গ্রীষ্মকালে গরমের প্রভাবে মানুষের সারা শরীর থেকে বেশি ঘাম বের হয়। শরীরের পানি এবং লবণ বেশি হারালে মানুষের তাপদাহ ঘটে। গুরুতর হলে মানুষের জীবনও বিপন্ন হতে পারে। কেউ কেউ মনে করেন, প্রচণ্ড রোদে খেলা করলে মানুষের তাপদাহ হয়। কিন্তু আসলে তা নয়। অতিরিক্ত মদ খাওয়া, ঘুমের অভাব, বিশৃঙ্খল জীবন-যাপনও মানুষের তাপদাহের কারণ হতে পারে।
জাপানের সংবাদ মাধ্যমের সাম্প্রতিক খবরে প্রকাশ, একজন বুড়ো একলা বাড়ীতে ছিলেন। বায়ুনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র খোলেন নি বলে তিনি তাপদাহের রোগে আক্রান্ত হয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছেন। তাঁর পরিবারের সদস্য টের পেয়ে এমবিউলেন্স ডেকে তাঁকে হাসপাতালে পাঠালেন। একজন মধ্য বয়সী পুরুষ সারা রাত জেগে বিয়ার খাওয়ার পর আবার গল্ফ খেলতে গিয়েছিলেন। ফলে ঘাসের ওপর পড়ে যান। জাপানের মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক মনে করেন যে, প্রচণ্ড রোদে কাজ করা অথবা খেলার সময়ে মানুষ সাধারণত তাপদাহ থেকে আত্মরক্ষার ব্যাপারে সচেতন থাকে। তবে দৈনন্দিন জীবনে তাপদাহের বিপদ সম্পর্কে অনেকের ধারণা নেই।
তাপদাহের প্রাথমিক লক্ষণ হলো এই যে, মানুষের জানুর পেশীতে টান লাগে অথবা , তলপেটের পেশীতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। গুরুতর অবস্থায় পড়লে মানুষের বমি বমি লাগবে। আরও গুরুতর হলে মানুষ অচেতন হয়ে যাবে। তখন আশু চিকিত্সা না করলে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠবে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে, মোটা লোক অথবা বহুমূত্র রোগীরা গরমের দিনে বাইরে গেলে তাদেরকে রোদ থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা নিতে হবে এবং হালকা-পাতলা কাপড় পরতে হবে।
কিওটো মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে, তাড়াহুড়া করে বায়ু নিয়ন্ত্রিত ঘর থেকে বেরিয়ে রোদে দীর্ঘ সময় ধরে হাটলে চলবে না। ধীরে ধীরে গরম আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে। কোনো কোনো তাপদাহের অবস্থায় পড়লে ছায়ার নীচে অথবা বায়ুনিয়ন্ত্রিত ঘরে গিয়ে পানীয় জল পান করা ভালো, যাতে যথাসময়ে শরীরের জল এবং লবণ যুগিয়ে দেওয়া যায়। গুরুতর হলে শীগগীরই রোগীকে হাসপাতালে পাঠানো উচিত।
|