v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-09-02 11:16:28    
মা লিয়ানখো আর তাঁর সোনার খনি

cri
    এই বছরের মার্চ মাসে চীনের পেইচিংয়ের হুয়াইরৌ জেলার লিওলিমিয়াও মহকুমার তেথিয়ানকৌ গ্রামের কমিউনিস্ট পার্টির শাখার নির্বাচনে ৬৪ বছর বয়সী মা লিয়ানখো আবার পূর্ণভোটে সম্পাদকপদে নির্বাচিত হয়েছেন। গ্রামের পার্টির সদস্য আর গ্রামবাসীরা বলেছেন, যদি তাঁর নেতৃত্বে সকলে নির্ভীকভাবে যদি কাজ না করতো, তাহলে কিজানি তেথিয়ানকৌ আরও কতদিন ধরে এই দরিদ্র জায়গায় দিন কাটাতো।

    গত বছর এই গ্রামের সমষ্টিগত আয় ৩৬ লাখ ইউয়ান এবং মাথাপিছু আয় ৭৩০০ ইউয়ানে দাঁড়িয়েছে। সমষ্টিগত সঞ্চয় ১ কোটি ইউয়ানেরও বেশি। এভাবে তেথিয়ানকৌ গ্রাম হুয়াইরৌ পাহাড়ী এলাকায় সবচেয়ে ধনী গ্রামে পরিণত হয়েছে।

    মা লিয়ানখো ১৯৮৯ সালে প্রথমবারের মত এ গ্রামের পার্টিশাখার সম্পাদক নির্বাচিত হন। তখন এ গ্রাম গরীব পাহাড়ী গ্রাম বলে পরিচিত ছিল। গ্রামের সমষ্টিগত সঞ্চয় মাত্র ৩২০০ ইউয়ান ছিলো এবং মাথাপিছু আয় ছিল শুধু ৫০০ ইউয়ান। মা লিয়ানখো শপথ করে বলেছেন যে, গ্রামের দরিদ্র অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। তিনি মহকুমার শিল্প কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার-এর ভাল চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামের কমিনিস্ট পার্টির শাখার সম্পাদক নিযুক্ত হয়েছেন এবং গ্রামবাসীদের নেতৃত্ব দিয়ে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ-ঘোষণার পথযাত্রা শুরু করেন।

    এই গ্রামে পাহাড় বেশি , ভূমি কম এবং যেখানে সেখানে পাথর রয়েছে। তাহলে ধনী হওয়ার পথ কোথায়? নিযুক্ত হওয়ার পর তিনি এই প্রশ্ন নিয়ে গভীর চিন্তামগ্ন হয়েছিলেন।

    তিনি ভাবতে লাগলেন, গ্রামের কাছাকাছি ছিফেংছায় সোনার খনি আছে, আমাদের এই পাহাড়েও সোনা আছে কি না? তিনি জানেন যে সোনা, রুপা, তামা, লোহা ইত্যাদি ধাতু খনি সহজন্ম হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি পাহাড়ে গিয়ে রত্ন খুঁজে বের করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ব্যাগ কাঁধে নিয়ে পূর্ব ও পশ্চিম পাহাড়ে উঠেন। তিনি খুব ভোরে বেরিয়ে যান এবং রাতে ফিরে আসেন, ৩০টিরও বেশি গিরিখাতে তাঁর পায়ের দাগ পড়েছিল।একমাস পর তিনি অনুসন্ধানের খরচ হিসেবে নিজের ১৮ হাজার ইউয়ান দিয়ে রাষ্ট্রের ১০১ নম্বর ভূতাত্ত্বিক দলের কাছে আবেদন করেন। সোনার খনির মজুদ জরিপকারী ভূতাত্তিক দল ৩০টিরও বেশি সোনার খনির সন্ধান পেয়েছে। ১৯৯০ সালের আগস্ট মাসে তিনি বহু উপায়ে টাকা যোগাড় করে ৩টি পাথর-খনন যন্ত্র কিনে সোনার খনি আনুষ্ঠানিকভাবে খননের কাজ শুরু করেন। দুই মাস পর তেথিয়ানকৌ ১লক্ষ ৭০ হাজার ইউয়ান উপার্জন করেছে।

    দশবারো বছরের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তেথিয়ানকৌ একটি সম্পদশালী " সোনার গ্রামে" রুপান্তরিত হয়েছে।

    গ্রাম ১৯ লাখ ইউয়ান পুঁজি ব্যয় করে গ্রামবাসীদের কল্যানে অনেক বাস্তব কাজ করেছেন। গ্রামে প্রবেশের সুবিধার জন্যে সেতু নির্মিত হয়েছে, ৪২টি গ্রামবাসীদের জন্যে নতুন ঘর নির্মিত হয়েছে। এবং নিম্ন-চাপ বিদ্যুত্ লাইন নতুন করে বসানো হয়েছে। তাঁর লক্ষণীয় সাফল্যের জন্য তিনি বহুবার শহর ও জেলার শ্রেষ্ঠ পার্টির সদস্য ও আদর্শের সম্মান লাভ করেছেন। তবে তিনি অহংকারী না হয়ে , আবার ভাবতে লাগলেন, সোনার খনি সীমিত আছে, কোনো না কোনো দিন তা শেষ হয়ে যাবে। পাহাড়ের নিচে শিল্প উন্নয়নের উপায় খুঁজে বের করতে হবে, যাতে " সোনা দিয়ে আবার সোনার জন্ম দিতে হবে " । গ্রামের পার্টির শাখা পরামর্শ করে পাহাড়ের নিচে শিল্পাস্থন স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

    গত বছরে, তেথিয়ানকৌ গ্রাম ১২ লাখ ইউয়ান পুঁজি দিয়ে ইয়ানছি শিল্প উন্নয়ন এলাকায় ৫ একর জমি নিয়ে নিয়েছে, ৬০০০ বর্গমিটার নির্দিষ্ট মানসম্পন্ন কারখানা নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এবং বর্তমানে ২০০০ বর্গমিটার কাজ শেষ করেছে। সব কাজ শেষ হলে তেথিয়ানকৌ গ্রাম আনুমানিক ১০ লাখ ইউয়ান মূল্যের ভাড়া ফিরে পারে। এই দুটি শিল্পাস্থন স্থাপনের জন্য মা লিয়ানখো পাহাড়ে ও পাহাড়ের নীচে খুবই ব্যস্ত ছিলেন। তিনি বলেছেন, একজন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হিসেবে গ্রামবাসীদের নিয়ে একত্রে ধনশালী হবার পথে চলা তো আমার দায়িত্ব। আমি আমার উপর গ্রামবাসীদের এই আস্থা বৃথা হতে দেবো না ।