v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-11-09 20:56:19    
গায়িকা চিয়াং সিন

cri
    গায়িকা চিয়াংসিন শুধু গান করেন না , তিনি গানের সুর ও কথা লিখতেও পছন্দ করেন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চিয়াংচিন আবার সাহিত্য রচনা করতে শুরু করেছেন , তার রচিত আত্মজীবনী- ভিত্তিক উপন্যাস ইন্টারনেটে ব্যাপক প্রচারিত হয় এবং পাঠকদের সমাদর পেয়েছে । শ্রোতা বন্ধুরা , এইমাত্র আপনারা ' অনাবিল ' নামে চিয়াংসিনের গাওয়া একটি গানের একটি অংশ শুনেছেন , গানের কথাগুলো চিয়াংসিন নিজে লিখেছেন । গানে বলা হয়েছেঃ পৃথিবীতে যেখানে সূর্যের রোদ আছে , সেখানেই স্বপ্ন আছে , প্রতিটি স্বপ্ন যেন মানুষের এককটি নির্মল মুখমন্ডল আর এক সোনালী স্বপ্নের সমুদ্র সৃষ্টি করে । গানে চিয়ান সিন নিজেকে সুর্যমুখীর সাথে তুলনা করেন , গানটিতে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃঢ প্রত্যয় প্রকাশ করা হয়েছে । চিয়াং সিনের ' অনাবিল ' নামক সি ডিটি ২০০৪ সালের শ্রেষ্ঠ রক এন্ডরোল রোল সি ডি নির্বাচিত হয়েছে ।

    চিয়াং সিন বয়স ৩৫ বছর , পূর্ব চীনের সান তুং প্রদেশের ছিং তাও শহরে তার জন্ম । তার বয়স যখন ছয় , তিনি বাবা মার সংগে পেইচিংয়ে আসেন। ছোট বেলা থেকেই চিয়াং সিন নাচগান পছন্দ করেন , প্রাথমিক স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল পর্যন্ত চিয়ান সিন স্কুলের ছোট বড় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোতে নাচ গান পরিবেশন করেন এবং সুনামও পেয়েছেন । ১৯৮৮ সালে চিয়াং সিন পরীক্ষার মাধ্যমে পেইচিং অর্থনীতি ইন্সটিটিউটে ভর্তি হন । তিনি এই ইন্সটিটিউটে আকাউন্টিং পড়েন । এই পাঠ্য বিষয় সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় , কিন্তু এক চঞ্চলা

    মেয়ের পক্ষে এই বিষয়টি এক নীরস বিষয় , চিয়াং সিন আকাউন্টিংপছন্দ করতেন না , কাজেই তিনি প্রায়ই ছাত্রাবাসে লুকিয়ে গিটার বাজিয়ে গান করতেন ।

    এক সুযোগে চিয়াং সিন কয়েকজন রক-এন-রোল গায়কের সংগে পরিচিত হন । এই সব বন্ধুর প্রভাবে চিয়াং সিন বিদেশের বিভিন্ন সময়পর্ব ও বিভিন্ন শৈলীর সংগীত শুনতে শুরু করেন , তার দৃষ্টির ক্ষেত্র আগের চেয়ে ব্যাপক হয়েছে ,যেন চোখের সামনে এক জানালা খুলেছে । তিনি অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের পড়াশুনা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলেন । তার বাবা মা মেয়ের এই সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছেন , তারা আশা করেন , মেয়ে ইন্সটিটিউটের পড়াশুনা শেষ করে একটি ভালো চাকরী পাবেন । কিন্তু নিজের ইচ্ছা অনুসারে গানে সুর দেয়া , গানের কথা রচনা আর গান করাই চিয়াং সিনের স্বপ্ন । তিনি তার বাবা মাকে বলেছেন , নিজের পথ নিজেকে বেছে নিতে হয় । চিয়াং সিন বলেছেন, আমার বাবা মা ও তাদের সমবয়সীরা অভিভাবকদের ইচ্ছা বা প্রথা অনুসারে জীবনযাপন করেন , কিন্তু আমার মত অল্পবয়সীদের মধ্যে যাদের স্বপ্ন আছে , তারা বাবা মার কথা অনুসারে কাজ করবেন না , তারা অবশ্যই নিজের ইচ্ছামতো একটি পথ বেছে নেবেন , আমিই তাদের মধ্যে একজন ।

