গুরুর আদেশে উখোং গেলো ঘোড়াটাকে ঘাষ খাওয়ার জন্য ছেড়ে দিতে । ভিক্ষু শা গেলো মালপত্র দেখাশোনার জন্য । চু গেলো রান্নাঘরে কিছু রাঁধতে । তাও সন্যাসি দুজন বাগান থেকে দুটো যাদুর ফল এনে দিল আচার্যকে । ফল দুটো দেখতে অবিকল নবজাত শিশুর মতো । আচার্য ফল খাবেন কি দেখেই আঁতকে উঠলেন । বললেন , এমন ফল তিনি কিছুতেই খেতে পারবেন না ।
তাও সন্যাসি পবিত্র পবন এবং উজ্জ্বল চন্দ্র বললো , এই যাদুর ফল পাকতে দশ হাজার বছর লাগে । আর এই ফল যে খাবে তার পরমায়ু বেড়ে যাবে । তবু আচার্য ঐ ফল খেলেন না । তখন ঘরে নিয়ে গিয়ে তরুণ সন্যাসি দুজন ফল দুটো খেয়ে ফেললেন ।
চু পাচিয়ে রান্নাঘর থেকে সবই শুনেছিলো । সে উখোংকে বললো বাগান থেকে কয়েকটা ফল চুরি করে আনতে । উখোং বাগানের উঁচু গাছে উঠে সোনার হাতুড়ির সাহায্যে কয়েকটা ফল নিচে ফেললো । তারপর গাছ থেকে নেমে এসে আর সেগুলো খুঁজে পেলো না । এতে খুবই অবাক হলো সে ।
এমন সময় বাগানের দেবতা এসে উখোংকে বললেন , এই ফল একটা শুঁকলে ৩৬০ বছর পরমায়ু বাড়ে । একটা ফল খেলে ৪৭ হাজার বছর পরমায়ু হয় । আর গাছ থেকে মাটিতে পড়লেই অদৃশ্য হয়ে যায় । এই ফল ধাতুর আঘাতে পাড়তে হয় এবং সিল্কের কাপড় বিছিয়ে ট্রের উপর ধরতে হয় । প্রতি ১০ বছরে এই গাছের মাত্র তিরিশটি ফল পাকে ।
বাগান দেবতার কথামতো ট্রে সাজিয়ে আবার তিনটে ফল পাড়লো উখোং । তারপর তিন শিষ্য সেই ফল খেলো । তিন্তু চু-এর পেটে তখনো খিদে ।
এমন সময় তাও সন্যাসিরা শিষ্যদের জন্য চা আনছিল । তারা শুনলো যে চু আরও ফল খৈতে চাইছে । তারা চমকে উঠলো । বাগানে গিয়ে তারা গাছের ফল গুনেই বুঝতে পারলো বেশ কয়েকটা ফল কম । সঙ্গে সঙ্গে তারা আচার্যের কাছে গিয়ে চুরির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করলো । নালিশ জানালো ।
আচার্য শিষ্যদের ডেকে ফলের কথা জানতে চাইলেন । চু সরাসরি অস্বিকার করলো । উখোং সত্য স্বিকার করলো । সে জানালো যে তারা তিনজনে তিনটে ফল খেয়েছে ।
শিষ্যরা রেগে তাদের গালাগাল দিলো । তখন উখোং একটা লোম ছিঁড়ে তৈরি করলো এক নকল উখোং । তারপর নকল উখোংকে ঘরে রেখে বাগানে গেলো সে । রাগের চোটে এবার ফলের গাছটাই উপড়ে ফেললো উখোং ।
গালাগাল শুনেও আচার্য ও তার শিষ্য কিছুই বলছেনা দেখে তরুণ সন্যাসি দুজন আবার বাগানে গেলো । তারা আতঙ্কিত হয়ে দেখলো যে গাছটা উল্টে পড়ে আছে এবং সেখানে কোনো ফল নেই । মন্দিরের শেষ্ঠ সম্পদ নষ্ট হয়ে গেছে দেখে তারা হায় হায় করে উঠলো । রাগে দুঃখে দিশেহারা হয়ে তারা গুরুর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো । আচার্য এবং শিষ্যরা যখন খেতে বসলেন তখন দুই সন্যাসি বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে তালা দিলো বিরক্ত এবং উদ্বিগ্ন হলেন আচার্য । ওদিকে দুই সন্যাসি উখোংসহ সবাইকে অজস্র গালাগালি করে ঘুমোতে গেলেন ।
গভির রাতে উখোং যাদু দিয়ে তালা ভাঙলো । তারপর মন্দির ত্যাগ করে চলে গেলো সবাইকে নিয়ে ।
অমর চেন ইউয়ান ও খুদে অমর সন্যাসিরা স্বর্গ প্রাসাদ থেকে ফিরে এসে দেখলো মন্দিরের গেট হা করে খোলা । ভেতরে সন্যাসি দুজন গভির ঘুমে অচেতন । চেন ইউয়ান মন্ত্রপড়ে তাদের গায়ে পানি ছিটালেন । তখন তাঁরা চোখ খুললেন । ধড়মড় করে উঠে বসে আচার্য ও তার শিষ্যদের সমস্ত কথা এবং অমর ফলের কথা খুলে বললেন তাঁরা ।
চেন ইউয়ান মেঘে চড়ে গিয়ে আচার্য ও তার শিষ্যদের ধরলেন এবং তাঁর যাদুর গাছ ও ফল ফেরত চাইলেন । বানর উখোংকে গালাগাল দিলেন তাও সন্যাসি চেন । অমনি উখোং তার ডান্ডার এক জবর আঘাত হানলো সন্যাসির মাথায় ।
|