v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-09-12 20:37:55    
ডিজিটাল ওলিম্পিকগেমস, ডিজিটাল পেইচিং

cri
    বাস স্টেশনে আপনাকে আর মাথা উঁচিয়ে বাস আসছে কিনা তা দেখতে হবে না। কারণ ডিজিটাল বোর্ডে তাকিয়ে আপনি এই তথ্য পেয়ে যাবেন "পরের নং ১১ বাস আপনার স্টেশন ৩০০ মিটার দূরে, এক মিনিটের মধ্যে পৌঁছবে"আগাম তথ্য পেয়ে যাবেন। বাসে বসে আপনি দেখতে পাবেন , বাসের সচল টেলিভিশনে চমত্কার ক্রীড়া প্রতিযোগিতা প্রচার হচ্ছে। ওলিম্পিক গেমসের টিকিট যদি কিনতে চান, আপনাকে আর লাইনে অপেক্ষা করতে হবে না, মোবাইলের মাধ্যমে আপনি টিকিট কিনতে পারবেন। বাড়ি ফিরে চাবি দিয়ে দরজা খুলতে হবে না, আঙ্গুল দিয়ে বিশেষ মেশিনে স্পর্শ করলে দরজা আপনি খুলে যাবে। ঘরে ঢুকলে পর্দা নিজ থেকে বন্ধ হবে আর এ.সি চলতে শুরু করবে।…এসব কিন্তু সাইন্স ফিকশনে ভবিষ্যতের লোকদের জীবনযাবন নয়, সম্প্রতি পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত ৮ম চীন হাই-টেক মেলার "ডিজিটাল ওলিম্পিকের প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি" হলে প্রদর্শিত সবচেয়ে নতুন গবেষণীর ফলাফল। অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে,তাই না?

    "ডিজিটাল ওলিম্পিকের প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি" হল হলো ৮ম চীন হাই-টেক মেলার একটি প্রধান প্রদর্শনী হল। এখানে প্রধানতঃ ডিজিটাল ওলিম্পিক সম্পর্কিত সবচেয়ে নতুন    বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রদর্শন হয়। যা হলো এবারের হাই-টেক মেলার একটি সবচেয়ে আকর্ষনীয় হল। ডিজিটল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের প্রধান অংশ, যা দেশের উন্নয়নের ভিত্তি। বিশ্বের ডিজিটাল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দ্রুত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে , ডিজিটাল প্রযুক্তি, নেটওয়ার্কিং ও মেধার বিকাশ এখন পৃথিবীর একটি প্রধান প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারের হাই-টেক মেলায় লোকেরা স্পষ্টভাবে বিশ্ব-ব্যাপী যোগাযোগ প্রযুক্তি ও ডিজিটাল দ্রব্য ও কম্পিউটারের সঙ্গে মিলিয়ে যৌথ উন্নয়নের প্রবণতা দেখতে পেয়েছেন।

    হাংথিয়ান জিথুং বিজ্ঞান প্রযুক্তি কোম্পানি তাদের নিজস্ব গবেষণায় উত্পাদিত "বুদ্ধিমান বাস বোর্ড" প্রদর্শনী করেছে। এই কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তি আমাদের বেতারের সংবাদদাতাকে বলেছেন:

    "আমাদের বুদ্ধিমান বাস বোর্ড"-এর প্রথম কাজ হলো বাস আসার সময় জানিয়ে দেওয়া। বিশেষ হিসাব ব্যবস্থার মাধ্যমে বাস পৌঁছার সময় স্টেশনের ডিজিটাল বোর্ডে দেখানো হয়। তার দ্বিতীয় কাজ হলো দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষের জন্য বাসে পৌছার নির্দেশিকা প্রদান করা। যখন বাস আসবে, দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষের হাতের রিমোটে তাকে তাগিদ দেবে। তাছাড়া, আমাদের বাস বোর্ডে স্কেন স্থাপিত হবে। তা দিয়ে বিভিন্ন স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ আর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শ করা হবে।"

    তিনি আরো বলেছেন, এই বুদ্ধিমান বাস বোর্ড গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে নং ৪২০ বাস লাইনে ব্যবহৃত হচ্ছে, এতে মানুষের প্রতিক্রিয়া খুব ভালো।

    চীনা মোবাইল কোম্পানি তাদের ২০০৮ ওলিম্পিক গেমসের জন্য উদ্ধাবিত পাঁচটি প্রধান পরিসেবা ক্ষেত্র প্রদর্শন করেছে। ম্যাদাম জাং সংবাদদাতাকে বলেছেন:

    "ওলিম্পিক গেমস আয়োজনকালে আমাদের ক্রীড়া অনুরাগীরা যে কোনো সময় যে কোনো স্থান থেকে তাদের মোবাইলের মাধ্যমে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সর্বশেষ খবর জানতে পারবে এবং মোবাইলের মাধ্যমে প্রতিযোগিতার টিকিটও ক্রয় করতে পারবে।" এ সম্পর্কে ম্যাদাম জাং ব্যাখ্যা করে বলেছেন, "মোবাইলের মাধ্যমে টিকিট কেনার পর, টিকিট এজেন্ট একটি দুই-ডাইম্যাশন ছবি মোবাইলে পাঠিয়ে দেবে। এই ছবি নিয়ে ক্রীড়া জগতের বিশেষ মেশনে একটু স্কেন করে, আপনি টিকিটটা পেয়ে যাবেন।"

