v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-10-18 10:17:09    
নিজের বাচ্চা অন্য কাউকে মার দিলে কি করবে

cri

    ২-৩ বছর বয়সের ছেলেমেয়ের মধ্যে অনেকে অন্যকে মার দিতে পছন্দ করে ,কোনো কোনো নিছক ফুর্তির জন্যেঅন্যকে মারতে পছন্দ করে , কোনো কোনো বাচ্চা শুধু অন্যকে মার দেয় না কামড়ও দেয় 。。。ইত্যাদি ইত্যাদি । এর কারণটা কি ? অন্য কাউকে মার দিতে পছ্ন্দ করে এমন বাচ্চা বড় হওয়ার পর তার আক্রমন করার চরিত্র থাকবে ?বিষয়টি নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক ।

    শিশু বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ২-৩ বছর বয়সের বাচ্চরা যে অন্যকে মারে তা অত্যন্ত স্বাভাবিকলক্ষণ,এ বয়সের বাচ্চারা মাত্র কথা বলতে শিখেছে, তারা বেশী কথা বলতে পারে না এবং সঠিকভাবে নিজেদের ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারে না বলে তারা ভাষার বদলে অংগভংগী দিয়ে নিজের ইচ্ছা প্রকাশ করে , ফলে ভুল বুঝাবুঝি হয় । বয়স বেড়ে যাওয়ার সংগে সংগে তাদের অন্যান্যদের সংগে আদানপ্রদানের ইচ্ছাও হয়। কিন্তু ভাষার উন্নয়নে তাদের কাযকলাপ নিয়ন্ত্রিত হয় , একটার পর একটা দ্বন্দ্ব সৃষ্টির ফলে বাচ্চারা সাধারনত মার দেয়ার মাধ্যমে তাদের বাস্তব জীবনে দেখা দেয়া কঠিন সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করে ।

    তাহলে প্রায় অন্যকে মার দেয় এমন বাচ্চাদের চরিত্র কি আক্রমনাত্মক? এ ধরনের বাচ্চা বড় হওয়ার পর তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীবোধ অন্য বাচ্চাদের চেয়ে বেশী? সাবিকভাবে সমস্যাটি দেখতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিভাবকদের জানিয়েছেন । কারণ যে বাচ্চা অন্যকে মার দেয় সে বাচ্চা সহজে বন্ধু পাবে না এবং এজন্যে সে অনেক সুযোগ হারায় । তাই যখন নিজের বাচ্চা অন্যকে মার দেয় বা দেয়ার লক্ষণ দেখা দেয় তখন অভিভাবকদের উচিত সময়োচিতভাবে তাদের ভুলত্রুটি উল্লেখ করা , বাচ্চাকে অন্যদের সংগে মেলামেশা করার কলাকৌশল আর পদ্ধতি শিখিয়ে দেয়া । যাতে বাচ্চাদের অন্যদের সংগে আদানপ্রদানের দক্ষতা বাড়ানো যায় আর তাদের আক্রমনাত্মক তত্পরতা রোধ করা যায় ।

    বিশেষজ্ঞদের পদ্ধতি হল :

    এক, বাচ্চার মনোযোগ সরিয়ে দেয়া । অভিভাবকের উপস্থিতিতে দুবাচ্চার মধ্যে মারামারি হলে মাত্র ২-৩ বছর বয়সের বাচ্চাকে যুক্তি দিয়ে বুঝালে কোন লাভ নেই , এসময়ে তারা সহজে মারামারি থেকে বিরত থাকে না , এক মাত্র উপায় হল তাদের মনোযোগ সরিয়ে দেয়া , এক্ষেত্রেদরকার অভিভাবকদের সৃজনশীলতা ও রসিকতা এবং বাচ্চার আগ্রহ জানা।

    দুই ,বাচ্চাকে কোলে নেয়া ।বাচ্চা জোরেশোরে অভিভাবককে মারলেও নীরবে তাকে কোলে নিয়ে আদর করতে হবে বাচ্চাতার আক্রমন না বন্ধ করা পর্যন্ত।এটা আক্রমনাত্মক চরিত্রের বাচ্চাকে প্রশমিত করার পক্ষে অত্যন্ত উপকারী ।এটা করতে হলে অভিভাবকদের অতি আত্মবিশ্বাস আর আত্মনিয়ন্ত্রন দরকার ।

