v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-11-04 09:34:36    
মা-এর দুধ সন্তান ও মা উভয়ের জন্যে উপকারী

cri
    চীনের গণ মুক্তি ফৌজের ৩০২ নং হাসপাতালের নারী ও প্রসূতী বিভাগের প্রধান ডাক্তার থাও রান সাংবাদিকদের দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন , নিজের বাচ্চার জন্ম হওয়ার পর কোন বাবা-মা চান না নিজের বাচ্চাকে সবচেয়ে ভাল ও পরিপূর্ন পুষ্টি দিতে ? মনে রাখুন,মায়ের দুধ বাচ্চাকে সবচেয়ে ভাল পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে , মায়ের দুধ হচ্ছেবাচ্চাকে মায়ের দেয়া প্রাকৃতিক ও উত্তম খাবার । মায়ের দুধ খাদ্য ও পুষ্টির মধ্যেকার ভারসাম্য রক্ষা করে, মায়ের দুধ শিশুদের ইমিউনিটি ও ব্যাধি প্রতিরোধ জোরদার করার উত্তম পদ্ধতি । মায়ের দুধ শিশুদের গুরু-মস্তিস্ক ও বুদ্ধির সুষ্ঠু-বিকাশ ত্বরান্বিত করার গ্যারান্টি । তাই বিশেষ কারণ না থাকলে বাচ্চাকে মায়ের দুধ খাওয়ান ।

     মায়ের দুধের কি কি উপকার হয় ?

    ডাক্তার থাও বলেছেন , মায়ের দুধ খাওয়ানোর উপকার অনেক । বাচ্চাদের পক্ষে মায়ের দুধের উপকার হল, এক , মায়ের দুধ বাচ্চাদের আই-কিউ (I-Q) বাড়াতে পারে । মায়ের দুধ এমন একটি উত্তম খাদ্য যা বাচ্চাদের সুস্বাস্থ্যের নিশ্চিত করতে পারে এবং বাচ্চার ইমিউনিটি জোরদার করতে পারে ,মায়ের দুধের আছে প্রচুর পুষ্টি । নতুনতম গবেষনা অনুযায়ী মায়ের দুধ বাচ্চাদের আই-কিউ (I-Q) বাড়াতে পারে । গবেষনা থেকে জানা গেছে , মায়ের দুধে আছে মস্তিস্কের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকাসম্পন্ন বেজোর-এসিড , শিশুদের অতি প্রয়োজনীয়এমিনো-এসিড, অন্যান্যদুধের তুলনায় মায়ের দুধে এমিনো-এসিডের অনুপাত ১০ থেকে ৩০ গুণ বেশী । একই সময়ে মায়ের দুধ খাওয়ানোর প্রক্রিয়া শিশুর গুরু-মস্তিস্কের এক উত্তেজনা প্রক্রিয়া , এটা শিশুর জ্ঞান উন্নয়ন , শিশুর মানবজাতির বিশেষ মনোভাব ও উচ্চ স্নায়ু-কেন্দ্র জোরদার করার এক বহুমুখী তত্পরতা , শিশুর বুদ্ধির বিকাশে এর ভূমিকা অপরিহার্য। দুই, মায়ের দুধে অনেক ব্যাধি প্রতিরোধ করার অ্যান্টিবডি আছে , যে শিশু মায়ের দুধ খায় সে শিশু কম অসুস্থ হয় । তিন , সাধারণ দুধের তুলনায় মায়ের দুধ দেখতে পাতলা , কিন্তু মায়ের দুধে পুষ্টির অনুপাত সবচেয়ে বেশী ,যে শিশু মায়ের দুধ খায়না সে শিশুর তুলনায় মায়ের দুধ খাওয়া শিশুর স্বাস্থ্য অনেক ভাল ।চার , মায়ের দুধ শিশুর হজমের অনুকূল বলে সহজে গ্রহন করা যায় এবং এর গ্রহনের হার সবচেয়ে বেশী । পাঁচ,মায়ের ত্বকের সঙ্গে স্পর্শ করে মায়ের স্তন্যপায়ী শিশু সন্তোষ ও নিরাপদ বোধ করে ।