    তাছাড়া, আপনি মোবাইল দিয়ে ইন্টার্নেটে ঢুকতে পারেন, তাহলে আপনি প্রত্যাশিত তথ্য পেয়ে যাবেন। গোষ্ঠীর মধ্যে বহু-পাক্ষিক আলোচনার বিশেষ নেটওয়ার্ক পি.টি.টি। ওলিম্পিক আয়োজনকালে ব্যবহারকারীদের জন্য ক্রীড়াজগতের তথ্য, ভ্রমণ তথ্য, ম্যাপ দেখা ইত্যাদি পরিসেবা যোগানো হবে। তাদের বুদ্ধিমান পরিবহন নেটওয়ার্ক বিভিন্ন গাড়ীর উপর তত্ত্বাবধান করতে পারবে, যাতে যে কোনো সময়, যে কোনো জায়গায় তাদের চালু অবস্থায় পাওয়া যায়।

    জাপানের হিটাছি গোষ্ঠী "আই.টি আবাসিক অঞ্চল" দর্শকদের বিজ্ঞান ভিত্তিক নতুন ধারণার আবাসিক অঞ্চল প্রদর্শন করেছে। মালিক হলের অঙ্গুলি শিরা আইডেন্টিফাই মেশিনে আই.ডি নম্বর ইনপুট করে। অঙ্গুল মেশিনে রাখলে মেশিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চেক করে সংশ্লিষ্ট তথ্য পাবে। তারপর তা এলিভেটর ডেকে মালিককে তার তলায় দেখা যাবে। ঘরে একটি রঙিন স্ক্রীন থেকে অতিথিদের তথ্য ও ছবি দেখা যাবে। মালিকা কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের তথ্য পাবে এবং সাধারণ উপযোগিতামূলক প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে পারবে। যেমন সম্মেলন রুম, প্রক্ষেপ ঘর ইত্যাদি। যখন আপনি ঘর থেকে বের হবেন, যদি দরজা বন্ধ কারলেন কিনা আপনি নিশ্চিত নন, তাহলে আপনি মোবাইলের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করতে পারবেন। যদি দরজা বন্ধ করেননি, তাহলে মোবাইল দিয়ে অবিলম্বে সেটা বন্ধ করতে পারবেন। যদি ঘরে আগুন লেগে যায়, গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে বা কেউ বাড়িতে ঢুকে পড়েছে, তাহলে ঘরের নিয়ন্ত্র কেন্দ্র আপনার মোবাইলে বিপদ সঙ্কেত সংবাদ পাঠাবে। মোবাইলের মাধ্যমে আপনি এ.সি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এর মাধ্যমে আপানি বাড়িতে ফেরার আগে একটি সুমধুর পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারবেন।

    একজন ছাত্র পেইচিংয়ের তাশিং অঞ্চলে পড়াশোনা করছে। সে বলেছেন, আজ সে স্কুলের নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে, সকল সহপাঠীদের সঙ্গে নতুন বৈজ্ঞানিক ফলাফল দেখতে । সে বলেছেন, স্যামসং তার সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।(রিকর্ডিং ৩) " স্যামসংয়ের বৃহত্তম ১০২ ইঞ্জ প্লেসমা টেলিভিশন ; এল.জি-য়ের একটি কম্পিউটার বন্ধ অবস্থায় গান শুনতে পাওয়া যায়।" সে আরো বলেছে, এবারকার প্রদর্শনীর হাই-টেক দ্রব্য নানা রকমের এবং দেখতে খুব সুন্দর । সে এবারকার প্রদর্শনীর অভিজ্ঞতা ভিডিওতে রেকর্ড করবে এবং স্কুলে নিয়ে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের দেখাবে।

    একজন মালয়েশিয়ার ব্যবসায়ী এই মেলা দেখতে মালয়েশিয়া থেকে এসেছেন। তিনি তিন বছর আগে আয়োজিত পেইচিং হাই-টেক মেলাও দেখেছেন। তিন বছর পর আবার এই মেলা দেখতে এসে তিনি বলেছেন: "চীনের প্রযুক্তির উন্নয়ন অবিশ্বাস্য দ্রুত। এবারের প্রদর্শনী গত তিন বছর আগের চেয়ে অনেক বড় হয়েছে। প্রদর্শনীয় পণ্যদ্রব্যও আগের চেয়ে অনেক উন্নত।"

    পাঁচ-দিন-ব্যাপী হাই-টেক মেলায় ২.২ লক্ষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বা অঞ্চল এবং চীনের হাই-টেক ক্ষেত্রের ব্যক্তিরা মিলে প্রদর্শন ও আলোচনা করেছে। এই হাই-টেক মেলায় একটি বহু-পাক্ষিক ডিজিটাল প্রযুক্তির সবচেয়ে নতুন উদ্ভাবন এবং জীবনে ব্যাপক ব্যবহৃত সাগ্রীর সম্ভাবনা দেখানো হয়েছে। আমাদের চোখের সামনে বুদ্ধিমান ও ডিজিটাল হাই-টেকের উজ্জ্বল জীবন প্রদর্শন করেছে। উল্লেখ্য, প্রদর্শনীয় বেশ কিছু দ্রব্য চীনের নিজস্ব গবেষণার ফলাফল। এতে চীনের হাই-টেক ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য প্রমানিত হয়েছে। ২০০৮ সালে ওলিম্পিক গেমসে বিশ্বের কাছে চীনের সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন দেখানোর জন্য চীন প্রস্তুতি নিয়েছে।