v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-09-30 14:50:19    
মাশরুম উত্পাদনকারী যুবক

cri
    এখন লিউ শাওজুনের বয়স ৩১ বছর । অনেক বছর আগে হাইস্কুল থেকে স্নাতক হবার পর তিনি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবার জন্য পরিক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। পরিবারের গরীব অবস্থার কারণে তিনি আর একবছর প্রস্তুতি নিয়ে নতুন বছরে আবার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবার পরীক্ষা দেয়ার চেষ্টা ছেড়ে দেন ।

    অনেক চিন্তা করার পর তিনি একটি প্রযুক্তি শেখার সিদ্ধান্ত নিলেন । ঐবছরে ফসল কাটার পর তাঁর বাড়িতে ছিল শুধু ৫০ ইউয়ান । এই ৫০ ইউয়ান নিয়েই বৈদ্যুতিক সামগ্রী মেরামত শেখার জন্য হারবিন শহরে গেলেন, তাতে নিজের অত্যাবশ্যকীয় কাজ শুরু করলেন । ১৯৯৪ সালে তিনি ইলেকট্রনিক্স বাজারে ব্যবসা চালানোর জন্য বন্ধুদের সঙ্গে একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ কারখানা প্রতিষ্ঠিত করলেন । কয়েক বছর ধরে ধৈর্য ধরে প্রচেষ্টা চালানোর পর ১৯৯৭ সালে তাঁর স্থাবর সম্পত্তি বেড়ে ৪ লক্ষ ইউয়ানে দাঁড়িয়েছে।

    ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ কারখানা চালানোর সময়ে তাঁর একজন আত্মীয় ই ছুন শহরে একটি মাশরুম প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় কাজ করতেন। সেই আত্মীয়ের মাধ্যমে লিউ শাওজুন এই কারখানার মালিকের সঙ্গে পরিচিত হলেন । তাঁর সঙ্গে মেলামেশার মাধ্যমে লিউ শাওজুন মাশরুম উত্পাদন সম্বন্ধে আকৃষ্ট হলেন এবং প্রত্যেক বার তিনি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁচামাল বা পণ্য ক্রয় করার সুযোগ ধরে সেই সব অঞ্চলের মাশরুম উত্পাদনের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিলেন । তিনি পর পর ফুচিয়ান প্রদেশের কুথিয়ান, জেচিয়াং প্রদেশের ছিংইউয়ান, হোপেই প্রদেশের বাওতিং এবং শানতুং , হোনান ইত্যাদি জায়গায় গিয়ে মাশরুম উত্পাদনের অবস্থা জেনে নিলেন ।

    তদন্তের মাধ্যমে তিনি আবিষ্কার করলেন যে , মাশরুম উত্পাদনের অনেক সুবিধা হয়: তা উত্পাদন করতে জ্বালানী বা শক্তিসম্পদের তেমন খরচ হয় না এবং বেশি কৃষিজমি ব্যবহার করা হয় না, বরং কৃষিক্ষেত্রের আবর্জনা ব্যবহার করা হয়। এটা এক সবুজ শিল্প। যার উন্নয়নের ভবিষ্যত্ সম্ভাবনা খুবই বিরাট এবং বাজারে বিক্রয়ও খুবই ভাল বলে দেশের অনেক এলাকায় গ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হয়েছে। জরীপ করার পর লিউ শাও জুন পুঁজিবিনিয়োগ করে মাশরুম উত্পাদন উন্নয়ন করার সিদ্ধান্ত নিলেন ।

    লাভ করার জন্য তিনি তিনবার প্রদেশের সংশ্লিষ্ট গবেষণা বিভাগে গিয়ে মাশরুম গবেষণার বিশেষজ্ঞ কুও ইয়ানছুই ও ইয়ান ইয়ুজু দুইজনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করলেন । এই দু'জন প্রফেসরের সমর্থনে ১৯৯৭ সালের জুন মাসে লিউ শাওজুনের " থুংছিং লিমিটেড কোম্পানি " প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেই বছরের অক্টোবর মাসে তাঁর মাশরুম উত্পাদনের পরীক্ষা সফল হয়। তাতে পিংকু, চিনজেনকু, জিথুউকু, সিংবাওকু ইত্যাদি দশ রকম মাশরুম উত্পাদন সফল হয় ।

    উত্পাদনের প্রক্রিয়ায় লিউ শাওজুন যে পদ্ধতি বা কাঠামো ব্যবহার করে , তা হলো : কোম্পানির নেতৃত্বে পরিচালিত মাশরুম উত্পাদন ঘাঁটি এবং এই ঘাঁটির সঙ্গে কৃষকদের ব্যাপক যোগাযোগ স্থাপনের ভিত্তিতে মাশরুম উত্পাদন করা হয়। এইভাবে উপজেলার ১০০জনেরও বেশি কৃষক মাশরুম উত্পাদনে অংশগ্রহণ করেন । দরিদ্রদের জন্য বিভিন্ন ধরনের মাশরুমের বীজ আর কাঁচামাল ধার দেয়ার পদ্ধতিতে সরবরাহ করা হয়। ন্যায্য মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে তাদের উত্পাদিত মাশরুম ক্রয় করা হয়, যাতে কৃষকদের আর্থিক উপকার হয় । তিনিও মাঝে মাঝে প্রকৌশলীর সঙ্গে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের প্রযুক্তি শিখিয়ে দেন, যাতে মাশরুম উত্পাদনকারী কৃষকরা উত্পাদনে সফল হতে পারেন এবং প্রত্যেক বর্গমিটারে সর্বোচ্চ ৪২ ইউয়ান উপার্জন করতে পারেন , খুব কম হলেও ৩৮ ইউয়ান লাভ করেন।

    মাশরুম বিক্রয়ের সমস্যা সমাধানের জন্য লিউ শাওজুন চীনের হোপেই প্রদেশের রুইডি কোম্পানির সঙ্গে অনেক বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন, যাতের শুষ্ক, টাটক দুই ধরনের উত্পাদন বাজারে সহজেই সরবরাহ করা যায় । এই চুক্তি পেয়ে কৃষকদের উত্পাদনের উত্সাহ বা সক্রিয়তা আরও বেশি বেড়ে যায় এবং আরো নতুন নতুন কৃষক এখানে এসে তালিকাভুক্ত হয়ে মাশরুম উত্পাদনে অংশগ্রহণ করেন। লিউ শাওজুন এসব কৃষককে বিনা খরচে প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ দেন এবং মুখোমুখী প্রযুক্তি শেখান, যাতে মাশরুম উত্পাদন সম্বন্ধে কৃষকরা আস্থাবানহতে পারেন । লিউ শাওজুন এইভাবে গ্রামের এক শোর বেশি কৃষক নিয়ে ধনি হবার পথে এগিয়ে চলেছেন ।