চোখের পলকে সন্যাসি উখোং-এর ডান্ডা থেকে মাথা বাঁচালেন । এরপর শুরু হলো লড়াই । উখোং এবং সন্যাসির মধ্যে তিন দফা লড়াই হলো । হঠাত্ তাও সন্যাসি তার জামার যাদুর আস্তিন খুলে ধরলেন । ঐ আস্তিনে তিনি স্বর্গমর্ত পুরতে পারতেন । আচার্য এবং তাঁর তিন শিষ্য নিমেষে বন্দি হলো ঐ আস্তিনের মধ্যে ।
মন্দিরে নিয়ে গিয়ে তাও সন্যাসি সবাইকে শক্ত করে বাঁধলেন । তারপর সাত তারের চাবুক দিয়ে যখন আচার্যকে মারতে যাবেন তখন উখোং বাধা দিলো । সে বললো ফল চুরি করেছি আমি । আমাকেই মারো । গুরুকে নয় । কথা ঠিক । তখন সবাই উখোংকে মারতে শুরু করলো । চাবুক মারতে মারতে ওরা ক্লান্ত হয়ে গেলো কিন্তু উখোং-এর কিছুই হলো না । অগত্যা রাতের মতো প্রহার স্থগিত রেখে ঘুমোতে গেলো সবাই ।
আচার্য উখোং-কে বকলেন । বললেন , তোমার জন্যই আজ এই অবস্থা আমাদের । এখন থেকে উদ্ধার পাবো কেমন করে ? উখোং গুরুকে আশ্বস্ত করলো ।
গভির রাতে সরু হয়ে দড়ির বাঁধন থেকে বেরিয়ে এলো উখোং । তারপর সবাইকে মুক্ত করে মন্দিরের দরজা পার হলো । যাওয়ার আগে উইলো গাছের চার শাখা ভেঙে তাদের চারজনের চার রকম রুপ দিয়ে মন্দিরে রেখে গেলো ।
যেতে যেতে যেতে ক্লান্ত হয়ে তারা এক পাহাড়ের পাশে বিশ্রামের জন্য থামলো । ওদিকে সকালে উঠে তাও সন্যাসি মানুষরুপি উইলো গাছের ডালেই প্রহার করতে লাগলেন আবার । কিছুক্ষণ পর সেগুলো উইলো গাছে পরিণত হলো । অবাক হলেন সন্যাসি ।
তাও সন্যাসি আবার আচার্যদের ধরার জন্য মেঘে চড়ে ধাওয়া করলেন । সন্যাসি আচার্যদের কাছে এসে পড়লেন কিছুক্ষণের মধ্যেই । বললেন , পালাচ্ছো কোথায় ? আমার যাদুর ফলগাছ ফেরত দাও । নইলে রক্ষা নেই । আবার শুরু হলো লড়াই । আবারও সন্যাসি তার জানার আস্তিনে সবাইকে বন্দি করে মন্দিরে ধরে আনলেন । এবার আর প্রহার নয় । শাস্তিটা হতে হবে আরো কঠিন ।
বিশাল কড়াইতে তেল গরম করা হলো । তাও পুরোহিত এবার উখোংকে ভাজবেন গরম তেলের মধ্যে ।
উখোং একটা নকল উখোং তৈরি করে সেটাকে পাথরের মতো ভারি করলো । আর সে শুন্যে উঠে মজা দেখতে লাগলো ওদের । গরম তেলে ফেলার জন্য আটজন খুদে সন্যাসি একসঙ্গে টানাটানি করেও নড়াতে পারলো না তাকে । অবশেষে বিশজন মিলে ভারি উখোংকে তুলে এনে গরম তেলে ছাড়লো । ছিটকে উঠলো গরম তেল । পুড়ে গেলো সবাই । সকলের সে কি চেঁচামেচি । আর ঐ ভারি উখোং-এর চাপে ফুটো হয়ে গেলো বিশাল কড়াইটা ।
ঘটনা দেখে তাও পুরোহিত অবাক । ভিষণ রেগে গিয়ে তিনি বললেন , এবার আচার্যকে তেলে ভাজা হবে । উখোং এসে সামনে দাঁড়ালো । বললো , প্রভুকে নয় আমাকেই ভাজা হোক । দোষ করেছি আমি । গুরু নির্দোষ ।
|