v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-08-09 17:11:08    
বাংলাদেশস্থ চীনের রাষ্ট্রদূত ছাই শির বক্তব্য

cri
    ২০০৫ সাল হচ্ছে চীন ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকী, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আমন্ত্রণে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাওয় গত ৭ থেকে ৮ এপ্রিল বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক সফর করেছেন। যদিও বাংলাদেশে তাঁর অবস্থান মাত্র ২৪ ঘন্টার, তবু তাঁর এবারকার বাংলাদেশ সফর খুবই ফলপ্রসূ।

    এই ব্যাপার নিয়ে আমরা বাংলাদেশস্থ চীনের রাষ্ট্রদূত চাই শির সাক্ষাত্কার নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাওয়ের আনুষ্ঠানিক বাংলাদেশ সফরের ঐতিহাসিক তাত্পর্য এবং এবারকার সফরের প্রধান সাফল্য সম্বন্ধে তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ওয়েনের বাংলাদেশ সফর হচ্ছে দু'দেশের সম্পর্কের এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, তা দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকী উদযাপনের ধারাবাহিক তত্পরতার প্রস্তাবনা উন্মোচিত করেছে। তাঁর সফর চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক উন্নয়নের উপর চীনের নতুন কেন্দ্রীয় নেতৃমন্ডলীর উচ্চ মানের গুরুত্ব পুরোপুরি প্রতিফলিত করেছে।

    সফরকালে দু'দেশের নেতারা আন্তরিক ও বন্ধুভাবাপন্ন পরিবেশে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক , আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যা নিয়ে গভীরভাবে মত বিনিময় করেছেন এবং ব্যাপক মতৈক্যে পৌঁছেছেন। দু'পক্ষ দীর্ঘকালীন বন্ধুত্ব, সমতা ও পারস্পরিক কল্যাণ এর সার্বিক সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে একমত হয়েছে। এ বছরকে "চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী বছর" বলে ঘোষণা করেছেন ওয়েন চিয়া পাও । দু'পক্ষ যৌথভাবে ধারাবাহিক উদযাপনী তত্পরতা আয়োজন করবে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, চীন পক্ষ বর্তমানে দু'দেশের বাণিজ্যের ভারসাম্যহীনতার অবস্থার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে, বাংলাদেশের পণ্যদ্রব্যের আমদানি সম্প্রসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবং "ব্যাংকক চুক্তি"-র কাঠামোতে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের আংশিক পণ্যকে সুবিধাজনক শুল্ক সুবিধা দেবে। চীন বাংলাদেশকে চীনা নাগরিকের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য তালিকামুক্ত করেছে। দু'পক্ষ শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি প্রয়োগ, অর্থনীতি ও প্রযুক্তি , কৃষি, গণ নিরাপত্তা, জল সম্পদের উন্নয়ন, বেসামরিক বিমান চলাচল প্রভৃতি ৯টি সহযোগিতা দলিল স্বাক্ষর করেছে। মোটের দিকে প্রধানমন্ত্রী ওয়েনের সফর সাফল্যমন্ডিত হয়েছে।

 সংবাদদাতাঃ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক সুষ্ঠুভাবে বিকশিত হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সফল হয়েছে। এই প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত চেই বলেছেন,

 রাষ্ট্রদূতঃ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক সম্পর্ক নিরন্তরভাবে বিকশিত হচ্ছে, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা ধারাবাহিকভাবে উষ্ণ হয়ে যাচ্ছে, জনগণের আসা-যাওয়া দিনে দিনে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরে বাংলাদেশস্থ চীনের দূতাবাস মোট ২০ হাজার ব্যক্তিগত ভিসা দিয়েছে। এই বছর প্রত্যক্ষ বিমান চলাচল বাস্তবায়নের পর দু'দেশের জনসাধারণের আদান-প্রদান আরো বিপুল মাত্রায় বেড়ে যাবে । চীন এখনও একটি উন্নয়নমূখী দেশ, নিজের অর্থনৈতিক গঠনকাজের দায়িত্বও অনেক ভারী, তবে চীন-বাংলাদেশের মৈত্রী বিবেচনা করে চীন বাংলাদেশকে যথাসাধ্য সাহায্য করেছে। এই পর্যন্ত আমরা যথাক্রমে বাংলাদেশকে কৃষি সার কারখানা, বস্ত্র কারখানা, পাঁচটি মৈত্রী সেতু, চীন-বাংলাদেশ সম্মেলন কেন্দ্র প্রভৃতি সাহায্যমূলক প্রকল্পের সাহায্য করেছি। নির্মানাধীন প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত আছে ষষ্ঠ মৈত্রী সেতু এবং টি এস পি সার কারখানা ইত্যাদি। সঙ্গে সঙ্গে শক্তি সম্পদ, পরিবহন, টেলিযোগাযোগ প্রভৃতি ক্ষেত্রেও অনেক প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন । বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রেখেছে।

 সংবাদদাতাঃ চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকী উদযাপনের উদ্দেশ্যে চলতি বছরে চীন পক্ষের সক্রিয় ব্যবস্থা সম্বন্ধে তিনি জানালেন,

 রাষ্ট্রদূতঃ উদযাপনী তত্পরতা পুরো বছরে চলতে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী ওয়েন বাংলাদেশ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সামনে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে চীন সফরের করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আনন্দের সাথে তা গ্রহণ করেছেন। আগামী সপ্তাহে চীনের শিল্পকলা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে। তাঁরা বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য চমত্কার নাচ গান এবং অ্যাক্রোব্যাটিক্স পরিবেশন করবেন। চীন পক্ষ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রতিনিধি দল, যুবক প্রতিনিধি দল, বিভিন্ন পার্টির প্রতিনিধি দলকে চীন সফরের জন্যে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। চীনা ভাষা প্রশিক্ষণ এবং চীনের সংস্কৃতি সম্প্রসারণ করার জন্য চীনের জাতীয় চীনা ভাষা প্রশিক্ষণ কার্যালয় বাংলাদেশের নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হয়েছে। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এই বছরে ঢাকায় চীনের এক বিরাটাকারের পণ্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। চীন পক্ষ বাংলাদেশে একটি সরকারী ক্রয় দল পাঠাবে। তা ছাড়া, দু'দেশ সামরিক, শিক্ষা, প্রযুক্তি প্রভৃতি ক্ষেত্রে নানা পর্যায়ের গভীর আদান-প্রদান এবং সফর বিনিময় করবে।