প্রশ্নকর্তাঃ বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার মোঃ মাহবুবুর রহমান টিটু
উঃ বর্তমানে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তিন জন আছেন, তাঁরা হচ্ছেন খোং ছুয়েন, লিউ চিয়ান ছাও এবং ছিন কাং।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম লি চাও শিং। ১৯৪০ সালে তিনি চীনের শাংতুং প্রদেশের চিয়াও নান জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তখন তিনি হলেন বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া চিয়াও নান জেলার একমাত্র ছাত্র, গোটা জেলা তাঁর জন্য নিজেকে ধন্য বলে মনে করে। ১৯৬৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তম কৃতিত্ব নিয়ে স্নাতক ডিগ্রী লাভের কল্যাণে তিনি সরাসরি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি বেইজিংয়ের বিদেশী ভাষা ইনস্টিটিউটে ৭ বছর ধরে ইংরেজী ভাষা শিখেছেন। ৭ বছর পর লি চাও শিংয়ের ইংরেজী ভাষার মানের প্রগাঢ় উন্নতি হওয়ায় তিনি মনোযোগ সহকারে প্রাচীন ইংরেজী ভাষার শেক্সপিয়ারের নাটক উপভোগ করতে পারেন।
চীনে সংস্কার ও উন্মুক্ততা চালু হওয়ার পর তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক জন মুখপাত্র হন, এবং তাঁর কার্যমেয়াদ সবচেয়ে দীর্ঘ। বহুবার সংবাদ সম্মেলনে পাশ্চত্য দেশের সংবাদদাতাদের কঠিন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় তিনি নিজেকে অবিচলিত, বুদ্ধিদীপ্তএবং সু-নিপুণ কূটনীতিক হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি দেশি-বিদেশি কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের প্রশংসা এবং সম্মান পেয়েছেন।
১৯৯৩ সালের মার্চ মাসে লি চাও শিং জাতি সংঘস্থ চীনের সবচেয়ে অল্পবয়স্ক স্থায়ী প্রতিনিধি হন। ৪৮ এবং ৪৯তম জাতি সংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে তথাকথিত জাতি সংঘে তাইওয়ানের "প্রতিনিধিত্ব" সমস্যা সংক্রান্ত অল্প সংখ্যক দেশের উত্থাপিত প্রস্তাব ব্যর্থ করেছেন।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর লি চাও শিং হলেন যুক্তরাষ্ট্রস্থ চীনের সবচেয়ে অল্পবয়সী রাষ্ট্রদূত, এবং চীনের ১৫০ জন রাষ্ট্রদূতের মধ্যে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির একমাত্র বিকল্প সদস্য।
কূটনীতিবিদ হিসেবে তাঁর নাম ছড়িয়েছে সারা পৃথিবীতে , কিন্তু অনেকে জানেন না, লি চাও শিং এক জন কবিও বটে। ১৯৯৯ সালে তাঁর কবিতা গ্রন্থ "বাসন্তী চীন" প্রকাশিত হয়েছে, এবং পাঠকদের অনুরোধে বার বার এর নতুন সংষ্করণ ছাপানো হয়েছে। লেখক ফেং ই চেই বলেন, লি চাও শিংয়ের কবিতার গভীর মর্ম-মূলে আমরা দেখতে পাই চীনের কূটনীতিবিদের বৈশিষ্ট্যময়, তা হলো বিশ্বাস বিশ্বকে আলিঙ্গন, সততা এবং সর্বত্র বিদ্যমান স্নেহ-মমতা।
লি চাও শিংয়ের স্ত্রী ছিন সিয়াও মেই তাঁর বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠি। এক কূটনীতিবিদের পরিবারে তাঁর জন্ম, তাঁর বাবা ছিন লি চেন চীনের বিখ্যাত প্রবীন কূটনীতিবিদ। ছিন লি চেন নরওয়ে, জাম্বিয়া, সুইজার্ল্যান্ডএবং নিউজিল্যান্ড এই চারটি দেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
|