v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-09-16 14:34:28    
ছাও সিয়ানমিনের মুরগি পালনের অভিজ্ঞতা

cri
    চীনের শানতুং প্রদেশের জাওইউয়ান শহরের সিয়াদিয়ানের সিন গ্রামের কৃষক ছাও সিয়ানমিন গত শতাব্দীর নববইয়ের দশকের শুরু থেকে প্রতিবছরে ৪ থেকে ৫ দফায় ১৫ থেকে ৬০ হাজারেরও বেশি চর্বিযুক্ত মুরগি পালন করেছেন এবং মোট ৩০ থেকে ৭০ হাজার ইউয়ান উপার্জন করেছেন। এজন্যে তিনি রাতারাতি সুপরিচিত ধনী লোক হয়েছেন। চাও ইউয়ান শহর সরকার তাঁকে মুরগি পালনের মাধ্যমে ধনী হওয়ার পথিকৃত সম্মানে ভূষিত করেছে।

    ছাও সিয়ানমিন কিভাবে মুরগি পালনের মাধ্যমে ধনী হয়েছেন? তিনি বহু বছর ধরে মুরগি পালনের অনুশীলনের পর্যালোচনা করে নিম্নোক্ত প্রধান অভিজ্ঞতা সঞ্চার করেছেন:

    ১: তিনি কোনো বাধা-বিপত্তি ও বিপদ ভয় করেন না।

    সিন গ্রামে মুরগি পালনের একটি সমষ্টিগত খামার ছিল। গত কয়েক বছরে ভালভাবে না চালানোর কারণে খামারে অনেক লোকসান হয়েছে এবং বন্ধ রয়েছে। ছাও সিয়ানমিন এই অবস্থা দেখে মনে মনে ভাবলেন, এইভাবে চলতে থাকলে খামারের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আরো বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে। তিনি অনেক চিন্তাভাবনা করেন এবং মুরগি পালনের তথ্য সংগ্রহ করেন। অবশেষে তিনি মন স্থির করেন যে , এই মুরগি পালনের খামার ভাড়া নেবেন। প্রথমে তিনি ৫০টি ঘর আবার মেরামত , পুরোপুরি পরিষ্কার এবং কঠোরভাবে বীজাণুমুক্ত করেন । মহকুমার পশু-চিকিত্সা কেন্দ্রের সাহায্যে তিনি ২০০০ মুরগির ছানা কিনেন । তিনি ও তাঁর স্ত্রী ঐ খামারে বাস করে প্রতিদিন মনোযোগ দিয়ে মুরগির ছানা পালনের কাজ করেন।ফলে প্রথম দফায় তাঁদের পালিত প্রত্যেক মুরগি ৩ ইউয়ানেরও বেশি এবং মোট ৬০০০ ইউয়ানেরও বেশি উপার্জন করেছেন। এজন্যে তাঁদের মুরগি পালনের প্রত্যয়ও আস্থা বেড়েছে। তিনি নির্জন মাঠে প্রচন্ড গরম ও তীব্র শীত অগ্রাহ্য করে একটির পর একটি অসুবিধা কাটিয়ে অনেক দফার মুরগি পালন করেছেন বিদেশে সেগুলো রফতানী করেছেন। সবাই তাঁকে প্রসংশা বলেছেন " ছাও সিয়ান মিনের সাহস আছে, অন্য লোক যা করার সাহস করেন না, তিনি তা করতে পারেন এবং মুরগি পালনের মাধ্যমে প্রচুরভাবে লাভবান হয়েছেন।

