প্রশ্নকর্তাঃ বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার ঘোড়াদাইড় গ্রামের লিপন স্মৃতি রেডিও লিসনার্স ক্লাবের সভাপতি বি এম ফয়সাল আহমেদ
উঃ এখন সারা বিশ্ব স্বীকার করে যে, ফুটবল খেলার জন্ম প্রায় ২৫০০ বছর আগে চীনের যুদ্ধমান রাজ্য সমূহের যুগে, এ সময়টি কমপক্ষে আধুনিক ফুটবলের জন্মস্থান ব্রিটেনের চেয়ে এক হাজারাধিক বছর পুরনো।
তবে মজার কথা হলো, অতি প্রাচীন কালে পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেক কোণে ফুটবল খেলার উত্সের সূত্র পাওয়া যায়। কেবল প্রাচীনকালের চীন কেন, সুদূর মিশর, ইউরোপ, আমেরিকা , প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ইত্যাদি সবখানেই ফুটবল খেলার রেকর্ড আছে। তবে সে সময়কার অতি অনুন্নত পরিবহন ব্যবস্থার কারণে এসব তথ্য অনেকেরই অজানা।
চীনের যুদ্ধমান রাজ্য সমূহের যুগে ফুটবলের মতো খেলা ছিলো। হান রাজবংশে এই খেলা দুটি দলের প্রতিযোগতায় রূপান্তরিত হয়। প্রতি দল ছয়টি গোলপোস্ট রক্ষা করতো। থাং রাজবংশে প্রতি দলের গোলপোস্টের সংখ্যা কমে একটা হয়েছে।
এবার আমরা চীনের বাইরে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেখি। কোন কোন ঐতিহাসিক মনে করেন, মিশরের কিছু প্রার্থনা অনুষ্ঠান সম্ভবত ফুটবল খেলার উত্সের অন্যতম। প্রাচীন মিশরের প্রাচীরের চিত্রাঙ্কনে বল খেলার নানান রকমের কৌশল বর্ণনা করা হয়েছে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের আদিবাসীরা নারকেল, কমলা দিয়ে বলের মতো খেলতো।
উত্তর আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ানদের একটি খেলা ছিলো, হাজার হাজার মানুষ একসাথে সৈকতে এক মাইল দূরে বসানো দুটি দ্বারের মধ্যে বল নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করতেন।
স্পার্ট্যান ইউরোপের প্রাচীনকালের ফুটবল খেলার উত্স আবিস্কার করেছেন, এবং রোম সাম্রাজ্যের শাসনামলে এই খেলাকে ইউরোপের নানা জায়গায় সম্প্রসারণ করেছেন।
ব্রিটেন হচ্ছে আধুনিক ফুটবল খেলার প্রতিষ্ঠাতা এবং ফুটবল খেলাকে প্রতিযোগিতা পর্যায়ে উন্নীত করেছে।
উল্লেখ্য যে, ১৪ শতাব্দীর আগে ফুটবল কেবল ব্রিটিশদের বিনোদনের খেলা ছিলো। ১৮৬৩ সালে কেউ কেউ ফুটবলের নিয়মাবলী নির্ধারন করার প্রস্তাব করেছেন, বহু বার আলোচনার পর অবশেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, ফুটবল কেবল পা দিয়ে খেলা যাবে, রাগবি কেবল হাত দিয়ে খেলা যাবে। ১৮৬৩ সালে বিশ্বের প্রথম ফুটবল এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এই সংস্থার প্রতিষ্ঠা ফুটবল খেলার উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব সৃষ্টি করেছে। ১৮৮৬ সালে ব্রিটিশ ফুটবল আনুষ্ঠানিক ক্রিড়ায় পরিণত হয়েছে।
|