কি যে হলো , কিছুদিন পর জামাই এর চেহারা ক্রমেই হতে লাগলো শুকরের মতো । থ্যাবড়া নাক ঝোলা কান এবং তার প্রবল খিদে দেখে কাও খুব দুশ্চিন্তায় পড়লো । জামাই দিন দিন অলস হতে লাগলো । সকালে তো ঘুম থেকে ওঠেই না , কেউ ডাকতে গেলে যাতা বলে তাকেই ।
একদিন কাও রেগে তার জামাইকে মারতে গেলো । চু লাফ দিয়ে জানালা দিয়ে বেরিয়ে মেঘে চড়ে পালিয়ে গেলো । দেখো তো কাও-এর হাত পা হিম । বিভ্রান্ত হয়ে গেলো কাও । সত্যি দেখলো সে , নাকি চোখের ভুল ।
সে দিনই সন্ধ্যায় প্রবল শব্দ করে চু শ্বশুর বাড়িতে ঢুকলো । সে জোর করে ধরে নিয়ে গেলো তার স্ত্রি নিল কুসুম কে । তারপর কাউ গ্রামে কাও-এর বাড়ির পেছন দিকের একটা ঘরে তাকে বন্দি করে রাখলো । দি নের বেলায় চু শুধু ঘুরে বেড়াতো মেঘে চড়ে । রাত্রে ঘরে ফিরেই ঘুমিয়ে পড়তো । ব্যস , এই ছিলো তার কাজ ।
কাও তার দানব জামাই এবং মেয়ের ব্যাপারে খুবই মর্মাহত থাকতো । একদিন ভৃত্য ছাই তার প্রভু কাওকে তাও পুরোহিত ডেকে দানবটাকে শায়েস্তা করার পরামর্শ দিলো । কথাটা মনে ধরলো প্রভুর । আয়োজনে লেগে গেলেন তিনি ।
তাও সন্যাসি এসে দানব দমনের জন্য মন্ত্র পড়া আরম্ভ করলেন একদিন । চু এসে ওদের কান্ডকারখানা দেখে হাসলো । পরমুহুর্তে সে এক বিশাল হাঁচি দিলো । সঙ্গে সঙ্গে তাও পুরোহিত ও পুজার বেদি উড়ে নিচেপড়ে গেলো । কাও এবার ভালো পুরোহিত খুঁজতে গেলেন । পথেই দেখা হলো আচার্য সুয়ান চুয়াং এবং তাঁর শিষ্য সুন উখোং-এর সঙ্গে । ছাই তাদের সব কথা খুলে বললো । উখোং বললো , সে ঐ দানবকে শায়েস্তা করতে পারবে ।
ছাই তাদেরকে কাও-এর কাছে নিয়ে গেলো । উখোং-এর চেহারা দেখে কাও আতঙ্কিত হলেন । উখোং কাওকে আশ্বস্ত করে বল লো , চেহারা খারাপ হলেও কাজে সে পাকা । আজ রাতেই সে দানবকে ঠান্ডা করবে ।
সন্ধ্যায় পর স্কোয়ার কাও উখোং-কে বাড়ির পেছনে নিয়ে গেলেন । সেখানে একটা ঘরে বিশাল তালা । ভেতরে বন্দি আছে নিল কুসুম । উখোং-এর ডান্ডার এক আঘাতে ভেঙে গেলো তালা । কাও তার মেয়েকে নিয়ে বাড়ি চলে গেলেন । আর উখোং নিলকুসুমের রুপ নিয়ে ঘরেই থাকলো ।
কিছুক্ষণ পর শুকর দানব চু ঘরে ঢুকলো । সে তার বৌকে মিহিম্বরে কাছে ডাকলো । বৌ এক ধাক্কায় দানবকে ফেলে দিলো । আর অভিযোগ করে বললো , আমার বাবা তোমার ব্যাপারে খুবই দুঃখিত । তিনি স্বর্গরাজ্য তোলপাড়কারি বানরের কাছে বিচার দেবেন ।
চু হেসে বিদ্রুপ করে বললো , ঐ ঘোড়ার সহিস আমার কিছুই করতে পারবেনা । সঙ্গে সঙ্গে উখোং রেগে তার নিজের রুপে ফিরে এলো । মুহুর্তে ঝড় তুলে কোনরকমে দানব পালালো । মেঘে চড়ে দানবের পিছে পিছে ধাওয়া করলো উখোং ।
উখোং দেখলো হঠাত্ দানবটা এক উঁচু পাহাড়ের গুহায় সুড় ত করে ঢুকে পড়লো । উখোং এসে নামলো গুহার মুখে ।
দানব তার নয় কাঁটার নিড়ানি নিয়ে বের হলো । সে উখোংকে বললো , আমি কাও-এর সঙ্গে যাই করি না কেনো তোমার নাক গলাবার দরকার কি ?
উখোং ডান্ডা দিয়ে দানবকে তার কথার জবাব দিলো । শুরু হলো লড়াই । সারারাত লড়াই চললো । অবশেষে ঘুর্ণিঝড় তুলে আবার শুকরদানব গুহার ভেতর পালিয়ে গেলো এবং শক্ত করে বন্ধ করলো গুহার দরজা । উখোং তার ডান্ডার ঘায়ে গুহার দরজা ভেঙে ফেললো । আবার লড়াই শুরু হলো দানবের সঙ্গে । সে কি লড়াই ।
|