v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-10-03 20:43:06    
আমাদের চিন্তাভাবনা উদ্বুদ্ধ হলুক, আমাদের বুধি চলুক

cri
    ২০০৫ সালের এশিয়া প্যাসিফিক রোবাট প্রতিযোগিতা ২৭ আগস্ট পেইচিংয়ের এরোনাউটিকস ও এস্ট্রোনাউটিকস বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমে আয়োজিত হয়। এবারের প্রতিযোগিতায় চীন ও বাংলাদেশ সহ ১৯টি দেশের মোট ২০টি প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছে, এবং এক হাজারেরও বেশী দেশীবিদেশী দর্শক উপস্থিত ছিলেন।

    এবারকার প্রতিযোগিতার নাম হলো "মহাপ্রাচীরে উঠে, পবিত্র অগ্নি জ্বালানো"। তার অনুপ্রেরণার উত্স হলো চীনের বিশ্ববিখ্যাতপ্রাচীন মহাপ্রাচীর। অংশগ্রহনকারী প্রতিযোগীরা মানব-নিয়ন্ত্রিত রোবাট ও স্বয়ংক্রিয় রোবাট দিয়ে পাঁচটি মশাল ও চারটি বহ্নুত্সবে জ্বালানি অর্থাত রঙিন বল দেয়া, তার মানে পবিত্র অগ্নি জ্বালান। খেলার মাঠে তিনটি অংশ আছেঃ মানব-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল, স্বয়ংক্রিয় অঞ্চল ও বহ্নুত্সব অঞ্চল। মানব-নিয়ন্ত্রিত রোবাপ শুধু মানব-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে চলতে পারে, আর স্বয়ংক্রিয় রবাট মানব-নিয়ন্ত্রিত ও স্বয়ংক্রিয় অঞ্চলে চলতে পারে।

    এবার প্রতিযোগিতার আগে চীন প্রাক-প্রতিযোগিতা চালিয়েছে। সারা চীনের ৩৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল এতে অংশ নেয়। অত্যন্ত উত্তেজনাকর প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও হারবিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এতে বিজয়ী হয়। তারা চীনের প্রতিনিধি দল হিসেবে এবারকার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে।

    চীনের পূর্ব-প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারী কুয়াং সি প্রদেশের কুইলিন বৈদ্যুতিক শিল্প বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাও ওয়েই তুং আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন:

    "আমি তিনবার রোবাট প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলাম। প্রতিযোগিতাটি ক্রমাগতই উত্তেজনাকর হয়ে উঠে। এবছরের প্রতিযোগিতার মান এত উচ্চ যে আমরা চিন্তাও করতে পারি না। শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে মুখোমুখি হলে কৌশলের ব্যবহার প্রযুক্তির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।" তাঁর প্রতিনিধিদল এবার অংশ নিতে পারেনি, তবে তিনি বিভিন্ন দেশের চমত্কার রোবাট দেখার জন্য এসেছেন।

    চীনের দু'টি দল ছাড়া, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশ ও অঞ্চল এবার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট-Bangladesh University of Engineering and Technology- BUET) তিনজন ছাত্র এবং তাদের শিক্ষক এবারকার প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছেন। এশিয়া সম্প্রচার ইউনিয়নের উপ-পরিচালক তাদের ব্যাপক আগ্রহের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ায় আন্তরিক প্রশংসা করেছেন। চীনস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব আশফাকুর রাহমানও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে উত্সাহিত করার জন্য উপস্থিত ছিলেন। তিনি আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন:

    "আমি অত্যন্ত খুশি যে বাংলাদেশ এরকম একটি রোবাট প্রতিযোগিতায় আসতে পেরেছে। তারা (বুয়েটের ছাত্ররা) যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে আমি অত্যন্ত খুশি। সব দেশকেই কোনো এক সময় একটা কাজ শুরু করতে হবে। আমরা যদি অন্য দেশ দেখে অনুপ্রেরণা পাই, সেটা খুবই ভাল কথা। তা একটি দেশের জন্য খুব ভাল। এবং আমি অভিনন্দন জানাই আমাদের বাংলাদেশের ছাত্রদের যে তারা এরকম উদ্যোগ নিয়েছে।"

    প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক, কোয়াটার-ফাইনাল আর ফাইনাল পর্ব ছিল। প্রতিবার প্রতিযোগিতার সময় ছিল তিন মিনিট। প্রথমিক প্রতিযোগিতার পর চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হারবিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, চীনের হংকং বিশ্ববিদ্যালয় ও জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় কোয়াটার-ফাইনাল পৌঁছায়। ফাইনাল প্রতিযোগিতা অত্যন্ত উত্তেজনাকর এবং আকর্ষনীয় ছিল। দর্শকদের পুরোপুরি মনোযোগ ছিল তার উপর এবং সবাই খুব প্রসারণে ছিলো। অবশেষে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় তাদের রোবাট স্থিতিশীল আচরণ ও অপ্রব্যাশিত কৌশলের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন হয়।

    রোবাট প্রতিযোগিতা শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, তা সৃষ্টি সামর্থ্যের প্রদর্শনও বটে। সঙ্গে সঙ্গে তা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের যুবকযুবতীদের মৈত্রী ও সংস্কৃতি আদানপ্রদানেরও মঞ্চ। পেইচিং এরোনাউটিকস ও এস্ট্রোনাউটিকস বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রপাতি ও স্বয়ংক্রিয়তা বিভাগের রোবাট গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপকজুং কুয়াং হুয়া বলেছেন:

    "এ প্রতিযোগিতার প্রধান লক্ষ্য হলো রোবাটের উপর মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করা। এর মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার ত্বরান্বিত হবে। শিক্ষার প্রক্রিয়া বুদ্ধি ও হাতের মিলিত ব্যবহার এবং বিজ্ঞান ও সামর্থ্যের যুক্তকরণের গবেষণাগত ও উত্সাহজনক আগ্রহীর ব্যাপার পরিণত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিজয়ী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ নয়, অংশ নেয়াই ভাল। এবছরে নতুন প্রতিনিধি দল অংশগ্রহন করেছে, তাতে আমাদের বিজয় হয়েছে।"

    চীনের কেন্দ্রীয় টেলিভিশনের পরিচালক জাও হুয়া ইয়ুং বলেছেন:

    "এটি একটি আকর্ষণীয় প্রতিযোগিতা। বিভিন্ন দলের চমত্কার আচরণ দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। প্রতিযোগীদের সাহস, বুদ্ধি ও সমন্বিত প্রচেষ্টা আমাদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। এমন সক্রিয় তরুণও তরুণীদের প্রয়াসে আমাদের এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ভবিষ্যত নিশ্চয়ই খুব উজ্জ্বল হবে।"