    পেইচিং অর্থনীতি ইন্সটিটিউট থেকে বেরিয়ে আসার পর ১৯ বছরবয়সী চিয়াং সিন কালাওকে হলে গান করতে শুরু করেন । তিনি প্রতি দিন পেইচিংয়ের বেশ কয়েকটি কারাওকে হলে গান করেন , ক্লান্ত হলেও তিনি স্বনির্ভর হয়েছেন , এতে তিনি আনন্দ বোধ করেন । সেই সময় যেসব মেয়ে কারাওকে হলগুলোতে গান করেন , তারা পাশ্চাত্য স্টাইলের স্কাট পরে হংকং ও তাইওয়ান অঞ্চলের আধুনিক গান করেন , কিন্তু চিয়াংসিন তাদের মত নয় , তিনি পুরানো জিন্সের কাপড় পরে গিটার বাজিয়ে কারাওকে হলে ইংরাজী ভাষায় রক –এন-রোলের গান গান , এটা তখনকার কারাওকে হলে খুব কম দেখা যেত ।

    ১৯৯৫ সালে একটি রেকর্ডিং কম্পানি চিয়াং সিনের বৈশিষ্ট্যময় শৈলী আবিষ্কার করে এবং তার সংগে চুক্তি স্বাক্ষর করে । এই ভাবে চিয়াংসিন সাত বছর স্থায়ী কারাওকে হলে গান গাওয়ার ইতিহাস শেষ করে এক সত্যিকার গায়িকা হলেন ।

    আজ পর্যন্ত চিয়াং সিনের তিনটে রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছে । তার গানের বৈশিষ্ট্যময় শৈলী ক্রমেই তার অনুরাগী শ্রোতার সমাদর পেয়েছে । তিনি শুধু গান করেন না , গানে সুর দেয়া ও গানের কথা রচনার কাজও তিনি উত্সাহের সংগে করেন । তিনি বলেছেন , নিজের লেখা গান গাইলে আমি আরো ভালোভাবে গানের অর্থ প্রকাশ করতে পারি । আগে আমি শুধু আমার পছন্দের গান গাইতাম , ধীরে ধীরে আমি এটা উপলব্ধি করতে পেরেছি যে আমাকে নিজের সৃজন শক্তি দিয়ে সুন্দর গান সৃষ্টি করতে হবে , কারণ আমি মনের অনেক ভাব প্রকাশ করতে চাই । শ্রোতারা চিয়াং সিনের গান শুনতে পছন্দ করেন , কারণ তার গান থেকে শ্রোতারা তার জীবনের অভিজ্ঞতা , তার প্রেম ও তার স্বপ্ন অনুভব করতে পারেন । চিয়াং সিন তার অকৃত্রিম অনুভুতি ও সংগীতের প্রতি ভালোবাসা তার অনুরাগীদের মুগ্ধ করেছেন ।

    চিয়াং সিন একজন পরিশ্রমী মানুষ , তিনি শুধু গান লিখেন না , সাহিত্য রচনায়ও তার প্রতিভা আছে । তিনি পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে প্রবন্ধ লিখেন এবং নিজের বিশেষ কলাম আছে । ১৯৯৯ সালে তিনি ইন্টারনেটে নিজের জীবন কাহিনীর ভিত্তিতে ' লম্বা চুল উড়ার দিনগুলো ' নামে একটি উপন্যাস প্রকাশ করেন , এতে তার অভিজ্ঞতা , তার প্রেম ও সুখ-দুঃখ বর্ণনা করা হয়েছে ,এই উপন্যাস ইন্টারনেটে ব্যাপক প্রচারিত হয়েছে ।

    চিয়াং সিন একজন মুক্তমনা ব্যক্তি । তিনি নিজের মনোভাব প্রকাশ করতে আগ্রহী , গান করা ও সাহিত্য রচনা সবই তার নিজের মনোভাব প্রকাশের উপায় । তিনি বলেছেন , ছোট বেলায় আমি একটি বই পড়ার পর আমি নিজের মনোভাব বইটিতে লিখতাম । আমি আমার মনের অনুভুতি লিখে রাখতে পছন্দ করি । ১৯৯৯ সাল থেকে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে সাহিত্য রচনা করতে শুরু করি । আমার পক্ষে সাহিত্য রচনাই হোক , গান করাই হোক , দুটোই আমাকে মনের অনুভুতি প্রকাশের সুযোগ দেয় , কাজেই এই দুটি কাজ আমি পছন্দ করি ।

    চিয়াং সিন রোম্যান্টিক জীবন পছন্দ করেন । তিনি স্বামী ও বন্ধুদের সংগে গাড়ী চালিয়ে ঘুরতে পছন্দ করেন , গাড়ীতে বসে নিজের গাওয়া গান শুনতে শুনতে জানালা থেকে পথের দৃশ্য উপভোগ করা তার খুব ভালো লাগে । তিনি বলেছেন , তার গান রচনা ও সাহিত্য রচনার অনেক অনুপ্রেরণা এই সময় পান ।