    তিন,বাচ্চার অন্যের সংগে মারামারি করার পূর্বাভাসউপলব্ধি করা ।সাধারনত বাচ্চার অন্যলোকের সংগে মারামারি করার পূর্বাভাসআছে ।যদি বাবামা বারবার বাচ্চার প্রয়োজন ও চাহিদা উপেক্ষা করেন , তাহলে বাচ্চারা সহজে ক্ষুব্ধ হতে পারে, এটা বাচ্চাদের মন আর শরীরের অনুকূল নয় ।অভিভাবকদের বাচ্চার আচরণের পূর্বভাসউপলব্ধি করতে হবে , যেমন অতি আত্মাভিমানী বাচ্চা মেহমানের সামনে মা যে তার অশিষ্টাচারের সমালোচনা করেন , তা সহ্য করতে পারে না বলে সে বাবামাকে মারতে পারে । বাচ্চার অন্য কাউকে মারার পূর্বাভাসউপলব্ধি করতে চাইলে বাবামাকে নিজের বাচ্চার চরিত্র জানতে হবে, বাস্তবতার সংগে নিজের অনুভূতি বিশ্লেষণ করতে হবে এবং সমানভাবে নিজের বাচ্চার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে ।

    চার ,ভাষা দিয়ে নিজের অনুভূতি বাচ্চাকে জানান ও শিক্ষা দিন। যখন বাচ্চার উপর বাবামার অসন্তোষ হয় এবং রাগ হয় তাহলে বাবামা একথা বলে অন্য ছেলেমেয়ের সংগে বন্ধুত্বপূর্ণভাবেমেলামেশা করতে নিজের বাচ্চাকে শিক্ষা দিতে পারেন যে, তুমি আমার ভাল বন্ধু, কিন্তু তোমার এই প্রকাশ-ভংগী আমি পছন্দ করি না ,বা তোমার সংগে মেলামেশা করা আমার ভাল লাগে , কিন্তু যদি পরে তুমি আবার অন্যবাচ্চাকে মারো তাহলে আমি তোমার সংগে মোজাকরব না অথবা তুমি এমনি না করলে আমরা আগের মতোই ভাল বন্ধু থাকবো।

    তাছাড়া বাচ্চারা মাঝেমাঝে বয়স্কমানুষকে অনুসরণ করে বলে তাদের আক্রমনের স্বভাব দেখা দেয় ।যেমন, নিজের সন্তান অন্য বাচ্চাকে মার দেয়ার পর কোনোকোনো অভিভাবক মার দিয়ে নিজের সন্তানকে শিক্ষা দেন,যার ফলে বাচ্চারা নিজের বাবামার পদ্ধতি অনুসরণ করে অন্য বাচ্চার সংগে মেলামেশা করে এবং এইভাবে বাচ্চাদের অন্যলোককে মার দেয়ার অভ্যাস হয় ।সুতরাং পরিবারে বাচ্চাদের জন্যে এক উষ্ণ পরিবেশ,সমতা,গণতন্ত্র আর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে ।নিজের সন্তানের সামনে বাবামাদের ঝগড়া না করার প্রচেষ্টা চালানোউচিত ।

    অন্য ছেলেমেয়ের সংগে মেলামেশা করার সময়ে নিজের বাচ্চা মাঝেমাঝে মার খায়,এসম্পকে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এসময়ে বাচ্চাকে তিরস্কার করবেন না এবং বাচ্চাকে প্রতিশোধ নেয়ার শিক্ষাও দেবেন না ।অন্য বাচ্চার সংগে মেলামেশা করার সময়ে যদি আপনার সন্তান সবসময়ে মার খায় তা নয় ,তাহলে আপনাকে অতিরিক্ত চিন্তাকরতে হবে না । কারণ ২-৩ বছর বয়সের বাচ্চার পক্ষে মার দেয়া বা মার খাওয়া উভয়ই স্বাভাবিক ,তাই যে কোনো বাচ্চা সবসময়ে অন্যের মার খায় বা অন্যকে মার দেয় এমন ঘটনা হতে পারে না ।অভিভাবকরা যদি যথেষ্ট ধৈর্যনিয়ে সঠিকভাবে নিজের বাচ্চাকে পরিচালনা করেন , তাহলে আপনার বাচ্চার অন্য বাচ্চাকে মার দেয়ার অভ্যাসসহজে সংশোধন করা যায় ।