v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-09-16 20:57:32    
সুখী জীবনই সফল জীবন

cri

    লেখিকা হান বলেছেন, আমার চোখে সুখীজীবনই সুখী জীবন, এটা আমার জীবনের সফলতার মানদন্ড,পরিবারপরিজনদের ভালবাসা, বন্ধুত্ব আর আবেগ আমার সুখী জীবনের তিনটি বড় উত্স।

    এক ,পরিবার পরিজনদের ভালবাসা

    পরিবার পরিজনদের ভালবাসা আমার পরিবার থেকে উপসরিত ।আমি আমার মেয়ে সেন নানকে অত্যন্ত ভালবাসি , আমি তাকে বেশি দিয়েছি চিন্তাধারাআর জীবন বেছে নেয়ার স্বাধীনতা । মেয়ে ধীরেধীরে বড় হয়ে উঠছে এবং অধিক থেকে অধিকতর অবগত হচ্ছে ।সেদিন দুপুরে সে ইস্কুল থেকে বাড়ি ফিরে এসে আমাকে বলল , মা , আমাদের শিক্ষিকা আমাদের বলেছেন , এক সফল মহিলাকে তার সারা জীবনে তিনটা কাজ করতে হবে : একটি গাছ লাগাতে হবে ,গাছটির মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুনিয়ার উদ্ভিদ স্থায়ীভাবে সবুজ থাকবে; এক সন্তানের জন্ম দিতে হবে , আপনার জীবন তার মাধ্যমে চিরকালই জীবিত থাকবে; একবই লিখতে হবে , বইটির মাধ্যমে আপনি আপনার আদর্শের উত্তরাধিকার রেখে যাবেন । মেয়ের কথা আমাকে গভীরভাবে মুগ্ধ করেছে, আমি কথাগুলোকে আমার দ্বিতীয় বইটির শেষ অংশে লিপিবদ্ধ করেছি ।

    তিনবছর আগে মেয়ে বিদেশে পড়াশুনা করতে গেছে , তখন তার বয়স মাত্র ১৪ বছর , আনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তাকে এত ছোটোবয়সে বিদেশে পাঠিয়ে আপনি চিন্ডিত নন? আমি মনে করি, অনেক বছর আগে আমি জার্মানিতে পড়াশুনা করেছি,তার প্রভাবে মেয়ে বিদেশে পড়তে যেতে চাইলো নিল । যদিও আমি অনিচ্ছুক , তবে অবশেষে আমি মেয়ের পছন্দকে সমর্থন করেছি । পরে যখন মেয়ে তার লেখা পড়ার চমত্কার ফলাফলের সার্টিফিকেট পেয়েছ তার জন্যে আমি যে গবিত হয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারি না । যখন টেলিফোনে তার মধুর কন্ঠশুনে যে আনন্দ পাই তা সবসময়ে আমার প্রানবন্ত স্মৃতিতে জাগরুক থাকে । আমি বই লেখার জন্যে এত চেষ্টা করছি জেনে একদিন টেলিফোনে মেয়ে আমাকে বলল , মা ,আমি অবশ্যই আপনার বই অনুবাদ করে বিদেশে প্রকাশ করে দেব 。আমি সত্যি আনন্দিত যে, মেয়ে বড় হয়েছে , তার বড় হওয়ার প্রক্রিয়া আমার অবিরাম আনন্দের উত্স ।

