১৯৭৫ সালে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর চীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নির্মানকাজে যথাসাধ্য সাহায্য দিয়েছে। চীন এখনো একটি উন্নয়নমূখী দেশ, বাংলাদেশকে দেয়া সাহায্যের পরিমাণ পাশ্চাত্য শিল্পোন্নত দেশের তুলনায় বেশি নয়, কিন্তু চীনের সাহায্য আন্তরিক এবং নিঃশর্ত, চীনের সাহায্য বাংলাদেশের সরকার এবং জনগণের ব্যাপক সমাদর এবং উচ্চ মানের মূল্যায়ন পেয়েছে।
চীন প্রধানতঃ প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সাহায্য করে। চীন যথাযথভাবে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধকে সম্মান করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার ভিত্তিতে প্রকল্প নির্ধারণ করে। দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর বাংলাদেশে চীন নানা সাহায্য দিয়েছে। এই প্রকল্পগুলো বাংলাদেশের বহু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দারিদ্র বিমোচন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।
চীন সরকার বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে বাংলাদেশে পাঁচটি চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু নির্মান করেছে, সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে বুড়িগঙ্গা সেতু, শম্ভুগঞ্জসেতু, মহানন্দা সেতু, করতোয়া সেতু এবং কাবুখান সেতু। এখন ষষ্ঠ সেতুর নির্মানকাজও শুরু হয়েছে। চীনের সাহায্যে নির্মিত সেতুগুলো বাংলাদেশের যাতায়াত ব্যবস্থা এবং জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের জনসাধারণ চীনের সাহায্যে নির্মিত সেতুকে "বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু" বলে ডাকেন।
চীনের সাহায্যে নির্মিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র ২০০২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। এই সম্মেলন কেন্দ্র হচ্ছে বাংলাদেশের এক বিরাটাকারের দেশি-বিদেশি সম্মেলন আয়োজনের স্থান, এবং বিভিন্ন বিরাটাকারের আর্থ-বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী আয়োজনের কেন্দ্র। এই ভবনটি আধুনিক যুগের এবং ইসলামি স্থাপত্যের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ। চীন সরকার বাংলাদেশ পক্ষের অনুরোধে ২০ কোটি ইউয়েন রেনমিনপি পূঁজি বিনিয়োগ করে ২০০১ সালের জুলাই মাসে তা নির্মান করেছে। এই প্রকল্পের অংশগ্রহণকারী শাংহাই নির্মান গোষ্ঠীর প্রকৌশলী বাও ইয়ে বলেছেন, প্রায় ২০ হাজার বর্গমিটার আয়তনের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র হচ্ছে ১৯৮৫ সালের পর বিদেশে চীনের সাহায্যে নির্মিত বৃহত্তম প্রকল্প, এবং আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে চীনের পুঁজি বিনিয়োজিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত মানসম্পন্ন প্রকল্পগুলোরঅন্যতম।
|