v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-08-05 22:59:43    
লাকু জাতি

cri
    লাকু জাতির ৩৮ বছর বয়স্ক ইয়াংছুং কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুজাতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক । ১৯৮০ সালে তিনি কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হন । স্নাতক হওয়ার পর এ পর্যন্ত তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন । এখন তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনের সংখ্যালঘুজাতির সাহিত্য গবেষণাগারে কাজ করছেন । লাকু জাতি যে লাউ ভালবাসে , সে প্রসংগে ইয়াংছুং সংবাদদাতাকে বলেছেন , লাকু জাতির রুপকথা অনুযায়ী লাউ থেকে লাকু জাতির পূর্বপুরুষদের জন্ম । সুতরাং লাকু জাতির লোকেরা লাউকে নিজেদের জাতির নির্দশন বলে আখ্যায়িত করে । লাউয়ের প্রতি তাদের অনুরাগ এতই গভীর যে এমন কি তাদের উত্পাদন ও জীবনযাত্রা থেকে লাউকে পূথক করা যায় না ।

    ইয়াংছুং বলেছেন ,লাকু জাতি মনে করে যে ,লাউ জাতি মনে করে যে , লাউ দিয়ে মদ সংরক্ষণ করলে সুগন্ধ অটুট থাকবে, লাউ দিয়ে বীজ পঁচে যাবে না ,লাউ দিয়ে পানি রাখলে পানি নির্মল ও সুমিষ্টি হয় এবং লাউ দিয়ে যে লুসেন নামে বাদ্যযন্ত্র তৈরী হয় ,লাকু জাতির লোকেরা তা সবচাইতে ভালবাসে ।লাকু জাতির রীতিনীতি অনুযায়ী যেমন উত্সব তেমনি পরিশ্রমের কাজের সময়ে লুসেন বাজানো হয় । তরুনতরু নীদের ভালবাসার জন্য তা তো আরো প্রয়োজনীয় । লাকু জাতির পাহাড়ী গ্রামে যখন অন্ধকার আসে, তখন বনে গাছপালার পেছন দিক থেকে লুসেন দিয়ে সংগীতের সুন্দর সূর বাজানো হয় ।

     জানা গেছে , একটি প্রকৃত লাকু জাতির পুরুষের জন্য বন্দুক ও লুসেন খুবই প্রয়োজন । এখন বন্দুক আর লাগছে না , কিন্তু প্রেমে পড়া তরুনের জন্যো লুসেনের বিশেষ ভূমিকা আছে । মেয়েদের আকর্ষণ করার জন্য প্রত্যেক লাকু জাতির তরুন লুসেন দিয়ে অন্তর্ভাগ থেকে একটি পছন্দীয় সংগীদের সুর বাজাতে পারে ।

    ঐতিহাসিক গ্রন্থ অনুযায়ী ,লাকু জাতি ছিল এমন একটি পশুপালক জাতি , যে জাতি ছিনহাই-তিবুত মালভূমিতে জীবনযাপন করতো । অস্টম শতাব্দিতে লাকু জাতি ছিনহাই-তিবুত মালভূমি থেকে ইউন্নান প্রদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাংশের আদিম বনে স্থানান্তরিত হয় । সুতরাং লাকু জাতির মহিলাদের পোষাকের মধ্যে এখনো চীনের উত্তরাংশের জাতি , যেমন মংগোলিয়ান জাতি ,মান জাতি প্রভৃতি জাতির পোষাকের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান ।

    দক্ষিণাংশের গ্রীষ্ম্ম-ডলীয় বনে আসার পর লাকু জাতি পশুপালকের জীবনযাপন করে আসছে , তাদের স্থায়ী বাসস্থান নেই। বনে সর্ব এই বাঁশ পাওয়া যায় ,সুতরাং লাকু জাতির পূর্বপুরুষরা বাঁশের নল দিয়ে ভাত সিদ্ধ করার এক ধরনের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে । ইয়াং ছুং সংবাদদাতাকে বলেছেন , বাঁশের নল দিয়ে যে ভাত সিদ্ধ করা হয় ,তার যেমন ধান তেমনি বাঁশের সুগন্ধ আছে ।

   ইয়াংছুং বলেছেন ,এখন লাকু জাতি আদিম বন ছেড়ে তাদের স্থায়ী আবাসের জীবনযাবন শুরু করেছে । আসলে নিত্য জীবনে বাঁশের নল দিয়ে সিদ্ধ ভাত আর দেখা যায় না । শুধু গুরুত্বপূর্ণ শিকার তত্পরতা বা রেস্তরাঁয় এমন ভাত পাওয়া যায় । এখন পেইচিং ,শাংহাই প্রভৃতি বড় ও মাঝারি শহরে বাঁশের নল দিয়ে সিদ্ধ ভাত এক ধরনের বিশেষ আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবার বলে মনে করা হয় ।

   হান জাতির মতোই বসন্ত উত্সবও লাকু জাতির সবচাইতে জাঁকজমপূর্ণ উত্সব বলে গণ্য করা হয় । নববর্ষের প্রথম দিনে লাকু জাতির বৈশিষ্টসম্পন্ন "জলকে চল" প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুষ্ঠান আয়োজন হয় ।

    নববর্ষের প্রথম দিনে ভোর হতে না হতেই পানি আনতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালাবার জন্য তরুনতরুনীরা শীঘ্রই পাহাড়ের পাদদেশের ঝারনার পাশে ছুটে যায় । নববর্ষের নতুন পানি লাকু জাতির চোখে বিশুদ্ধতা ও সুখের প্রতীক । যে লোক সবচাইতে আগেই নতুন পানি আনতে পারে , তাকে সবচাইতে পরিশ্রমী ও সুখী ব্যক্তি এবং সে নববর্ষে সৌভাগ্য পারে বলে গন্য করা হয় ।

    গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সরকারের সমর্থন আর হান জাতি সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুজাতির সহায়তায় লাকু জাতির অর্থনীতি প্রভৃতি ক্ষেত্রের দ্রুত প্রসার হয়েছে ।

    বর্তমানে লাকু জাতি শাস্তিময় ও সুখী জীবনযাপন করছে । লাকু জাতির লোকদের আয়ুও ক্রমাগতভাবে বেড়ে গেছে । লানছাং লাকু জাতির স্বায়ত্ত শাস্তি জেলায় তের জনের আয়ু এক শো বছর ছাড়িয়ে গেছে । তাদের মধ্যে একজনের বয়স ১২০ বছর হয়েছে ।