v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-11-07 15:54:51    
নলখাগড়ায় তৈরী জাহাজে করে ওমান থেকে ভারতে

cri
    প্রায় ৪০০০ বছর আগেকার ব্রোঞ্জ যুগে, মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে অধিবাসীরা নলখাগড়া দিয়ে তৈরী জাহাজ চালিয়ে সাগরে ভ্রমণ করত। ৪০০০ বছর পর আধুনিক যুগে গবেষকরা প্রাচীন মানুষের মতো নলখাগড়া দিয়ে জাহাজ তৈরী করে প্রাচীন ব্যবসায়ীদের মতো ওমান থেকে আরব সাগর দিয়ে ভারতের দিকে যাত্রা করেন।

    আরব উপদ্বীপের পূর্বাঞ্চলে পাওয়া কিছু আলকাতরার টুকরোর একপাশে নলখাগড়া ও সুতার ছাপ আছে, আর অন্য পাশে ঝিনুক জাতীয় প্রাণীর ফসিল। প্রত্নতাত্ত্বিকরা মনে করেন যে, এ থেকে বোঝা যায় ব্রোঞ্জ যুগে জাহাজ নির্মাণের পদ্ধতি। ওমান সরকার ও কোন ব্যক্তিগত সংস্থার অর্থ সাহায্যে বিজ্ঞানিকরা সংশ্লিষ্ট রেকর্ডের ভিত্তিতে একটি ১২মিটার লম্বা নলখাগড়ার জাহাজ নির্মাণ করেছেন।

    জাহাজের নাম মাকেন, তা ওমানের প্রচীন নাম। মাকেন নামক জাহাজ ৭ সেপ্টেম্বর ওমানের সুর বন্দী থেকে রওনা হয়েছে। এই সময় বেছে নেয়ার কারণ হলো দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু (Monsoon) ও সাগরের স্রোতের সাহায্য নেয়া। এবার ভ্রমণের উদ্দিষ্ট হলো ভারতের গুজরাট রাজ্যের মান্দ্বি । এ ভ্রমণে প্রায় ৩ সপ্তাহ লাগার কথা।

    প্রত্নতাত্ত্বিক গ্রেগোরি পোসের হলেন এবার ভ্রমণের প্রধান পরিচালক। তিনি মার্কিন প্যান্সিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব ও নৃবিজ্ঞান জাদুঘরের প্রধান। পোসের বলেন, এবার ভ্রমণ ক্রুদের আরাম হবে না। ক্রুদের অবিরাম জাহাজের যত্ন করতে হবে, মাস্তুল নিয়ন্ত্রণ করতে হব।

    মাকেনের ক্রু৮জন, দু'জন মার্কিন, একজন অস্ট্রেলিয়ান নৌসারথি, দু'জন ওমানী নৌজীবী, দু'জন ইতালী স্নাতক এবং একজন ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক। মাকেনের নির্মানের দায়িত্বশীল ব্যক্তি টোম ওয়থমোর এবার ভ্রমনেও যোগ দিয়েছেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, জাহাজে আধুনিক রক্ষা ব্যবস্থা নেই বলে যে কোনো ঝড় বা স্রোতের আঘাত সহ্য করতে পারবে না।

    মাকেন প্রকল্প অংশগ্রহনকারী বিশেষজ্ঞদের আশা, এবারের ভ্রমণের মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণের কার্যকর প্রযুক্তি, এ ধরণের জাহাজের ভ্রমণের সামর্থ্য এবং ভ্রমণের জীবনযাপন নিয়ে গবেষণা করা যাবে।

    ঠিক প্রাচীন মানুষের মতো ভ্রমণ করতে চাইলে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ৮জন ক্রু শুধু সূর্য, চাঁদ, তারা, বায়ু, স্রোত, আকাশ ও সাগরের রংয়ের মাধ্যমে যাত্রার দিক ও আবহাওয়া নির্ধারণ করতে পারবেন। জাহাজে একটি জি.পি.এস ব্যবস্থা আছে, কিন্তু তা ব্যবহার করা নিষেধ।

    খাবারগুলোও ঠিক প্রাচীন মানুষের মতো। খেজুর, মধু, তাল, শুকনা মাছ, পাউরুটি ও পানি তাদের প্রধান খাদ্য। কিন্তু তারা আধুনিক কিছু হালকা খাবারও নিয়েছে, যদি প্রয়োজন হয়।

    "আমি মনে করি যে, হঠাত ব্রোঞ্জ যুগের মানুষের মতো খাবার খাওয়া আমাদের অভ্যাস হয়নি।" ওয়াসমোর বলেন, " বিশেষ করে আমাদের এমন একটি অদ্ভুত জাহাজ চালাতে হবে।"

    পোসের আরেকটি ওমানের জাহাজে "মাকেন"-এর যাত্রীদের তত্ত্বাবধান করেন। এই প্রকল্পের অন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তি ইতালি বোলোগনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মারিছিও টোসি ও প্যারিস জাতীয় বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের সার্গ পোসেরের সঙ্গে মাকেন তত্ত্বাবধন করেন।

    তাছাড়া, ভারতের নৌবাহিনীও একটি জাহাজ পাঠিয়েছে। তা মাকেনের পেছনে পেছনে চলে। জাহাজে লাইফবোট, লাইফ জেকেট ইত্যাদি জরুরী ব্যবস্থা আছে, মাকেন জাহাজের কোনো বিপদ হলে সাহায্য দেয়ার জন্য।