v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-11-17 15:34:10    
চীনের একটি সৌন্দর্যস্নাত সৈকত শহর ম্যাকাও

cri
    চীনের দক্ষিণাংশের জুচিয়াং বদ্বীপে অবস্থিত ম্যাকাও একটি সৌন্দর্যস্নাত সৈকত শহর।তার আয়তন মাত্র বিশটিরও বেশী বর্গকিলোমিটার।প্রাচ্য আর পাশ্চাত্য সংস্কৃতির রীতিনীতির সংগে অপেক্ষাকৃতভাবে মিশে গিয়েছে বলে ম্যাকাওয়ের আকর্ষন অদ্বিতীয়।ম্যাকাওয়ে যে সব গির্জা, মন্দির, পিবনী আর রেস্তেঁরাং আছে সে সব জায়গায় গেলে আপনি অনুভব করতে পারেন যে , সেখানকার ভিন্ন স্থাপত্যের রীতিনীতি, ভিন্ন ধর্মের বিশ্বাস, ভিন্ন খাওয়া-দাওয়ার অভ্যস ইত্যাদি ইত্যাদি সবই চীনের দক্ষিণাংশের একই ছোট শহরের সংগে মিশে গেছে।আজকের চল ঘুরে আসি বিশেষ অনুষ্ঠানে আপনাদের নিয়ে ম্যাকাওয়ের আকর্ষণ অনূভুব করতে যাছি।

    ম্যাকাও একটি মাঝির গ্রাম ছিল।জানা গেছে, ম্যাকাও আসলে একটি দেবীর নাম।এখানকার মাঝিরা এই দেবীকে খুব শ্রদ্ধা করেন। কিংবদন্তীতে বলা হয়েছে যে, কয়েক শ বছর আগে যখন একটি মাছ ধরার নৌকা শান্ত সাগরে যাছিল তখন হঠাত ঝঁড়বৃষ্টি পড়ল।সঙ্গে সঙ্গে মাঝিরা বিপদে পড়ল।ঠিক সেই সময় একজন ছোট মেয়ে নৌকায় আবির্ভাব হল।সে ঝঁড়বৃস্টি থামতে নিদেশ দিল এবং সঙ্গে সঙ্গে ঝঁড়বৃষ্টি থামল।এর পর অসীম সাগর পুনরায় শান্ত হল।মাছ ধারার নৌকা নির্বিঘ্নে বন্দরে পৌছল।তীরে উঠার পর এই মেয়ে একটি কথাও বলল না।সে সড়াসড়ি মাগে নামক একটি পাহাড়ে এগিয়ে গেল।হঠাত মেয়েটি এক ফালি নীল ধুঁওয়ায় পরিণত হয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল।পরে এই মেয়েকে পূজা করার জন্যে , যেখানে সে কৌকা থেকে উঠল সেখানে স্থানীয় লোকেরা একটি মন্দির নির্মাণ করল। ষোল শতাব্দীর মাঝখানে যখন প্রথম কিস্তি পুতুর্কীজ ম্যাকাওয়ে পৌছল তখন তারা স্থানীয় লোকের কাছে জায়গাটির নাম জেনে চেয়েছিলেন।স্থানীয় লোক মনে করল এ সব বিদেশী এই মন্দিরের নাম জিজ্ঞাস করলেন।তাই তারা উত্তর দিল , জায়গাটির নাম "মাগে " । পুতুর্কীজরা স্থানীয় লোকের উচ্চারন অনুসারে " ম্যাকাও" অনুবাদ করলেন।মাজু দেবী স্থানীয় লোকের হৃদয়ের অন্তরে দয়া , যত্ন, শান্তি, স্থিশীলতা এবং মঙ্গলের প্রতীক।সুতরাং এখানে হজযাত্রার আসা-যাওয়ার অন্ত নেই।ছোটির দিনে এখানে শুধু মানুষের ভীড়।চীনের হুপে প্রদেশ থেকে আসা পযর্টক ম্যাডাম চাও সাক্ষাতকারে বলেছেন,

