v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-11-04 19:15:09    
৪ নভেম্বর

cri
** ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহেরুর জন্ম

    ১৮৮৯ সালের ৪ নভেম্বর জহওয়ালাল নেহেরুর জন্ম ভারতের এলাহাবাদের এক ব্রহ্মণপরিবারে । ১৯০৫ সাল থেকে তিনি ব্রিটেনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা লাভ করেন । ক্যাম্ব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ৩ বছর ধরে বিজ্ঞান অধ্যয়ন করে অনার ডিগ্রী লাভ করেন । পরে তিনি লণ্ডনের একটি আইন ইনস্টিটিউটে যোগদান করেন এবং ১৯১২ সালে উকিলের যোগ্যতা লাভ করেন । একই বছরে তিনি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে এলাহাবাদে হাইকোর্টে উকিল নিযুক্ত হন এবং ভারতের স্বাধীনতার জন্য রাজনৈতিক আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন ।

    ১৯১৬ সালে কংগ্রেস পার্টির বার্ষিক অধিবেশনে তিনি প্রথমবারের মতো মহাত্মা গান্ধির সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন, গান্ধি ব্রিটেনবিরোধী সংগ্রামে অবিচল থাকায় নেহেরু খুবই মুগ্ধ হন । ১৯১৮ সাল থেকে তিনি কংগ্রেস পার্টির জাতীয় কমিটির সদস্য হন । ১৯১৯ সালে আম্রিত্সার গণহত্যাকাণ্ড সংঘটিত হবার পর তিনি কংগ্রেসের সংগঠিত তদন্তকমিটিতে অংশগ্রহণ করেন । ১৯২০ সালে মহাত্মা গান্ধির পরিচালিত অহিংসা অসহযোগ আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেন , পরের বছরে গ্রেফতার হয়ে কারাবন্দী হন । ভারতের স্বাধীনতার আগে তিনি পর পর আট বার গ্রেফতার হন এবং জেলখানায় ৯ বছর কাটান । ১৯২৩ এবং ১৯২৭ নেহেরু পর্যায়ক্রমে দু বার কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন, প্রত্যেক বারের কার্যমেয়াদ ২ বছর । ১৯২৬ থেকে ১৯২৭ সাল পর্যন্ত নেহেরু ইউরোপ ও সোভিয়েত ইউনিয়ন সফর করেন, মার্কসবাদ ও সোভিয়েত ইউনিযনের সমাজতান্ত্রিক গঠনকাজের প্রভাবে প্রভাবিত হন । ১৯২৮ সালে সুবস চন্দ্রের সঙ্গে মিলিতভাবে নিখিল ভারত স্বাধীনতা জোট প্রতিষ্ঠা করেন ।

    ১৯২৯ সালে নেহেরু কংগ্রেসের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । তাঁর পরিচালনায় কংগ্রেস পার্টির লাহোর সম্মেলণে ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের রাজনৈতিক সংগ্রামী লক্ষ্য উত্থাপন করা হয় । তার পর তিনি সারা ভারতের বুদ্ধিজীবী ও যুবসম্প্রদায়ের নেতা হন এবং অনেকবার কংগ্রেসের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতের জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের দ্রুত বিকাশ ঘটে । স্বাধীনতার দাবি ক্রমেই সোচ্চার হয়ে উঠে । ১৯৪৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রিটেন প্রাথমিকভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতা হস্তান্তর করে, ভারতের অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়, এই সরকারে ব্রিটিশ ভারতের ভাইস-রয় অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন এবং নেহেরু উপপ্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন । ১৯৪৭ সালের মার্চ মাসে লর্ড মণ্টব্যাটেন পরিকল্পনা প্রকাশিত হয়, ভারত ও পাকিস্তান বিভক্ত হয় , ১৫ই আগষ্ট ভারত ডোসিনিয়ন হিসেবে স্বাধীনতা লাভ করে এবং নেহেরু ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন ।

    ১৯৫১ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত নেহেরু ভারতের ক্ষমতা আয়ত্তে রাখেন । তাঁর কার্যমেয়াদে ১৯৫১ সাল থেকে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের " পাঁচ সালা পরিকল্পনা" চালু হয় । পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে নেহেরু জোটনিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সামরিক জোটে যোগ দিতে অস্বীকার করেন । ১৯৫৪ সালের জুন মাসে তিনি চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের সংগে যৌথ উদ্যোগে বিখ্যাত শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পঞ্চশীল নীতি উত্থাপন করেন । ১৯৫৫ সালে নেহেরু বান্দুং সম্মেলন আয়োজন করার উদ্যোগে অংশ গ্রহণ করেন এবং ইন্দোনেশিয়ার বান্দুংয়ে অনুষ্ঠিত এই আফ্রো-এশীয় সম্মেলণে আংশ নেন । নেহেরু, টিটো ও নাসেরের উদ্যোগে ১৯৬১ সালে প্রথম জোটনিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলণ যুগোস্লাভিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় ।

    ১৯৬৪ সালের ২৭শে মে নেহেরু রোগের দরুন মারা যান । ২৮শে মে আনুমানিক ৩০ লক্ষ লোক সারিবদ্ধভাবে তাঁর শেষকৃত্যানুষ্ঠান উপলক্ষে রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে শোক প্রকাশ করেন । নেহেরুর একমাত্র মেয়ে ইন্দিরা গান্ধি ১৯৬৬-১৯৭৭ , ১৯৮০-১৯৮৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল ছিলেন । ইন্দিরা গান্ধির ছেলে রাজিব গান্ধি ১৯৮৪-১৯৮৯ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন ।