v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-11-03 16:39:22    
ঘূর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি বৈজ্ঞানিকরা গবেষণা করছেন

cri
    সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র একটানা ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের এলোমেলো অবস্থা দেখে হয়তো সবাই এমন চিন্তা করবে যে: যদি ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি কমাতে পারলে অথবা তার দিক পরিবর্তন করতে পারলে তাহলে ভাল হতো। এখন বিভিন্ন দেশের বৈজ্ঞানিকরা এই প্রশ্ন নিয়ে গবেষণা করছেন, এবং বিভিন্ন ধরণের মতামতও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এসব পদ্ধতি কার্যকর হবে কিনা, তা পরীক্ষা করতে সময় লাগবে। আজকের "বিজ্ঞান বিচিত্রা" অনুষ্ঠানে এই সম্পর্কে আপনাদের কিছু তথ্য দিচ্ছি। আমি ইয়াং ওয়েই মিং। আশা করি সবাই ভালো আছেন।

    ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি মহাসাগরের ঊষ্ণ জলসীমায় পূঞ্জীভূত থাকে। কাজেই বৈজ্ঞানিকরা এর উপরে বেশী দৃষ্টি রাখেন, যাতে তার "জ্বালানি উত্স" কেটে দেয়া উপায় উদ্ভাবন করা যায়।

    ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে মার্কিন ম্যাসাদুসেটস ইনস্টিটিউট টেকনোলজী বা এম আইটি'র মোশে আলামারো(Moshe Alamaro) একটি প্রস্তাব প্রণয়ন করেছেন। তাঁর প্রস্তাব এমন: ঘূর্ণিঝড় আসার প্রাক্কালে একসঙ্গে অনেকগুলো জেট-ইনজিন ব্যবহার করে একটি ছোট আকারের ঘূর্ণিঝড় তৈরী করে, সত্যিকার ঘূর্ণিঝড় আসার আগে সাগরের ও বাতাসের  "শক্তি" শেষ করে দেয়া। তাহলে ঘূর্ণিঝড় আর শক্তি সঞ্চয় করতে পারবে না। কিন্তু কেউ কেউ সঙ্গে সঙ্গে ভিন্ন মত প্রকাশ করে বলেছে, এত বেশী জেট-ইন্জিন ব্যবহার করলেও ঘূর্ণিঝড় তৈরী করা যাবে না, একটি ছোট ঝড় তৈরী করাও অসম্ভব।

    অন্য বৈজ্ঞানিকরা বলেন, ঘূর্ণিঝড় আসার আগে সাগরের উপরে তেল ঢেলে সাগর থেকে বাতাসে শক্তি সঞ্চালনে বাধা দেয়। কিন্তু এম.আই.টি'র ঘূর্ণিঝড় বিশেষজ্ঞ কেরি এমানুয়েল(Kerry Emanuel) ২০০২ সালে এ ধরণের পরীক্ষা করেছিলেন। তিনি আবিষ্কার করেন যে দ্রুত বেগের অবস্থায়, তেলের স্তর সহজে বিধ্বস্ত হয়, তা দিয়ে এই ভূমিকা পালন করা কঠিন।

    আরেকটি উপায় হলো কয়লার ধূলা দিয়ে একটি ঝড় তৈরী করা। ঘূর্ণিঝড়ের ভেতরে ধূলার মেঘ তৈরী করার মাধ্যমে ঝড়ের ভেতরের কাঠামো ভেঙ্গে দিয়ে তাকে দুর্বল করার চেষ্টা। মেঘের বাষ্প কয়লার ধূলার উপরে জমতে পারে। ১৯৭৩ সালে মার্কিন কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘূর্ণিঝড় বিশেষজ্ঞ ওয়েলিম গ্রেই বলেন, কয়লার ধূলা দিয়ে একটি ছোট ঝড় তৈরী করা যায়। ১৯৫৮ সালে মার্কিন মেরীন গবেষণা কেন্দ্র এ নিয়ে ধারাবাহিক পরীক্ষা করেছিলো, কিন্তু এর ফলাফলও বেশ ভাল নয়।

    এমানুয়েল মনে করেন যে, সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হলো আবহাওয়া ব্যবস্থার উশৃখলতার বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে ঘূর্ণিঝড়ের দিক পরিবর্তন করে জনবসতিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা। রস হফম্যান(Ross Hoffman) প্রথমে এই মত প্রকাশ করেছেন। তিনি ম্যার্কিন ম্যাসাছুসেটস অঙ্গরাজ্যের লেক্সিংটন শহরের একটি বায়ুমন্ডল ও পরিবেশ বিষয়ক কোম্পানিতে কাজ করেন। হফম্যানের মতবাদের ভিত্তি হলো বাটারফ্লাই ইফেক্ট, অর্থাত ঘূর্ণিঝড়ের মতো এমন একটি জটিল ব্যবস্থার জন্য একটি ছোট শক্তি সম্ভবত বিশাল প্রভাব ফেলবে। তাতে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ পরিবর্তন করা যাবে।

    এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আবহাওয়াবিজ্ঞানীরা প্রথমে আরো উন্নত মানের ঘূর্ণিঝড় তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা ও ভাল নমুনার মাধ্যমে এই শক্তির প্রভাবের পূর্বাভাস দেবেন। এরপর তারা এই শক্তি বাস্তবে তৈরী করবেন, যেমন পৃথিবীর বাইরে কিছু রিফ্রেক্টার স্থাপন করে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে হবে। এটির বাস্তবায়ন চাইলে আরো গবেষণা করতে হবে হফমানের মতে।

    কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ বদল করতে পারলেও বিপদ থাকবে। হফম্যান বলেন: আমরা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাইনি সেটা প্রমান করতে হবে। এমানুয়েলও একই মত প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন ঘূর্ণিঝড় যে কোন দিকে যাবে তা সিদ্ধান্ত নেয়া মুশকিল। "তিন মাত্রার ঘূর্ণিঝড় মার্কিন ফ্লরিতা অঙ্গরাজ্যের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অল্প লোকসংখ্যার পেনসাকোলা শহরের দিকে যাবে, নাকি পাঁচ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় নিউ ওরলয়ান্সের উপরে আঘাত হানবে, তা বেছে নেয়া সহজ। কিন্তু পেনসাকোলা শহরের মানুষও নিশ্চয় অভিযোগ করবে।"