v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-09-09 18:19:27    
পাঁচটা স্বর্ণ ফুল

cri
    সেন ইয়াং এয়ার ব্লোয়ার লিমিডেট কোম্পানিতে পাঁচজন নারী নকশাকার আছেন ,তারা কোম্পানিটির ৪০ হাজার এয়ার-কম্প্রেসার-সেট নকশা করার কর্তব্য পালন করেন । বয়সের দিক থেকে পাঁচজনের মধ্যে জ্যেষ্ঠ জনের বয়স ৪২ বছর আর কনিষ্ঠ জনের বয়স ৩২ বছর । কাজের সময় যে কাজ ভারী ,কঠিন ও নোংরা সেকাজ তারা নিজে বহন করার চেষ্টা করেন আর যে কাজ অপেক্ষাকৃত সহজ ও হাল্কা সে কাজ অন্যদের জন্যে রেখে দেন । বাড়িতে মেয়ে, স্ত্রী ও মা হিসেবে তারা চমত্কারভাবে নিজেদের কর্তব্য পালন করেন । তারা আদর্শ শ্রমিক আর শ্রেষ্ঠ গৃহিনী । সবাই পাঁচজনকে পাঁচটা স্বর্ণ ফুল বলে আখ্যায়িত করেন ।

    পাঁচজনের এক অভিন্ন বৈশিষ্ট্য হল ,তারা সবাই স্কুল থেকে কারখানায় এসেছেন । বহু বছর ধরে তারা নিজেদের কাজ পছন্দ করেন এবং কারখানাকে ভালবাসেন , তারা নিজের গোটা যৌবন রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের সংস্কার ও উন্নয়নের জন্যে উত্সর্গকরেছেন । পাঁচটা স্বর্ণ ফুলের মধ্যে অন্যতম সিনিয়ার ইন্জিনিয়ার ম্যাডাম ওয়াং ইংচিয়ে বলেছেন ,তার কাছে সময় অত্যন্ত মূল্যবান , এয়ার-কম্প্রেসারের কলাকৌশলের অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক বড় কোম্পানির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তাকে অনবরতভাবে নতুন পন্য উত্পাদনের প্রকৌশল ও ব্যবস্থাপনার প্রকৌশল শিখতে হবে , যখন মেশিনগুলো উত্পাদন শুরু করে আর যখন গ্রাহকরা কৃতজ্ঞতার বা প্রত্যাশার দৃষ্টিতে তার দিকে তাকান তখন তিনি বিশেষভাবে মুগ্ধ হন ।

    পাঁচটা স্বর্ণ ফুলের অন্যতম ক্য লিলিংয়ের এক সুখী পরিবার আছে । তার আছে চার বছর বয়সী ছেলে, আছে তাকে ভালবাসার স্বামী ।নিজের স্ত্রী সম্পর্কে স্বামী লি রোংপেনের কথার শেষ নেই ।লি রোংপেন স্ত্রী ক্য লিলিংয়ের সঙ্গে একই সময়ে একই কোম্পানিতে যোগ দিয়েছেন ।তিনি বলেন,স্ত্রী ক্য লিলিং অধ্যয়ন করতে পছন্দ করেন,সন্তান হওয়ার পর যতই ব্যস্ত হোক না কেন , তার বই পড়ার আগ্রহ কমে যায়নি । তার সমর্থনে আমি স্নাতকত্তোর ছাত্রজীবন সম্পন্ন করেছি ।তিনি আমার স্ত্রী এবং আমার শিক্ষিকা । লি রোংপেন বলেন , স্ত্রীর উত্সাহ ও স্বীকৃতি আমার অগ্রগতির চালিকা শক্তি ।

    কাজের ব্যস্ততার কারণে তিনি ছেলেকে গ্রামে বাবামার কাছে পাঠান ।ছেলের বয়স এখন সাড়ে চার বছর । বাবামা ও শ্বশুড়-শ্বাশুড়িও বুড়ো হয়েছেন ।তাদের কাছে তিনি ঋণী বলে তিনি মনে করেন।তাই ছেলে সুষ্ঠুভাবে বড় হবে আর বাবামা ও শ্বশুড়শ্বাশুড়ি সুখি জীবনযাপন করবেন বলে ক্য লিলিং আশা করেন ।

