v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-11-16 14:58:56    
২০০৫ সালে চীনের আন্তর্জাতিক বেতার , চলচিত্র ও টেলিভিশন মেলা সমাপ্ত

cri
    চীনের আন্তর্জাতিক বেতার ,চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন মেলা পাঁচ দিন চলার পর ২৮ আগস্ট পেইচিংয়ে সমাপ্ত হয়েছে । এই মেলায় প্রদর্শনী , ছায়াছবি দেখানো , বাণিজ্য আদান-প্রদান , ফোরাম ও পুরস্কার বিতরণ ইত্যাদি কর্মসূচীর মাধ্যমে চীনের বেতার , চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন খাতের দ্রুত উন্নয়ন প্রতিফলিত হয়েছে ।

    ২০০৩ সাল থেকে চীনে আন্তর্জাতিক বেতার , চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন মেলা আয়োজন করা হয় । এই রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের আন্তর্জাতিক মেলা চীনের বেতার , চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ব্রতে অর্জিত সাফল্য প্রদর্শনের একটি জানালা ও দেশবিদেশের বেতার ও টেলিভিশন কেন্দ্র ও চলচ্চিত্র মহলের বন্ধুদের সঙ্গে আদান-প্রদান ও সহযোগিতার একটি প্ল্যাটফোর্ম । এই মেলা এশীয় অঞ্চলের বেতার ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও ছায়াছবি বিনিময়ের বৃহত্তম বাজারে পরিণত হয়েছে ।

    এ বছরের মেলার আকার গত দুবছরের চেয়ে বড় । প্রদর্শনী ভবনের আয়তন ছিল প্রায় ৭০ হাজার বর্গমিটার । এই প্রদর্শনী ভবনে টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও ছায়াছবির প্রদর্শনী ও বেতার , চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের সরঞ্জাম প্রদর্শনী হয়েছে এবং টেলিভিশনে ক্রীড়া অনুষ্ঠান সম্প্রচার ইত্যাদি নানা ধরনের ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়েছে । এই ভবনে গত এক বছরে বেতার , টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র ক্ষেত্রের সরকারী পুরস্কারও বিতরণ করা হয়েছে । যুক্তরাষ্ট্র , ফ্রান্স , জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের প্রায় এক হাজার প্রচার মাধ্যম ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশ নিয়েছে ।

    এই মেলার একটি প্রধান অংশ হিসেবে বেতার , টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র সরঞ্জাম প্রদর্শনীতে সনি , প্যানাসনিক আর থোমসোন ইত্যাদি বিশ্ববিখ্যাত কম্পানিগুলোর পন্য দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে । এই প্রদর্শনীতে উন্নত মানের বেতার ও টেলিভিশন সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি দেখানো ছাড়া ৪০টিরও বেশি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে । চীনের কেন্দ্রীয় টেলিভিশন কেন্দ্রের প্রদর্শনী কক্ষের আয়তন আট শ' বর্গমিটার , এতে প্রদর্শিত নতুন সরঞ্জার ও প্রযুক্তির মাধ্যমে থেকে ২০০৮ সালে পেইচিং ওলিম্পিক গেম্স সম্প্রচারে চীনের সামর্থ্য দেখানো হয়েছে ।

    এই মেলা দেশবিদেশের বেতার , টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র মহলের বিশেষজ্ঞদের একটি সহযোগিতা ও আদান প্রদানের মঞ্চ । জাপানের বৈদেশিক বাণিজ্য সংস্থা এই মেলায় ফ্লাশ ছবি সংক্রান্ত একটি ফোরামের আয়োজন করেছে । এই সংস্থার পেইচিং আঞ্চলিক প্রতিনিধি ইয়োশিকাওয়া ফোরামে ফ্লাশ ছবি তৈরী ক্ষেত্রে জাপান ও চীনের আদান প্রদান সম্পর্কিত একটি ভাষণ দিয়েছেন । সি আর আইয়ের সংবাদদাতাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছেন , এই কথা আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে ফ্লাশ ছবির ক্ষেত্রে চীনের বাজার সম্বন্ধে আমরা আশাবাদী । চীনের বাজারে প্রবেশ সম্বন্ধে জাপানের কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রধান চিন্তা হচ্ছে তারা চীনের ফ্লাশ ছবি বাজারের পাইরেট কপি সম্বন্ধে সংশয় পোষণ করছে । কিন্তু আমরা এর জন্য সহযোগিতার সুযোগ হারাতে চাই না । তাই আমাদের মনোভাব প্রকাশের জন্য আমরা এই মেলায় এসেছি ।

