v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-11-14 13:29:32    
চীনে নামকরা মার্কার পণ্য উত্পাদন উন্নয়নের বিপুল প্রচেষ্টা

cri
    চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ' মেইড ইন চায়না' লেবেল -সম্পন্ন পণ্যদ্রব্য সারা বিশ্বে বিক্রয়ের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে । কিন্তু তবুও বিদেশীরা চীনের নামকরা মার্কার নাম খুব কমই জানেন । এই অবস্থার পরিবর্তন করতেই হবে ।

    বিশ্বের অর্থনীতিতে চীনের অবস্থান ক্রমেই উন্নত হচ্ছে, কিন্তু মোটের ওপর চীনের শিল্পের প্রযুক্তির মান এখনও বেশ অনুন্নত, তা'ছাড়া চীনের নিজস্ব মেধাসত্ব-সম্পন্ন মূল প্রযুক্তি খুব কম, ফলে অনেক পণ্যদ্রব্যের মুনাফা খুব কম, কিছু প্রক্রিয়াকরণ কারখানা আসলে শুধু প্রক্রিয়াকরণের সামন্য পারিশ্রমিক উপার্জন করে, বেশির ভাগ মুনাফা পড়ছে বিদেশের নামকরা মার্কার শিল্পপ্রতিষ্ঠানের হাতে । চীনের রাষ্ট্রীয় গুণগত মান তত্ত্বাবধান প্রশাসনের গুণগত মান বিভাগের মহাপরিচালক সুন পো বলেছেন, " বিদেশের বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আমাদের অবশ্যই প্রযুক্তির নবায়ন ও উদ্ভাবনের গতি দ্রুততর করতে হবে, চীনের নামকরা মার্কার পণ্য উন্নয়নের নীতি বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার বিপুল প্রচেষ্টা চালাতে হবে, যাতে আমরা সবচেয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলতে পারি। নামকরা মার্কা সংক্রান্ত সমস্যা চীনের বর্তমান অর্থনৈতিক কাঠামোর পুনর্বিন্যাস ও প্রবৃদ্ধির ধাঁচের পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত, চীনের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত এবং দেশের আধুনিকায়ন ও ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িত, এটা এক গুরুত্বপূর্ণ রণনৈতিক সমস্যা।"

    চীন সরকারের এই নীতি অনুযায়ী চীনে বিভিন্ন অঞ্চল ও ক্ষেত্রের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর একত্রীকরণে উত্সাহ দেয়া হবে ,যাতে আমাদের পণ্যের মার্কা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বিখ্যাত হতে পারে , যাতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালানোর সামর্থ্য বাড়ানো যায়। গত ৫ বছরে মোট ৯০০টিরও বেশি পণ্য চীনের নামকরা মার্কার পণ্যের মর্যাদা পেয়েছে। চীনের সকল প্রদেশেই এ নামকরা মার্কার পণ্য উত্পাদনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে।

    জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো সূত্রে জানা গেছে, চীনের ৬০ শতাংশ শহরবাসী চীনের নামকরা পণ্য কিনতে পছন্দ করেন।

    চীনের পূর্ব উপকূলীয় ছিংতাও শহরে নামকরা মার্কার পণ্য উত্পাদন শিল্প উন্নয়নে খুব আগেই গুরুত্ব দিয়েছে । এ পর্যন্ত ছিংতাও শহরের ২২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ৪৪টি পণ্য চীনের নামকরা মার্কার পণ্যের মর্যাদা পেয়েছে। ছিংতাওয়ের ভাইস মেয়র উ চিংচিয়েন বলেছেন, " আমি মনে করি, বর্তমান বাজার অর্থনীতির অবস্থায় নামকরা মার্কার পণ্য, নামকরা মার্কার শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং নামকরা মার্কার পণ্য উত্পাদন শিল্পের উন্নয়নের মান হলো একটি শহরের প্রাণশক্তির মাত্রা নির্ণয়ের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড বা নিদর্শন। ছিংতাও শহরের শিল্পোদ্যোক্তারা উন্মুক্ত বাজারের সুযোগ নিয়ে নিজেদের নামকরা মার্কা গড়ে তুলেছেন এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উল্লম্ফন ধরনের অগ্রগতি বাস্তবায়ন করেছেন। এ-রকম নামকরা শিল্পপ্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই ছিংতাও শহরের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তিতে পরিণত হয়েছে।

    নামকরা মার্কার নতুন নতুন পণ্য উত্পাদনের প্রযুক্তি আয়ত্ত করা আর উন্নতি করার জন্য এই শহরে গবেষণার কাজ জোরদার করা হয়েছে । ছিংতাও শহরে এখন চালু হয়েছে ১০টি জাতীয় পর্যায়ের প্রযুক্তি গবেষণাকেন্দ্র।

