১৯ আগস্ট চীনের রাজধানী পেইচিংয়ের রাষ্ট্রীয় অতিথি হোটেল—তিয়াও ইয়ুথাইতে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদাজিয়া চীন- বাংলাদেশ মৈত্রী স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন। সাক্ষাত্কালেখালেদাজিয়া ছেলেমেয়েদের সঙ্গে উপহার বিনিময় করেন। স্কুলের সুন্দর ছবি উপহারপেয়ে খালেদাজিয়া আনন্দের সঙ্গে বলেছেন,খুব সুন্দর। তিনি ছাত্রছাত্রীদেরকে বলেছেন , তোমাদের সঙ্গে দেখা করতে পেলে আমি খুশি হয়েছি । তোমাদেরকে ধন্যবাদ ।
"চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী স্কুল " নামের প্রাথমিক স্কুলটি পেইচিংয়ে অবস্থিত । স্কুলটি ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় । দশ-বারো বছরের মধ্যে স্কুল থেকে দুটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছে ,তারা বাংলাদেশে বাংলাদেশের নাচগান সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছে ,তাদের নাচগান বাংলাদেশী জনগন বিশেষ করে বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের সমাদর পেয়েছে , সবাই তাদেরকে মৈত্রীর দূত বলে ডাকে । বাংলাদেশের শীর্ষনেতারা চীন আসলে স্কুলটি পরিদর্শন করেন বা ছেলেমেয়েদের সাথে দেখা করেন । এবার মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদাজিয়ার সরকারী সফর সংক্ষিপ্ত হলেও তিনি ব্যস্ততার মধ্যে সময় করে চীনের রাষ্ট্রীয় অতিথি হোটেল তিয়াও ইয়ুথাইতে স্কুলটির ছাত্রছাত্রীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেছেন । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন কথাটা শুনে স্কুলটতে আনন্দের জোযার বয়ে যায় । স্কুলটির উপপরিচালক মাদাম স্যু সাক্ষাতের আগে সংবাদদাতাকে বলেছেন,মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদাজীয়া আমাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন কথাটা জেনে আমরা সবাই অত্যন্ত আনন্দিত হই,আমরা মনে করি এটা একটা সৌভাগ্যের ব্যাপার ও সুবর্ণ সুযোগ । এই সুযোগে আমরা আমাদের মনের আশা-আকাঙক্ষা ব্যক্ত করব যে ,আমরা দুদেশের ছাত্রছাত্রীদের বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ করতে চাই । আমরা চীন ও বাংলাদেশের মধ্যেকার মৈত্রী আরও সুদৃঢ করার জন্যে সেতুর ভূমিকা পালন করব ।
মাদাম স্যুয়ের কথা শুনে ছাত্রছাত্রীরা একের পর এক সংবাদদাতাকে নিজেদের মনের কথা ব্যক্ত করেছে । লিয়াং ইয়ুশি নামে এক ছোটো মেয়ে বলেছে,আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবার সুযোগ পেয়ে আমি খুব খুশি ,আমি আশা করি এমন সুযোগ আমি পাব যে, বাংলাদেশে গিয়ে সেখানকার মানুষ,তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাতাদের অভ্যাস দেখব এবং জানব ।
আমার নাম চাং বোইয়া,আমি আশা করি বাংলাদেশী ছেলেমেয়দের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করব,তাদের বন্ধু হব । আমি আশা করি পরে সুযোগ পেলে বাংলাদেশ সফর করব,নানা দিক থেকে বাংলাদেশকে জানার চেষ্টা করব ।
আমার নাম চাও সিয়াওসি,আমি আশা করি,বাংলাদেশী ছেলেমেয়েরা চীন সফরে আসবে,আমাদের স্কুলে আসবে এবং আমরা ভাল বন্ধু হব ।
ছু হাওক্য নামের একটি ছেলে বলেছে , আমি বাংলাদেশের ভাষা শিখতে আগ্রহী । নিকট প্রতিবেশী দেশ হিসেবে দুদেশের জনগনের বন্ধুত্ব দিনদিন সুন্দর হবে ,আমাদের মধ্যেকার মৈত্রীর বন্ধনঅধিক থেকে অধিক সুদৃঢ হবে বলে আমি আশা করি । আমি বাংলাদেশে কখনো যাইনি বটে,কিন্তু আমি মনে করি বাংলাদেশ নিশ্চয় একটি অতি সুন্দর দেশ ,সেখানকার মানুষ অবশ্যই বন্ধুবত্সল,তাই আমি সেদেশ দেখতে যেতে চাই ।
আমার নাম লি সিয়াং, আমি জানতে চাই বাংলাদেশী ছেলেমেয়েরা কিভাবে লেখাপড়া করে ,তাদের গঠন তাদের চেহারা কিরকম জানতে অত্যন্ত আগ্রহী আমি । যদি আমি তাদের দেশে যেতে পারি বা তারা আমাদের এখানে আসার সুযোগ পায় তাহলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ।আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত পাব বলে আমি খুশি ,আশা করি তিনি মাঝেমাঝে আমাদের দেশে এলে আমাদের স্কুলে সফর করবেন ।
আমার নাম ছিয়াও সুয়াং,বাংলাদেশী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে পারলে আমি তাদেরকে বলব,আমি তাদের বন্ধু হতে চাই ,চীন-বাংলাদেশ দুটি বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশ দেশ হবে এবং আমাদের বন্ধুত্ব দিনদিন জোরদার হবে বলে আমি আশা করি ।
আমার নাম ছি খুননি,আমি বাংলাদেশী ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, তাদের অভ্যাস ও রীতিনীতি জানার জন্যে বাংলাদেশে একবার যাবই ।
আমার নাম ফোং শাওতুঙ,আমার বাংলাদেশীদের পোশাক-আশাক ,রীতিনীতি জানার ইচ্ছা আছে । আমি বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদেরকে চীনা প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের দৈনিক জীবন ও পড়াশুনা সম্পর্কেজানাব ।
আমার নাম লিউ ফামিং ,বাংলাদেশী ছেলেমেয়েরা ভালভাবে পড়াশুনা করবে , দিনদিন উন্নতি লাভ করবে এবং চীনে আমাদের সঙ্গে লেখাপড়া ও দিন কাটাতে আসবে বলে আমি আশা করি ।
অবশেষে তারা একটি গান শোনায়। গানটির কয়েকটি কথা এমনি ,উষার আলোতে আমরা ব্যাগ বহন করে আমাদের সুন্দর স্কুলে প্রবেশ করি । সুর্যালোকেস্কুলের উদ্যান ভরপুর,আমার গায়ে আমার হৃদয়ে রৌদ্র ছড়িয়ে পড়ে । ওঃ আমার স্কুল আমাকে জ্ঞানের ভান্ডারে আমাকে জীবনযাপনের প্রশস্ত পথে নিয়ে যাও ।
সাক্ষাত শেষে সংবাদদাতার অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী খালেদাজিয়া এবার চীন সফর সম্পর্কে বলেছেন , পেইচিংয়ে এসে আমার খুব ভাল লাগছে । বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং উচ্চ পর্যায়ের সফর প্রতিনিয়ত হচ্ছে । আপনাদের প্রধানমন্ত্রী কিছু দিন আগে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন এবং উনার দাওয়াতে আমি পেইচিংয়ে এসেছি । এ সফরের মধ্য দিয়ে আমাদের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ হয়েছে এবং বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে কুটনৈতিক সম্পর্কের ৩০ বছর উদযাপন আমরা করছি ।অত্যন্ত যাকজমক বেশী । চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যত সম্পর্কে তিনি বলেছেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল এবং গভীর ।
|