|
|
(GMT+08:00)
2005-10-26 18:40:22
|
|
'ইরাকী দ্বারা ইরাক শাসনের' প্রক্রিয়া এক ধাপ এগিয়ে গেছে
cri
২৫ অক্টোবর ইরাকের স্বাধীন নির্বাচন কমিটি সংবিধান সংক্রান্ত গণ ভোটের আনুষ্ঠানিক ফলাফল প্রকাশ করেছে। এই কমিটি ঘোষণা করেছে গণ ভোটে ইরাকের নতুন সংবিধান অনুমোদিত হয়েছে। জানা গেছে, যারা এবারকার গণ ভোটে অংশ নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে ৭৮ শতাংশ স্বপক্ষে ভোট দিয়েছেন। নিনেভাহ প্রদেশে ৫৫ শতাংশ ভোটার নতুন সংবিধানের বিপক্ষে। আনবার আর সালাহুদ্দিন প্রদেশে এই নতুন সংবিধানে বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন তাদের সংখ্যা দুই তৃতীয়ংশ। বাকী প্রদেশগুলোতে নতুন সংবিধানের স্বপক্ষে ভোট দেওয়া ভোটারের সংখ্যা মোট ভোটারের অর্ধেকেও বেশী। ইরাকের অস্থায়ী সংবিধান অনুসারে সারা দেশের অধের্কেওবেশী ভোটার যদি এই নতুন সংবিধানের স্বপক্ষে তাহলে এই নতুন সংবিধান অনুমোদিত হবে। যদি ইরাকের ১৮টি প্রদেশের যে কোনো তিনটি প্রদেশে দুই তৃতীয়ংশ ভোটার সংবিধানের বিপক্ষে ভোট দেন তাহলে নতুন সংবিধান নাকচ করা হবে। সুতরাং এবারকার নতুন সংবিধান সব রকমেই অনুমোদিত হয়েছে।জন্যমত অনুযায়ী, এই ফলাফলকে ইরাকের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় একটি বড় ঘটনা মনে করা হচ্ছে যা অবশ্যই ইরাকের রাজনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। প্র্রথমত: নতুন সংবিধানের অনুমোদন পরবর্তী পযার্য়ের রাজনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্যে বাধাবিঘ্ন উঠিয়ে দিয়েছে।পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বর ইরাকে নতুন সংবিধান অনুযায়ী সংসদীয় নিবার্চন আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজন করা হবে। এর পর সকল ইরাকী জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশের মৌলিক আইন হিসেবে ইরাকের ভবিষ্যত রাজনৈতিক কাঠামোতে নতুন সংবিধানের ভূমিকা ক্রমেই স্পস্ট।নতুন সংবিধানের অনুমোদন ইরাকের রাজনীতি আর গণতন্ত্রের পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। দ্বিতীয়ত: নতুন সংবিধানের অনুমোদন হচ্ছে বিভিন্ন দলের মধ্যে আপোষের ফলাফল। এটা ইরাকে নিরাপত্তা আর স্থিতিশীলতা পুনপ্রতিষ্ঠারঅনুকূল। গত বছরের প্রথম দিকে সুন্নি সম্প্রদায় অন্তবতীর্কালীণ সংসদ নিবার্চন বর্জন করেছে , কিন্তু তাদের পক্ষে বেশী বাস্তব উপকার এনে দেয়নি। তারা আস্তে আস্তে বুঝতে পেয়েছে যে, ভোটের মাধ্যমে কেবল নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করা যায়। তারা এ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার গুরুত্ব উপলদ্ধি করেছে।শিয়া সম্প্রদায় আর কুর্দিরাও উপলদ্ধি করেছে যে , তারা আপোষ করলে সুন্নি সম্প্রদায় সংবিধান সংক্রান্ত গণ ভোট বর্জন করবে না। অবশেষে এর ভিত্তিতে তিন পক্ষ আপোষ করার ফলে নতুন সংবিধান এবারকার গণ ভোটে অনুমোদিত হয়েছে। তা ছাড়া, সুন্নি সম্প্রদায় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যোগ দিয়েছে বলে ইরাকের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির স্থিতিশীলতার জন্যেসুযোগসৃষ্টি হয়েছে। তৃতীয়ত: নতুন সংবিধানের অনুমোদন ইরাক থেকে মার্কিন সৈন্যবাহিনীর প্রত্যাহারের জন্যে ভিত্তি স্থাপন করেছে। বতর্মানে ইরাকস্থ মার্কিন সৈন্যবাহিনীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৫০ হাজার। এটা মার্কিন-বিরোধী সশস্ত্র বাহিনীর হামলার একটি কৈফিয়তে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বরাবর মনে করে, ইরাকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আর নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার পর কেবল যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য প্রত্যাহারের কথা বিবেচনা করবে। ইরাকের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেযুক্তরাষ্ট্রকে ইরাক থেকে তাদের সৈন্য এক দিন না এক দিনই প্রত্যাহার করতেই হবে। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, সংবিধান প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় যদিও বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে কিছুটা আপোষ দেখা দিয়েছে, তবু বিভিন্ন দলের মধ্যকার দ্বন্দ্ব মৌলিকভাবে নিষ্পত্তি হয়নি। বিশ্লেষকরা মনে করেন, পরবর্তীকালের সংসদীয় নির্বাচনে বিভিন্ন দলের মধ্যে স্বার্থ নিয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা অবশ্যম্ভাবী। তবে এবারকার গণ ভোটে নতুন সংবিধানের অনুমোদন থেকে প্রতিপন্ন হয়েছে , বিভিন্ন দলের মধ্যে নানা ধরনের মতভেদ থাকা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে ইতিমধ্যে আরও বেশী অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। সুতরাং ইরাকের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা , ইরাকী দ্বারা ইরাক শাসন করা ইরাকের বিভিন্ন জাতির মৌলিক স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
|
|
|