লাগলো । কিন্তু মনে মনে আচার্যের কথা ভাবতো সব সময় । গুরুর প্রতি তার ভক্তির অন্ত ছিলো না । সে যা করতো , তা গুরুর ভালোর জন্যই করতো । তবু গুরু বুঝলেন না ।
উখোং-কে তাড়িয়ে দেয়ার পর আচার্য ও দুইজন শিষ্য পশ্চিম দিকে যাচ্চিলেন । বহু ক্রাশ পথ পার হওয়ার পর এক পাহাড়ি বনে এসে আচার্য ক্ষুধার্ত বোধ করলেন । পাচিয়েকে বললেন কিছু খাবার যোগাড় করে আনতে ।
প্রায় ক্রোশ খানেক হেঁটেও সে কোনো ঘর বাড়ি দেখলোনা । এদিকে খালি হাতে গেলে আচার্য বলবেন , সে খুব কুঁড়ে । নিশ্চয় বেশি খোঁজাখুঁজি করেনি খাবার সংগ্রহের জন্য । তাই সে ঘুরতে লাগলো একটু খাবার জোগাড় করার জন্য । এক সময় ক্লান্ত হয়ে সে কিছু ক্ষন বিশ্রামের কথা ভাবলো । গাছের তলায় শুয়ে সে ঘুমিয়েই গেলো অবসন্ন হয়ে ।
|