    দুই, বন্ধুত্ব

    আমার বন্ধুত্ব আমার বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে আসে ।নানখাই বিশ্ববিদ্যালয় আর জার্মানির মিউনিখ প্রতিরক্ষাবিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে আমার ঘনিষ্ঠ সহপাঠিরা আমার সারা জীবনের মূল্যবান সম্পদ। এদের মধ্যে একজন রাশিয়ায় অনেক বছর কাটিয়েছেন , যখন দেশে ফিরে আসেন, নিজের কাজ,স্বামী আর বাচ্চার কথা বলা ছাড়াও তিনি রাশিয়ার অর্থনীতিও রাজনীতির পরিবর্তনের নতুন তথ্য জানাতে সক্ষম । এটা আমার অর্থনৈতিক গবেষনার জন্যে উত্তম উপাদান যুগিয়েছে । আরো কিছুবন্ধু হলেন , ছিংহু বিম্ববিদ্যালয়ের এম-বি-এ আর শিল্পোদ্যোগ ক্লাসের হাজারজন ছাত্রছাত্রী, আমি তাদের শিক্ষিকা ছিলাম ।তারা শ্রেষ্ঠ , তারা স্বাধীন এবং সত্যনিষ্ঠ, আমি তাদের শিক্ষিকা এবং তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু । যখন তারা জীবনের সন্ধিক্ষনের সম্মুখীন হয় তখন তারা আমার সংগে পরামর্শকরতে আসেন, সাধারন সময়ে আমি ভাল পরামর্শ দেই । যেমন একজন ছাত্র ডঃ ডিগ্রি পাশ করার পর সরকারী অফিসে না তহবিল সংস্থায় যাবেন এনিয়ে দ্বিধান্বিত হলে আমার পরামর্শে তিনি এক শহরের পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব নিলেন, কারন তিনি একজন দুঢসংকল্প ও শান্ত মানুষ,তিনি সরকারি অফিসে দায়িত্বশীল ব্যক্তি হতে চান এবং তার সামর্থ্যও আছে । অন্য একজন ছাত্র এক মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী হবেন কি না এনিয়ে দ্বিধান্বিত হলে আমার সমর্থনে তিনি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে থাকা বেছে নেন , কারন তার পরিচালনাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠান লক্ষকোটি ইউয়েন মূল্যের শিল্পপ্রতিষ্ঠানেপরিনত হয়েছে , তার শিল্পপ্রতিষ্ঠান শ্রেষ্ঠ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সারিতে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে । আমাদের মধ্যে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীর পার্থক্যনেই , আমাদের মধ্যে আছে বন্ধুত্বপূর্ণআদানপ্রদান,তাদের সাফল্য দেখে আমি অত্যন্ত খুশি। আজ"বিশ্বের জানালা খুলে দাও " শিরোনামে আমার নতুন বই প্রকাশের সংগে সংগে আমার পাঠক বন্ধুরা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছেন ।তাদের চিঠি থেকে তাদের সাফল্য তাদের আনন্দ উপভোগ করি , এটা আমার আনন্দময় জীবনের অধিক থেকে অধিকতর গুরুত্বপূর্নঅংশে পরিনত হয়েছে ।

    তিন, আবেগ

    আবেগ আসে আমার ব্রত থেকে ।আমি সবসময় মনেকরি আমি ভাগ্যবতী , আমার ব্রত হচ্ছে শিক্ষা,এটা ভালবাসা ও সাফল্যবোধেভরপুর কাজ । বহু বছরের শিক্ষিকার জীবনে আমি অনেক শিল্পপতি ও জনশক্তি পরিচালনা বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তির সংগে যোগাযোগ করেছি , তাদের ৮০শতাংশ আমাকে জানান যে, এক নতুন কর্মী নিযোগকরতে চাইলে প্রথমে দেখতে হবে যে , তার আবেগ আছে কিনা , কারন আবেগপূর্ণ লোক অধ্যয়ন করতে চান, তাদের ত্যাগের মনোবল আছে , তাদের সৃজনশীল শক্তি আছে । একজন সফল নারী বেশি চাপের সম্মুখীন হবেন, মর্যাদার নয় ।বিচারপতিদের প্রশিক্ষন দেয়ার কাজ শেষ করার পর আমি "দৈনিক অথনীতি"পত্রিকার উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহন করি এবং পত্রিকাটিকে প্রশিক্ষন দেয়ার কাজ সম্পন্ন করি ।আমি সিসিটিভির কয়েক অনুষ্ঠানকে সাক্ষাত্কার দিয়েছি এবং কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের জন্যে প্রবন্ধ লিখেছি । এই সব কাজের সংগেসংগে প্রকাশনার অনুরোধক্রমে আমি দুটি নতুন বই লেখার চেষ্টাও করছি ।

    আবেগ আর চালিকা শক্তি না থাকলে এত বেশী কাজ করার সামর্থ্য থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয় । পরিবারপরিজনদের ভালবাসা আমাকে উষ্ণতা দিয়েছে , বন্ধুরা নিঃসংগতা দূর করেছেন। আবেগ আমাকে বৈচিময় জীবন তৈরিতে সাহায্য করেছে ।এসবই আমার আনন্দময় জীবনের উত্স ।যদি আমরা বলি সুখী জীবনই সাফল্যের জীবন, তাহলে আমি এখন অনুভব করি আমি অত্যন্ত সুখী। যদি আমরা বলি ব্রতের সাফল্য হলেই কেবল জীবনের সাফল্য হতে পারে ,তাহলে আমি মনে করি আমার সাফল্য সবেমাত্র শুরু হয়েছে।