v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-06-28 22:26:43    
এশিয়ার সংগীত মহলের এক মহাসম্মীলনী

cri
    সপ্তম সাংহাই সংগীত উত্সবের সমাপনী অনুষ্ঠানে চীনের মূলভুভাগের আর হংকং ও তাইওয়ানের কন্ঠশিল্পীদের চমত্কার পরিবেশনা উপস্থিত দর্শকদের তুমুল করতালি জয় করেছে , বিশেষ করে তাইওয়ানের বিখ্যাত শিল্পী ইয়েন ছেন সুই মঞ্চে আরোহনের সংগে সংগে স্টেডিয়াম দর্শকদের করতালি ও চিত্কারে মুখরিত হয় । সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান বিষয় ছিল স্বত্ত্বাপহরণ দমন করে মেধা সম্পদ রক্ষা করা আর সংগীত বাজার সাফ করা ।কন্ঠশিল্পীরা গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে ব্যাপক সংগীত অনুরাগীদের স্বত্ত্বাহরণ ঠেকানোর আহ্বান জানিয়েছেন । শরতকালের সাংহাই মহানগরের সন্ধ্যাবেলায় যদিও বাতাসের মধ্যে অল্পকিছু শীত মিশেছে , তবুও খোলামাঠের আশি হাজার আসন সম্পন্ন স্টেডিয়াম দর্শকদের ভীড়ে উপচে পড়ে । জাপান , দক্ষিণ কোরিয়া , ইন্দোনেসিয়া ও আজারবাইজানসহ এশিয়ার বিশটি দেশ ও অঞ্চলের কন্ঠশিল্পী ও সংগীতকাররা এই উত্সবে অংশ নিয়েছেন । সংগীত উত্সবের স্বত্ত্বাপহরণ প্রতিরোধের আহ্বান সমাজের বিভিন্ন মহলের সমর্থন পেয়েছে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন স্টুডিও কম্পানি , কন্ঠশিল্পী ও সংগীত অনুরাগীর সক্রিয় সাড়া পেয়েছে ।

    এই উত্সবের সাংগঠনিক কমিটির দায়িত্বশীল ব্যক্তি লুই কো পিং বলেছেন , বর্তমানে চীনের সংগীত ব্রতের ক্রমোন্নতি হচ্ছে , কিন্তু বাজারে সংগীতের অনুকৃত সি ডি ও ভি সি ডির সংখ্যা বেশী , এটা চীনের সংগীত শিল্পের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে । কাজেই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে মিলিতভাবে দস্যুদের ঠেকানোর ব্যবস্থা নিয়ে মেধা সম্পদ রক্ষা করে গানের সি ডি ও ভি সি ডি বাজার সাফ করার প্রয়াস চালাতে হবে , বর্তমান উত্সবে স্বত্ত্বাপহরণ প্রতিরোধের কর্মসুচী নাগরিকদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দস্যুদের ঠেকানোর প্রয়োজনীয়তা প্রচারের ভুমিকা নিয়েছে । তিনি বলেছেন , বর্তমান সংগীত উত্সবের স্বত্ত্বাপহরণ-বিরোধী কর্মসুচী বিশ্বের সি ডি স্টুডিও মহলসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে । চীনে , বিশেষ করে সাংহাইয়ের প্রায় প্রতিটি পরিবারে স্বত্ত্বাপহরণ ঠেকানোর প্রয়োজনীতা জানতে পেরেছে । বিশেষ করে অল্পবয়সী যুবকযুবতী আগ্রহের সংগে এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন । সাংহাই এশিয় সংগীত উত্সবে যে স্বত্ত্বাপহরণ ঠেকানোর তাত্পর্য প্রচার করা হয়েছে , তা থেকে স্বত্ত্বাপহরণ সম্বন্ধে একটি বড় শহরের নাগরিক ও সরকারের অধিষ্ঠান প্রতিফলিত হয়েছে । স্বত্ত্বাপরণ ঠেকানোর ব্যাপারে আমরা আশাবাদী ।