    পাঁচ স্বর্ণফুলের অন্যতম ওয়াং ইংচিয়ে চীনের বিখ্যাত জাতীয় আদর্শ শ্রমিক ওয়াং ছুনসিয়াংয়ের কন্যা, তিনি কোম্পানিটির সিনিয়ার ইন্জিনিয়ার ।এখন তিনি বাবা ওয়াং ছুনসিয়াংয়ের গৌরব ও অহংকার ।নিজের মেয়ে সম্পর্কে ওয়াং ছুনসিয়াং বলেছেন ,অতীতে আমি দ্রুতভাবে কৌশল নিয়ে কাজ করতাম ,অন্যান্যদের চেয়ে আমি বেশী কাজ করতাম এবং ভাল করতাম বলে আমি জাতীয় আদর্শ শ্রমিক হই ।সে সময় বাজারের কথা আমাদের চিন্তা করার দরকার নেই,আমাদের কর্তব্য হল উত্পাদন করা ।কিন্তু এখন বাজার অর্থনীতির যুগ,কাজের সময় মেয়েকে সর্বপ্রথমে বাজারের কথা ভাবতে হবে । ওয়াং ইংচিয়ে বলেন , বাজারের উন্নয়ন অনুধাবন করার জন্যে তাকে প্রথমে তথ্য বিনিময়ের ব্যবস্থানিতে হবে, উদ্যোগনিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।বৈঠকের সময় সক্রিয়ভাবে কোম্পানির শক্তি প্রচার করতে হবে এবং গ্রাহকদের সত্যিকারের মতামত শুনতে হবে । যাতে গ্রাহকদের চাহিদা মেটানোর জন্যে ব্যবস্থা নেয়া হয় ।ওয়াং ইংচিয়ে বলেছেন ,যখন তিনি অসুবিধার সম্মুখীন, তখন তার বাবা তাকে প্রেরণা দেন । ওয়াং ইংচিয়ে ও তার বাবার কাহিনীতে তাদের এবং লাখোকোটি লোকের উত্তর-পূর্বচীনের পুরানো শিল্প-ঘাঁটি পুনরুদ্ধার করার আশা আর দৃঢসংকল্প অন্তর্ভূক্ত ।

    পাঁচটা স্বর্ণফুলের অন্যতম ওয়াং কুয়াংলানও কোম্পানির সিনিয়ার ইন্জিনিয়ার ।তার এক সুখী পরিবার আছে । বাড়িতে স্বামী ,মেয়ে ও শ্বশুড় শ্বাশুড়ি । তিনি ও স্বামী দুজন একই কোম্পানিতে কাজ করেন । কাজের জন্যে স্বামী-স্ত্রী দুজন প্রায়ইবাইরে যান ।তাই বাড়ির অনেক কাজ এবং মেয়েকে দেখাশুনার কাজ শ্বশুড় ও শ্বাশুড়ি করেন । বৃদ্ধবৃদ্ধারা বলেন , তারা কাজে ব্যস্ত, তাই আমরা সাধ্যমতো তাদের সাহায্য ও সমর্থন করি । ওয়াং কুয়াংলান বলেছেন, আমি অত্যন্ত সুখী ,শ্বশুড় শ্বশুড়ি আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন ,আমার একমাত্র কন্যা তাদের লালনপালানে বড় হয়েছে ।যখন আমাদের দরকার হয় তখন তারা সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন । আমাদের সাফল্যের পেছনে আমার শ্বশুড় ওশ্বশুড়ির অবদান আছে ।আমি তাদের প্রতিঅত্যন্ত কৃতজ্ঞ।

    পাঁচটা স্বর্ণফুলের অন্যতম চাং ইয়ুচু ১৯৮৩ সালে প্রকৌশলী স্কুল থেকে স্নাতক হয়ে সেন ইয়াং এয়ার ব্লোয়ার লিমিডেট কোম্পানিতে ভর্তি হন ।অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কোম্পানিটিতে যুব- মুখ্য প্রকৌশলী হয়েছেন । নিজের প্রচেষ্টার মাধ্যমে এবং সকলের কাছে শিক্ষা গ্রহন করায় তার তাত্ত্বিক ও কাজের মানের অনেক উন্নতি হয়েছে ।এ পর্যন্ত তিনি ৬০টিরও বেশী এয়ার কম্প্রেসার ও এয়ার ব্লোয়ারের নক্সা ও তৈরীর কাজে অংশ নিয়েছেন । এগুলো ধাতু-ঢালাই, তেল ও রসায়ন,পরিবেশ রক্ষা প্রভৃতি প্রধান জাতীয় অর্থনীতি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে । এয়ার-ব্লোয়ারগুলো অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা পালন করছে দেখে মাডাম চাং ইয়ুচু অত্যন্ত সন্তুষ্ট।তিনি বলেছেন , নক্সাকারের কাজ সুখ-দুঃখে ভরপুর , আমি অত্যন্ত পছন্দ করি ।

    নারী হিসেবে পাঁচটা স্বর্ণ ফুল কাজের প্রয়াসের সঙ্গেসঙ্গে পরিবারপরিজনদের দেখাশোনা আর সন্তানদের শিক্ষা দানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন । তারা কাজ ভালবাসেন,সন্তানকে,স্বামীকে আর পরিবারকে ভালবাসেন ।ভালবাসা তাদেরকে আরও সুন্দর করে তুলেছে ।তারা আধুনিক নারীদের জন্যে আদর্শ স্থাপন করেছেন ।তারা সাধারণ নারী,তারা বুদ্ধিমতি,তারা আন্তরিক ও সত মানুষ । বুদ্ধি ও আন্তরিকতার কারণে তারা সুন্দর ।