    সাংহাইয়ের উন কুয়ান কোম্পানি এই মেলায় চীনের প্রথম মোবাইল টি ভি নাটক নিয়ে এসেছে , চীনের ঐতিহ্যিক উপন্যাস পশ্চিম যাত্রার কাহিনীর ভিত্তিতে রচিত এই টি ভি নাটকের নামঃ ' শ্বেত হাড়ের দৈত্য ' । গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার দশ-বারোটি কোম্পানি মেলায় অংশ নিয়েছিল । এ বছর দক্ষিণ কোরিয়ার টেলিভিশন কেন্দ্রগুলো এই মেলায় দক্ষিণ কোরীয় ছায়াছবি ও টি ভি নাটক দিয়ে একটি ঘর সাজানো করেছে । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ কোরিয়ার ছায়াছবি ও সিরিজ নাটক চীনা দর্শকদের আন্তরিক সমাদর পেয়েছে । মেলায় তাদের প্রদর্শনী কক্ষে চীনা দর্শকদের পরিচিত অভিনেতা-অভিনেত্রীর বড় বড় ছবি টাঙ্গানো হয়েছে । ' তা ছান চিন ' নামে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ঐতিহাসিক নাটকের ছবিও দেখানো হয়েছে । এই নাটক দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রচারিত হওয়ার সময় দর্শক প্রিয়তার হার ৫০ শতাংশ ছাড়িয়েছিল । দক্ষিণ করিয়ার এম বি সি টি ভি কেন্দ্রের আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান জে বি পার্ক আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন , এ বছর আমরা প্রায় ৫০টি নতুন ছায়া ছবি ও টি- ভি নাটক নিয়ে এসেছি ।আমরা জানি দক্ষিণ কোরিয়ার ছায়াছবি ও টি- ভি নাটক চীনা দর্শকরা পছন্দ করেন , আমরা ছায়াছবি ও টি -ভি নাটকের বিষয়বস্তু ও গুনমান আরো উন্নত করার চেষ্টা করছি ।

    এ বছর চীনা জনগণের জাপানের আগ্রাসন প্রতিরোধ যুদ্ধ বিজয়ের ৬০তম বার্ষিকী , তাই এই মেলার ছায়াছবি ঘরে এই বিষয়ের অনেক ছায়া ছবি দেখানো হয়েছে । চীনের তাইওয়ানের স্টার কিউ কম্পানি চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির ভিত্তিতে তৈরী অনেক এনিমেশন মেলায় নিয়ে এসেছে। এই কম্পানির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছাই চি চুং মূলভুখন্ডের একজন পরিচিত ব্যঙ্গচিত্র শিল্পী । তিনি প্রাচীন চীনের রচনাগুলোর বিখ্যাত কাহিনী এক একটি মজার মজার এনিমেশন ছবি তৈরী করেছেন । এই সব ছবি সব বয়সের দর্শক দেখতে পছন্দ করেন । এই কোম্পানির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সি হাও বলেছেন ,আমরা মূলভূখন্ডের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চাই । এই মেলায় আমাদের কম্পানির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি প্রচারের জন্য আমরা বিশেষভাবে একটি ছবিও তৈরী করেছি ।

    এই মেলায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফোরাম হলো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সম্প্রচার ফোরাম-২০০৫ । এটা চীনের ক্রীড়া অনুষ্ঠান সম্প্রচার সংক্রান্ত এক সম্মিলনী। যুক্তরাষ্ট্রের এন বি এর এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান , এন বি সির ক্রীড়া চ্যানালের প্রধান , স্টার টি ভির প্রধান আর আডিডাস , কোকাকোলা আর জার্মানীর ফোক্সওয়াগানসহ দেশবিদেশের বিখ্যাত প্রচার মাধ্যমগুলো , ক্রীড়া ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা মেলায় এসে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া শিল্পের ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করেছেন । চীনের জাতীয় বেতার , চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ব্যুরোর উপপ্রধান থিয়েন চিন বলেছেন , ২০০৮ সালের পেইচিং ওলিম্পিক গেম্সে পরিবেশ রক্ষা , উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার আর সাংস্কৃতিক ও মানসিক ক্ষেত্রে মনোযোগ দেয়া হবে । চীনের বেতার ও টেলিভিশন কেন্দ্রগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চায় এবং মিলিতভাবে সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে চায় ।