ওয়াং ইয়ুহুইয়ের সঙ্গে দেখা করার আগে আমাদের সংবাদদাতা জানতে পেরেছেন যে, তিনি চীনের লিয়াও নিং প্রদেশের পেইফিয়াও পৌর সরকারের ভূষিত " মরিচের রাজা" । এবছরে তাঁর আয় এক লক্ষ ইউয়ানেরও বেশি হবে ।
ওয়াং ইয়ুহুই মা ইয়োইং মহকুমার সিয়াও উলান গ্রামের লোক। তাঁর মরিচ-ক্ষেত্র গ্রামের পশ্চিমে প্রায় ৫ কিলমিটার দূরের মাও নিউ নদীর কাছাকাছি । তা হচ্ছে রাষ্ট্র পর্যায়ের কৃষি মান নিদর্শনকারী এলাকায় মধ্যে অক্ষতিকার মরিচ ঘাঁটির বৃহত্তম ক্ষেত্র। ১৭ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ করায় তিনি মানসম্পন্ন এলাকায় অক্ষতিকার মরিচের চাষ করার ক্ষেত্রে তিনি প্রথমবৃহত্ কৃষি-পরিবার হয়ে দাঁড়িয়েছেন । বিশ বছরের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ওয়াং ইয়ুহুই গ্রামের সবকৃষি কাজ করতে পারেন । গ্রামের বিভিন্ন রকমের কাজ উনি খুবই চমত্কার করেছেন। কিন্তু অক্ষতিকার মরিচের চাষ সম্বন্ধে তিনি মাত্র গত কয়েক বছর ধরে নতুন প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছেন ।
২০০১ সালে মা ইয়োইং মহকুমায় মানসম্পন্ন অক্ষতিকার মরিচের চাষ প্রথমবার জনপ্রিয় করে তোলার সময় ওয়াং ইয়ুহুই অন্য কৃষকদের মত অনিচ্ছুক ছিলেন । কারণ তাঁরা সাধারণ জামিতে চাষ করেন বলে বুঝতে পারেন না যে, " শরত্কালে মরিচ খাদ্যশস্য হিসেবে খাওয়া যাবে ?" ঐবছরে তিনি কোনোক্রমে নিজের সংরক্ষিত ০.২ হেক্টর জমিতে অক্ষতিকার মরিচের চাষ করলেন এবং ০.০৬ হেক্টর জমিতে ভূট্টার চাষ করলেন।
শরত্কালের পর, ওয়াং ইয়ুহুই মরিচ বিক্রি করে ৬০০০ ইউয়ান উপার্জন করলেন । তিনি খুব অবাক হয়ে বলেন, " বাহ! মরিচের হেক্টর-প্রতি উত্পাদন থেকে পাওয়া আয় ভূট্টার চেয়ে ১৫০০ ইউয়ান বেশি।"
এখন মরিচের চাষের কথা উল্লেখ করলে ওয়াং ইয়ুহুই খুবই খুশী হন। তিনি একটি লাল মরিচ নিয়ে সংবাদদাতাকে বলেছেন " ৫--৬ সেন্টিমিটার লম্বা এই রকম মরিচ সবচেয়ে ভাল, রং খাঁটি , তা রপ্তানির মানদন্ডের সঙ্গে খাপ খায়। অনুমান করা যায় যে, এবছরে প্রতি কিলোগ্রামে ১০ ইউয়ানেরও বেশি দাম হবে। যদি এই মানদন্ড ও সাইজের সঙ্গে খাপ না খায় তাহলে সেগুলো প্রক্রিয়াকরণ করা যাবে এবং তার দামও কম হবে"। " এই সাইজের মরিচ কি সব কৃষি মানদন্ডের সঙ্গে খাপ খায়?" সংবাদদাতা তাঁকে এই প্রশ্ন করলে ওয়াং ইয়ুহুই হেসে বললেন " মানদন্ডের প্রধান শর্ত হচ্ছে অক্ষতিকার দূষণমুক্ত, কৃষি-ঔষধও নেই, অর্থাত্ সবুজ চাষ করা"।
কৃষি মানদন্ডের কথা উল্লেখ করলে তিনি বলেছেন " বর্তমানে মা ইয়োইং মহকুমায় মানদন্ডসম্পন্ন এলাকায় মোটামুটি সবাই অক্ষতিকার মরিচের চাষ করেন। সবাই মানসমূন্ন চাষের প্রযুক্তি আয়ত্ত করেন এবং সবার মরিচের চাষের জমি আছে"।
এবছরে ওয়াং ইয়ুহুইয়ের চাষ করা মরিচের অবস্থা খুবই ভাল। তিনি অনুমান করেন যে, শরত্কালের পর হেক্টর-প্রতি মরিচের উত্পাদন প্রায় ২৫০ কিলোগ্রাম হবে। এর অধিকাংশই রপ্তানি মানদন্ডের সঙ্গে খাপ খাবে এবং তাঁর মোট সাড়ে ৫ লক্ষ ইউয়ানেরও বেশি লাভ হবে।
তিনি মনে করেন, অধিকংশ চীনা কৃষকের কাছে এই লাভের অংক বিরাট । এর পেছনে দুটো উপাদান কাজ করছে । এক, কৃষি মানসম্পন্ন অক্ষতিকার ফসলের চাষ , দুই, বাজারে মার্কার প্রেরণা। নিদর্শনমূলক ঘাঁটির পরিচালনা এবং মানসম্পন্ন প্রযুক্তির প্রসার ব্যতিরেকে মরিচের ভাল গুণ সুনিশ্চিত করা যায় না। তবে মার্কার প্রেরণা ছাড়া চমত্কার মরিচও বাজারে ভালো বিক্রি হবে না।
গত দু বছরে " ছুয়ান জৌহোং", " পেই ইংচিয়াও " যেমন চীনের শানতুং, হোপেই, থিয়ানচিন, হুনান, জেচিয়াং, চিয়াংসু প্রদেশে সুনাম অর্জন করেছে, তেমনি দক্ষিন কোরিয়া, জাপান ও রাশিয়ারও সেই মরিচগুলো রপ্তানি করেছে।
|