তাও পুরোহিত উখোং-এর হাত ধরে বললেন , পশ্চিম স্বর্গে চলো । বুদ্ধের কাছে তোমার বিরুদ্ধে নালিশ জানাবো । উখোং জানালো , তার গুরুকে ছেড়ে দিলে সে যাদুর ফলগাছ ফেরত দিবে । তাও পুরোহিত বললেন , উখোং যদি যাদুর ফল গাছ ফেরত দেয় তাহলে , তার সঙ্গে পুরোহিত ধর্ম ভাই পাতাবেন উখোং রাজি হলো শর্তে । তখন পুরোহিত সবাইকে ছেড়ে দিলেন ।
উখোং মেঘে চড়ে পুর্ব সমুদ্রের ফেংলাই পর্বত গুহায় পৌঁছুলো । সেখানে তিনজন অমর সন্যসি দাবা খেলছিলেন । তাঁদের কাছে গিয়ে তার সমস্যার কথা বললো উখোং । সে জানালো , তিন দিনের মধ্যে যাদুর ফল গাছ ফেরত দিতে হবে । নইলে রক্ষা নেই । অমর সন্যাসিরা বললেন আমরা পশু পাখির প্রাণ দিতে পারি কিন্তু যাদুর ফল গাছ ফেরত দিতে পারিনা । তবে তোমার জন্য আমরা শুধু মহা অমর চেন ইউয়ানকে অনুরোধ করতে পারি তোমাকে বেশি দি ন সময় দেয়ার জন্য ।
উখৌং হতাশ হয়ে এক ডিগাবাজি খেয়ে ফাং চাং পর্বতে পুর্ব স্বর্গের রাজার কাছে গেলো । তিনিও অক্ষমতা জানালেন । আরও হতাশ হলো উখোং ।
এবার উখৌং ডিগবাজি খেয়ে গেলো ইংচৌ দ্বিপে । সেখান এসাদা দাড়িওয়ালা কয়েকজন অমর সন্যাসি দাবা খেলছিলেন । তাঁরাও অপারগতা জানালেন ।
অবশেষে উঔখং ফুথুও দ্বিপে বোধিসদ্ব কুয়ানইনের কাছে গেলো । দেবি বেগুনি-বাঁশ বাগানে ছিলেন ।তিনি জানতেন কেনো উখোং এসেছে । দেবি উখৌংকে বকলেন । বললেন , বোকা দুষ্ট বানর , আমি কি স্বর্গ মর্তের অমুল্য সম্পদ ঐ গাছ নষ্ট করতে পারি ?
বোধিসত্ব তাঁর অমৃতভান্ডারসহ উখোংকে নিয়ে পঞ্চগ্রাম মন্দিরে পৌঁছুলেন । সবাই সসম্মানে উঠে দাঁড়ালো এবং দেবিকে প্রণাম করলো ।
মন্দিরের বাগান পরিস্কার করে ধুপ জ্বালানো হলো । সবাই বাগানে এলো । দেবি উখোং-এর হাতে একটা পুনর্জিবনি কবচ দিলেন । তারপর উইলো গাছের একটা ডাল তার অমৃতে ভিজিয়ে দিলেন উখোং-এর হাতে । উঔখং সেটা উপড়ে যাওয়া গাছের গোড়াতে রাখলো । সঙ্গে সঙ্গে ফোয়ারা ছুটলো । চোখের পলকে মাটিতে গেঁথে গেলো গাছ । তার পাতা ও ফলও দেখা গেলো । নিজের দেয়া শর্ত অনুযায়ী উখোং-বে ধর্ম ভাই করলেন তাও সন্যাসি । মন্দিরে খুশির বন্যা দেখা দিলো । এক চমত্কার ভোজসভার আয়োজন করলেন তাও সন্যাসি । দেবি চলে গেলেন । সব সমস্যা সমাধানের পর আচার্য ও তিন শিষ্য আবার পা বাড়ালেন পশ্চিম দেশের পথে । উদ্দেশ্য , বৌদ্ধশাস্ত্র গ্রন্থ সংগ্রাহ করা ।
উচুয়াং মন্দির ছেড়ে আচার্য , উখোং , চু ও শা পথ চলতে চলতে এসে এক উঁচু পাহাড়ের সামনে । উখোং আগে আগে চূড়ায় উঠে চারদিক দেখার চেষ্টা করলো । কোথাও কিছুই দেখা গেলো না । সবাই ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছে । আথচ খাবার নেই । তাই কিছু বুনো ফল সংগ্রহ করতে গেলো উখোং ।
ঐ পাহাড়ে থাকতো এক দানবি । সে আচার্যকে খাবার জন্য চুটে এলো । দেখলো চু ও শা আচার্যকে পাহারা দিচ্ছে । তখন এক ফন্দি করলো সে । এক সুন্দি নারি হয়ে হাঁড়িতে করে কিছু খাবার নিয়ে এলো আচার্যের সামনে । মেয়েটি বললো যে তার বাড়ি পাহাড়ের সামনে । তার বাবা মা নিরামিষ ভোজি । সে আরও বললো , স্বামির জন্য নিরামিষ খাবার নিয়ে যাচ্ছিলাম । দেখলাম আপনারা অভ্যুক্ত এবং ক্ষুধার্ত । তাই কিছু খাবার নিয়ে এলাম আপনাদের জন্য ।
উখোং ফল হাতে নিয়ে ছুটে এলো ঠিক তখনই । সে বুঝতে পারলো যে ঐ নারি দানবি । ব্যস আর কথা কি । সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলো দুজনের মধ্যে । প্রবল যুদ্ধে হেরে গিয়ে দানবি পালিয়ে গেলো । রেখে গেলো তার লাশ । উখোং-এর ডান্ডা পড়লো তারই উপর ।
|