অনেকেই প্রায় সময় অভিযোগ করে থাকেন যে, তারা পানি খেলেও মোটা হয়ে যান। পক্ষান্তরে অন্য অনেকেই অনেক খাবার খেলেও মোটা হন না। জার্মানির বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি তাঁদের প্রকাশিত একটি গবেষণা সন্দর্ভে বলেছেন, পরিবেশ ও পুষ্টির প্রভাব ছাড়াও মানুষের গড়ন জিনের ওপরও নির্ভরশীল।
দয়েচে ভেলে'র সাম্প্রতিক একটি খবরে প্রকাশ, জার্মানির পুষ্টি গবেষণাগারের অধ্যাপক সুর্মান বলেছেন, তাঁদের গবেষণায় প্রতিফলিত হয়েছে, পুষ্টির বিভিন্ন চাহিদা ও পুষ্টির আহরণ শুষে নেওয়া জিনের ওপর নির্ভরশীল।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, কিছু মোটা লোকের পেট ভরা জনিত উপলব্ধির সংকেত সাধারণ লোকদের থেকে ভিন্ন। তাঁদের শরীর এ ধরণের সংকেত গ্রহণ করতে পারে না কিংবা অপেক্ষাকৃত কম গ্রহণ করে থাকে। সেইজন্য তারা সহজে বেশী খাবার খান। আরও নিখুঁতভাবে বলা যায়, তাদের দেহের জিন ও অন্যদের জিনের মধ্যে পার্থক্য আছে। তারা স্বাভাবিকভাবে বিশেষ হরমোনের বিস্তার অনুভব করতে পারে না।
অধ্যাপক সুর্মান আরও ব্যাখ্যা করে বলেছেন, পাতলা হরমোন মানুষের ওজন ও খাওয়ার ইচ্ছার ওপর প্রভাব বিস্তার করে। এই হরমোন চর্বির সেল থেকে উদ্ভূত হয়। ফ্যাট সেল যত বেশী থাকে, তত বেশী পাতলা হরমোনের উদ্ভব হয়। এ ধরণের মানুষ সহজে মোটা হয় না। কিন্তু মানুষের শরীরে এক ধরণের এ্যাণ্টিবডি উদ্ভূত হতে পারে। এই এ্যাণ্টিবডি হরমোনের সংকেতের প্রতি শরীরের প্রতিক্রিয়া করতে বাধা দেয়। যদি এ এ্যান্টিবডির ভূমিকা বেশি থাকে, তাহলে মানুষ বেশি খাওয়ার ইচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হবে। তখন মানুষ বেশি খায় এবং বেশী মোটা হয়ে যায়।
অধ্যাপক সুর্মান এই প্রস্তাব দিয়ে বলেছেন যে, মানুষের উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে আনা এবং ভালো খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা। শরীরের আগেকার ভারসাম্য একবার ভেঙ্গে গেলে আবার এই ভারসাম্য গড়ে তোলা সহজ হবে না। কিন্তু তিনি একই সঙ্গে বলেছেন, ভবিষ্যতে মানব জাতি নিজের জিনের ধরণ খুঁজে বের করতে পারবে। ডাক্তাররাও আলাদা আলাদা অবস্থা অনুযায়ী চিকিত্সা করতে পারবেন এবং আদর্শ খাদ্য তালিকার ভিত্তিতে ব্যবস্থাপত্র লিখতে পারবেন, যাতে ভিন্ন অবস্থা অনুযায়ী মানুষের মুটিয়ে যাওয়ার সমস্যার সমাধান করা যায়।
|