    ২: তিনি মুরগি পালনের নিয়ম অনুযায়ী বৈজ্ঞানিকপদ্ধতিতে মুরগি পালন করেন ।

    প্রথমত তিনি আভিয়ানের মত উত্কৃষ্ট মুরগির ছানা কিনে নেন ।মুরগি কেনার সময়ে তিনি মন দিয়ে সবল সবল মুরগি বেছে নেন। দ্বিতীয়ত তিনি মুরগির ছানার রোগ প্রতিরোধের উপর ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখেন। পশু চিকিত্সা বিভাগের সহায়তায় তিনি মুরগির খামার, খাবারপাত্র ইত্যাদি জিনিস যথাসময় পরিষ্কার করেন এবং সময়মত মুরগির ছানার গুলোকে বিভিন্ন রোগ-প্রতিরোধক টিকা দেন। এবং মুরগি ছানাগুলোকে একই সময়ে তিনি কখনো মুরগির ছানাকে পচে যাওয়া খাবার খায়ওয়ায় না। এইভাবে কোনো রোগ ছড়িয়ে পড়ে নি এবং ব্যাপকাকারে রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়ার অবস্থা দেখা দেয় । তৃতীয়ত মুরগি পালনের মানদন্ত অনুযায়ী তিনি বৈজ্ঞানিকভাবে খাবার বন্টন করে মুরগির ছানার বিভিন্ন পর্যায়ে প্রৌটীন, এনার্জী ইত্যাদি ধরনের নিউট্রিশনের চাহিদা নিশ্চিত করেছেন। ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে মুরগির ওজন ২.৫ থেকে ৩ কেজি থাকে।চতুর্থত তিনি " সব ক্রয় এবং সব বিক্রির" উপায় ব্যবহার করেছেন। সারা খামারে তিনি একইদিন মুরগির ছানা কিনেন এবং সব মুরগি বিক্রী করেন।মুরগি বিক্রীর পর তিনি মুরগি পালনের সমস্ত ঘর পুরোপুরি পরিষ্কার করেন যাতে মুরগির ছানা আবার কেনার প্রস্তুতি নেওয়া যায়। এইভাবে মুরগির রোগ-প্রতিরোধের পক্ষে সহায়ক হয় এবং মুরগি পালনের জন্যে সুবিধা আছে ,টাকাও বাঁচানো যায় এবং অর্থনৈতিক ফলপ্রমূতা লক্ষ্য করার মত ।

    ৩: তিনি মুরগির খামারে পরিচালনার কাজ

    মুরগি পালন করার প্রত্যেক দফার পর ছাও সিয়ানমিন সব খরচ ভালো করে দেখেন এবং অর্থনৈতিক ফলপ্রমূতা বাড়ানোর জন্যে মুরগি পালনের নানা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন যাতে মুরগির পালনের খরচ কমিয়ে আনা যায় এবং অপচয়ের প্রতিরোধ করা যায়। তিনি আবহাওয়া ও বাজারের তথ্য অনুযায়ী মুরগির বেশি বা কম মুরগি পালনের সিদ্ধান্ত নেন । বসন্তকালের গোড়ার দিকে তাপমাত্রা নিম্ন বলে পরিবেশ জীবাণুর জন্মের পক্ষে প্রতিকূল। তাই তিনি বেশি সংখ্যক মুরগির পালন করেন । গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা উচ্চ, বৃষ্টি বেশি বলে মুরগি পালনের পক্ষে প্রতিকূল। সুতরাং তিনি পালিত মুরগির সংখ্যা কমিয়ে আনেন । এইভাবে যেমন মুরগি পালনের সুনাফা বেড়েছে, তেমনি মুরগি বিক্রীর অসুবিধা এড়ানো হয়েছে।

    বর্তমানে ছাও সিয়ানমিন মুরগি পালনের কাজ আরো প্রসারণ করেছেন, তিনি পরিকল্পনা করছেন, তিনি একবছরে ১ লক্ষ মুরগি পালন করবেন এবং এক লক্ষ ইউয়ান উপার্জন করবেন। তিনি মুরগি পালনের অভিজ্ঞতা গ্রামবাসীদের শেখাবেন যাতে তারাও তাঁর সঙ্গে একত্রে স্বচ্ছল হবেন।