    প্রথম সাংহাই এশিয় সংগীত উত্সব ১৯৯১ সালে আয়োজিত হয় । উত্সবে কন্ঠশিল্পী প্রতিযোগিতা , শ্রেষ্ঠ গান নির্বাচন , আলোচনা সভা আর স্বত্ত্বাপহরণের বিরোধিতা প্রভৃতি কর্মসুচীর মাধ্যমে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সংগীতের বৈশিষ্ট্য প্রদর্শিত হয়েছে । এশিয়ার অঞ্চলের সংগীত মহলের এই মহা সম্মীলনী ইতিমধ্যে চীন ও এশিয়া তথা পৃথিবীর আধুনিক গানের জগতের সংগে যোগাযোগের এক গুরুত্বপূর্ণ সেতু হয়ে দাঁড়িয়েছে । লুই কো পিং বলেছেন , এশিয় সংগীত উত্সব অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য হলো নতুন কন্ঠশিল্পীদের জন্য নিজ নিজ নৈপুন্য প্রদর্শনের মঞ্চ যোগানো , চীনের আধুনিক গানের রচনা তরান্বিত করা , সংগীত বাজার সমৃদ্ধ করা আর এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের সাংস্কৃতিক আদান প্রদান তরান্বিত করা ।

    সপ্তম সাংহাই এশিয় সংগীত উত্সবে নবোথিত কন্ঠশিল্পী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে । অনেক সংগীত অনুরাগী যুবক যুবতী এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে গান পরিবেশনের নৈপুন্য দেখিয়ে নিজেদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন । বিখ্যাত কন্ঠশিল্পী রোন চু আর , হু ইয়েন পিং ও নি সি রুই এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে খ্যাতি লাভ করেছেন । সাংহাইয়ের কন্ঠশিল্পী ওয়াং হাও এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন , মালয়েসিয়ার কন্ঠশিল্পী ভিন্স প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন , যদিও ভিন্স প্রতিযোগিতায় প্রথম হন নি , তবুও তিনি খুব খুশী । তিনি বলেছেন , এখানে এসে পুরষ্কার পাওয়া আমার লক্ষ্য নয় । আমি চেষ্টা করেছি , গান দিয়ে আমি আমার মনের কথা প্রকাশ করেছি বলে আমি আনন্দিত , আমি প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছি , এটা আনন্দের ব্যাপার । নরওয়ে থেকে আসা সংগীতবিদ টোম গ্রাভ্লি বলেছেন , আমি মনে করি এই সংগীত উত্সব ভালো , এখানে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের আধুনিক গানের সংগীতবিদ জড়ো হয়ে পারস্পরিক আদান প্রদানের মাধ্যমে অনেক নতুন বন্ধু পাবেন , এই সংগীত উত্সব সত্যিই এক মহাসম্মিলনী ।

    বর্তমান সাংহাই এশিয় সংগীত উত্সবে চীনের আধুনিক গানের রচয়িতা ও সুরকারের প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়েছে । চীনের ১২টি প্রদেশ, কেন্দ্র শাসিত মহানগর আর স্বায়তশাসিত অঞ্চলের সংগীতবিদ এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন । চীনের বিখ্যাত সুরকার চান ছিয়েন ইর মতে এই প্রতিযোগিতা চীনের আধুনিক গানের রচনা তরান্বিত করবে । তিনি বলেছেন , বর্তমান সাংহাই এশিয় সংগীত উত্সবে যে স্বরচিত আধুনিক গানের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে , তা তাত্পর্যপূর্ণ ব্যাপার , কারণ আধুনিক গানের প্রসারে নতুন নতুন গান রচনা এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । চীনের তথা বিদেশের প্রভাবশালী আধুনিক গানের শিল্পীরা নিজে গান রচনা করেন , তারা আধুনিক গানের প্রসারে বিরাট অবদান রেখেছেন । বর্তমান উত্সবের সাংগঠনিক কমিটি আধুনিক গানের রচনাকে বেশী গুরুত্ব দেয় , এটা অবশ্যই চীনের আধুনিক গানের প্রসার তরান্বিত করবে । চান ছিয়েন ই আরো বলেছেন , প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া সংগীদবিদদের রচিত আধুনিক গানের মান অপেক্ষাকৃতভাবে উন্নত , তাদের রচিত গানগুলোতে নিজের বৈশিষ্ট্য আছে , গান রচনার শৈলীও বৈচিত্র্যময় , এতে তিনি সন্তোষ বোধ করেন । একমাত্র দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে এই সব গানের মধ্যে অনন্যসাধারণ আধুনিক গান তিনি খুঁজে বের করতে পারেন নি , তিনি আশা করেন আগামী বছরের প্রতিযোগিতায় তিনি আরো উন্নত মানের আধুনিক গান শুনতে পাবেন ।