    আমি অনেক দিন আগে মাগে মন্দিরের নাম শুনেছি। এই মন্দির মাঝিদের নিরাপত্তারক্ষা করে। এই মন্দিরের রক্ষায় মাঝিরা নির্বিঘ্নে সাগরে মাছ ধরতে যায় এবং সাগর থেকে নির্বিঘ্নে ফিরে আসে।সুতরাং ম্যাকাও পৌছানোর পর আমি বিশেষভাবে এই মন্দির দেখতে এসেছি।ম্যাকাও প্রগাঢ় একটি চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শহর। তা ছাড়া, এই শহর বিদেশের রীতিনীতিতে পরিপূর্ণ।গত ৪০০ বছর ধরে প্রাচ্য আর পশ্চাত্য সংস্কৃতি এখানে মিশ্র হয়।যার ফলে এখানে অনেক বিখ্যাত সংস্কৃতি উত্তরাধিকার সংরক্ষিত হয়েছে।জার্মানী থেকে আসা উটে মেইস্টার তাঁর ম্যাকাও ভ্রমনের অভিজ্ঞতা প্রঙ্গে বলেছেন,

    আমি ম্যাকাও খুব পছন্দ করি।ম্যাকাও শহরে যেমন আছে প্রাচ্যের বৈশিষ্ট তেমনি আছে অনেক ইউরোপের বৈশিষ্ট।

     ম্যাকাওয়ে আমোদ-প্রমোদ ছাড়া, এখানের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন স্থানীয় খাবার উল্লেখযোগ্য।এখানে নানা শৈলীর খাবার পাওয়া যায়।পর্যটকরা এখানে তাদের পছন্দ খাবার সহজেই পেতে পারেন। গোটা ম্যাকাও শহরে অজস্র ছোট-বড় রেস্তাঁরাং আছে।অনেক পর্যটক সাধারণত ম্যাকাও ত্যাগ করার আগে আতীয়সজন এবং বন্ধু-বাদ্ধবের জন্য স্হানীয় খাবার কিনেন। ম্যাকাওয়ের কেক খুব নাম-করা। একটি কেক দোকানের মালিক বললেন,

    আমার দোকানের বানানো বাদাম মিষ্টি, বউ কেক ইত্যাদি খুব বিখ্যাত। স্থানীয় লোক ছাড়া , বাইরে থেকে আসা পর্যটকরা আমার দোকানে খেতে পছন্দ করেন।

    সুস্বাদ খাবার ছাড়া, ম্যাকাও কেনাকাটার স্বর্গ বলে ডাকা হয়।এখানের জিনিসপত্র চীনের অন্যান্য জায়গার চাইতে সস্তা।এখানকার অলংকার, মাকার ঘড়ি, পুরাকীর্তি, বৈদ্যুতিক পণ্যদ্রব্য এবং কসমেটিকস ইত্যাদি জিনিস পণ্যভোগীদের চাহিদা পূরণ করে।ম্যাকাওয়ের অর্থনীতির উন্নয়ন তরান্বিত করার জন্যে ২০০৩ সালে চীনের মূল ভূভাগের বেশ কয়েকটি প্রদেশ আর শহর ম্যাকাওয়ের প্রতি ব্যক্তিগত পর্যটনের ব্যবস্থা করেছে।এর পর ম্যাকাওএ ভ্রমণ করতে যাওয়া চীনের মূল ভূভাগের পর্যটকদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।ম্যাকাওয়ের প্রবেশ আর প্রস্থান বিষয়ক ব্যরোর উপ পরিচালক সিউ ভিয়ে ভিয়েন বলেছেন ,

    ম্যাকাওয়ের প্রতার্বতন হওয়ার পর ম্যাকাওয়ে আসা পর্যটকদের সংখ্যা বছরের পর পর বেড়েছে।প্রতার্বতনের আগে প্রত্যেক মাসে গড়পড়তা দশ লক্ষ পর্যটক ম্যাকাওয়ে ভ্রমণ করতে আসতেন, কিন্তু ২০০৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্তম্যাকাওয়ে ৩০টিরও বেশী পর্যটককে স্বাগত জানানো হয়েছে।কিছু দিন আগে ম্যাকাওয়ে খাবার এবং শিল্পকলা উত্সব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সব তত্পরতা অধিক থেকে অধিকতর পর্যটককে আকর্ষণ করেছে।