    গৃহব্যবহার্য বৈদ্যুতিক সামগ্রী উত্পাদনের বিরাট শিল্পপ্রতিষ্ঠান--হাইয়ের গোষ্ঠী১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় । গত ২০ বছর ধরে এই শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অবিরাম ও স্থিতিশীল উন্নয়ন হয়েছে, ফলে হাইয়ের গোষ্ঠী দেশে -বিদেশে বেশ জনপ্রিয় এক নামকরা আন্তর্জাতিক কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে । ২০০৪ সালে হাইয়ের গোষ্ঠীর মার্কার মূল্য প্রায় ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে । ব্রিটেনের ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত ' চীনের দশটি বিশ্ব মানের নামকরা মার্কার তালিকায় হাইয়ের প্রথম স্থান অধিকার করেছে। হাইয়ের গোষ্ঠীর প্রধান মাদাম ইয়াং মিয়েনমিয়েন হাইয়ের গোষ্ঠীর মার্কা সৃষ্টির প্রক্রিয়া সম্বন্ধে বলেছেন, "নামকরা মার্কা সৃষ্টি করার প্রক্রিয়ায় এই গোষ্ঠীর এক ধারাবাহিক প্রক্রিয়া আছে । আমরা ' হাইয়ের' মার্কাকে এক নিজস্ব মেধাসত্ব-সম্পন্ন মার্কা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করবো। তার জন্য দুটি বিষয় আঁকড়ে ধরতে হবে : এক হাতে নিজস্ব মেধাসত্ব সৃষ্টিকে আঁকড়ে ধরতে হবে , অন্য হাতে বাজারের সৃজনী নবায়ন আঁকড়ে ধরতে হবে।"

    বর্তমানে হাইয়ের গোষ্ঠী মোট ৫৪০০টিরও বেশি সত্বাধিকারের জন্য আবেদন করেছেন, এর মধ্যে আবিষ্কারের সত্বাধিকার হলো ৬০০টিরও বেশি । এই গোষ্ঠী ইতিমধ্যেই একটি আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামর্থ্য-সম্পন্ন বিশ্বব্যাপী ডিজাইন নেটওয়ার্ক , ক্রয়ের নেটওয়ার্ক , উত্পাদন নেটওয়ার্ক এবং বিক্রয় নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। হাইয়ের গোষ্ঠী হাইয়ের মার্কাকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে প্রধান মার্কাগুলোর সারিতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

    ছিংতাও শহরের আরেকটি মার্কার পণ্যের সুনামও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা হলো ছিংতাও মার্কার বিয়ার। ছিংতাও বিয়ার কোম্পানির প্রধান চিন চিকুও বলেছেন, " ছিংতাও বিয়ারের সুনাম দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে রয়েছে , এটা বিশ্বের এক নামকরা মার্কা, বড় বড় আন্তর্জাতিক সংস্থাও একে স্বীকৃতি দিয়েছে, ব্যাপক বিদেশী খদ্দেররাও তা স্বীকার করেন। কিভাবে ছিংতাও বিয়ার এই নামকরা দেশী মার্কাকে একটি নামকরা আন্তর্জাতিক মার্কায় পরিণত করা যায়, তার জন্য আমাদের দরকার নিরন্তরভাবে বিয়ার ভোক্তাদের জন্য আনন্দ সৃষ্টি করা , যাতে তাঁরা আনন্দের মধ্য দিয়ে আমাদের মার্কার মূল্য উপলব্ধি বা অনুভব করতে পারেন।"

    বৈদেশিক বাণিজ্য উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে চীনের নামকরা মার্কা গড়ে তোলার গতিও দ্রুততর হচ্ছে । চীনা পণ্যগুলোর মধ্যে কতকগুলো বিশ্ব-বিখ্যাত মার্কা নির্বাচন করা হবে। চীনের রাষ্ট্রীয় মানদণ্ড তত্ত্বাবধান প্রশাসনের গুণগত মান বিভাগের মহাপরিচালক সুন পো বলেছেন " আমরা চীনের নামকরা মার্কার পণ্য নির্বাচন করি, আশা করি এ সব মার্কার প্রভাবে আরও ব্যাপক আকারে উত্পাদন সম্প্রসারণ করতে পারবো। দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর পুনর্বিন্যাস ও প্রবৃদ্ধির ধাঁচ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শিল্পপ্রতিষ্ঠান আরও বড় এবং শক্তিশালী করবো, তাদের পণ্যকে বিশ্বের বিখ্যাত মার্কায় পরিণত করবো।"