    মায়ের দুধ খাওয়ানো মায়ের পক্ষেও উপকারী । এক, মায়ের দুধ খাওয়ানো নারীদের স্তন ও গর্ভকোষের ক্যান্সার এবং লোহারঅভাব সৃষ্টরক্তদুষ্টি প্রভৃতি ব্যাধির সম্ভাবনা কমাতে পারে , এটা নারীদের সু-স্বাস্থ্যেরঅধিকার অর্জনের পরিচায়ক । এক নতুন গবেষনা থেকে জানা গেছে , বাচ্চাকে মায়ের দুধ খাওয়ানো স্তন-ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার অনুপাত কমার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান , এমন কি এই উপাদান বংশগত উপাদানের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । গবেষনাটি থেকে আবিস্কার করা হয়েছে যে , বংশগত স্তন ক্যান্সার পরিবারের নারী যদি নিজের প্রতিটি বাচ্চাকে ৬ মাসের বেশী সময় ধরে নিজের দুধ খাওয়ান তাহলে স্তন-ক্যাসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৫ শতাংশ কমতে পারে ।গত শতাব্দীতে শিল্পোন্নত দেশে যে স্তন-ক্যান্সারের অনুপাত বিপুল পরিমানে বেড়ে গেছে উপরোল্লেখিত আবিস্কারটি তার ব্যাখায় সহায়ক হবে । দুই ,গুড়া-দুধ ,দুধ খাওয়ানোর বোতল ইত্যাদি কেনা দরকার নেই , মায়ের দুধ খাওয়ানো সবচেয়ে শস্তা পদ্ধতি । তিন , মায়ের দুধ নিবীজন করা দরকার নেই , এর তাপমাত্রাও উপযুক্ত ,তাই মায়ের দুধ খাওয়ানো সবচেয়ে সহজ ।

    বাচ্চাকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর সময় কি কি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হয় ।

    ডাক্তার থাও উল্লেখ করেছেন, মায়ের দুধ খাওয়ানোর সময়ে এ কয়েকটি বিষয়ে বেশী গুরুত্ব দিতে হবে যে, এক ,যদি মায়ের শরীরে পুষ্টির অভাব , তাহলে মায়ের দুধের গুণগতমানের ক্ষতি হতে পারে। মায়ের দুধের গুণগতমান ওজনের বৃদ্ধি সহ বাচ্চার বড় হওয়ার অবস্থার মাধ্যমে জানা যায় ।দুই , মায়ের দুধ খাওয়া নব জন্মগত শিশুদের প্রায় ভিটামিন কের অভাব ,সাধারণত জন্ম হওয়ার পর হাসপাতালে তাদেরকে একবার ভিটামিন কের টিকা দেয়া হয় ,জন্ম হওয়ার তিন মাস পর তাদেরকে পরিমান মতো ভিটামিন কে পরিপূরণ করতে হবে । তিন , মায়ের দুধ খাওয়ার বাচ্চাদের ভিটামিন ডিরও অভাব হয় , তাই ডাক্তারের নির্দেশানুযায়ী বাচ্চাকে উপযুক্ত পরিমানের মাছ-যকৃদ-তেল খাওয়াতে হবে । তাছাড়া বাচ্চাকে রৌদ্র-সেবন করাতে হবে ,কিন্তু জানালার মাধ্যমে রৌদ্র-সেবন করা নয় । কিন্তু মনে রাখতে হবে যে , বাচ্চাকে দীর্ঘসময় ধরে মারাত্মক রৌদ্র-সেবন করাবে না । মায়ের দুধ খাওয়ানকালে মায়েদেরও বেশী রৌদ্র-সেবন করা উচিত ।

    ডাক্তার থাও জোর দিয়ে বলেছেন , মায়ের দুধ খাওয়ানো যাতে সুষ্ঠুভাবে চালানো যায় তার জন্যে গর্ভধারনের সপ্তম মাস থেকে কিছু প্রস্তুতি নিতে হবে।গর্ভধারণকালে সবদাই গোসল করতে হবে , অন্তবাস পরিবর্তন করতে হবে আর আরামের তুলোর কাঁচুলী পরতে হবে ।যে নারীর স্তন-বোঁটা বার হয়নি তাকে গর্ভধারণের শেষ দিকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তার সংশোধন করতে হবে , অর্থাত স্তনে মালিশ করতে হবে বা বারবার স্তন-বোঁটা বাইরে টানতে হবে। বাচ্চাকে প্রসব করার আধা ঘন্টার পর মা আর বাচ্চার মধ্যে ত্বকের স্পর্শ হতে হবে এবং বাচ্চাকে মায়ের স্তন চোষতে দিতে হবে ।চোষা প্রসবকারীর গর্ভকোষের সংকোচ জোরদার করতে পারে ,প্রসবোত্তর রক্তপাত কমিয়ে দিতে পারে , মায়ের দুধ খাওয়ানোর সময় স্থগিত রাখতে পারে । যাতে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সুবিধা হয় তার জন্যে মাকে বাচ্চার সঙ্গে একই রুমে থাকতে হবে ।প্রসব করার পর মায়ের যথেষ্ট ঘুম ও সোপ সহ যথেষ্ট পুষ্টির নিশ্চয়তা বিধান হতে হবে ।

    বিশেষভাবে জানানো দরকার যে ,বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর পর সময়োচিতভাবে বাচ্চার পিঠ চাপড়িয়ে দিয়ে তার পেটের গ্যাস বার করতে হবে ।অর্থাত বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর পর সঙ্গে সঙ্গে তাকে বিছানায় শুয়াতে দেবেন না । দুধ খাওয়ানোর পর বাচ্চার মাথা মায়ের কাঁধে রেখে বাচ্চার পিঠ চাপড়িয়ে দেন , যাতে বাচ্চার পেটের গ্যাস বার হয়ে যায় এবং দুধের বের হওয়াকে রোধ করা যায় ।