v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-06-27 21:28:58    
পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী ভাষা ইন্সটিটিউটের প্রাচ্য ভাষা ও সংস্কৃতিবিভাগ

cri
    কিছু দিন আগে আমাদর সংবাদদাতা চীনের শত বছরের পুরনো বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় -- পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছেন , তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী ভাষা ইন্সটিটিউটের প্রাচ্য ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সংগে আলাপ করেছেন । এই বিভাগ চীনের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অনতিবহুল প্রচলিত ভাষার অন্যতমো প্রশিক্ষন কেন্দ্র , সেখানে অনেক দেশের ভাষা শেখানো হয় , এগুলোর মধ্যে হিব্রু ভাষার প্রশিক্ষন কোর্ষ চীনে শুধু পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে । এই বিভাগের ডীন লিয়ান মিন হো পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্য ভাষা ও সংস্তৃতি বিভাগের ইতিহাস সম্বন্ধে বলেছেন , প্রাচ্য ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ ১৯৪৬ সালে পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত পন্ডিত চি সিয়েন লিনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় , এর আগের নাম ছিল প্রাচ্য ভাষা বিভাগ । ১৯৯২ সালে তার নতুন নাম দেয়া হয় প্রাচ্য ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ । চীনের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্য ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগে ভাষার কোর্সের সংখ্যা সবচেয়ে বেশী , বিভাগের ইতিহাস সবচেয়ে পুরনো । প্রফেসার লিয়ান বলেছেন , এই বিভাগ প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে এতে সাতটি ভাষার র্কোস ছিল , এখন মোট ১২টি ভাষার প্রশিক্ষণ কোর্স আছে , এই বারোটি ভাষা হলোঃ পারস্য ভাষা , কোরিয় ভাষা , ফিলিপিন্স ভাষা , মঙ্গলীয় ভাষা , মায়ানমীর ভাষা , থাই ভাষা ,হিন্দী ভাষা , ইন্দোনিসিয়া-মালয়সিয়া ভাষা , ভিয়েত্নামী ভাষা , উর্দু ভাষা , হিব্রু ভাষা , সংস্কৃত ভাষা । তা ছাড়া এই বিভাগে প্রাচ্যের প্রাচীন সভ্যতা বিষয়ে তিনটি তিনটি শিক্ষা কোর্স আছে । এই বিভাগে এশিয়ার এই সব ভাষা শিখানো ছাড়া সংশ্লিষ্ট দেশের সাহিত্য , সংস্কৃতি , ইতিহাস , রীতিনীতি , ধর্ম , প্রাচ্যের সাহিত্য ও সংস্কৃতি , ভাষাতত্ব , দক্ষিন এশিয়ার সংস্কৃতি আর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সংস্কৃতি সহ ২১০টি পাঠ্যক্রম আছে । মাস্টারস ডিগ্রি ও ডক্তরেট ডিগ্রির ছাত্রদের ১৩০টি পাঠ্যক্রম আছে ।

    চীনে মোট ১১টি অনতিবহুল প্রচলিত ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে । এই ক্ষেত্রে পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধান্য সুস্পষ্ট । যেমন সংস্কৃত ভাষা , হিন্দী ভাষা আর উর্দু ভাষাসহ পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় ভাষা প্রশিক্ষন কোর্সের ইতিহাস অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে দীর্ঘ , এই বিভাগে স্নাতক ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যুক্ত রাষ্ট্র ও জাপানের শিক্ষার্থীও রয়েছে ।

    চীনে হিন্দী ভাষার শিক্ষা কোর্সের ইতিহাস দীর্ঘ , ৬২ বছর আগে চীনে হিন্দী ভাষা প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু হয় , দীর্ঘ ৬২ বছরে এই বিভাগে মোট চার শোরও বেশী ছাত্রছাত্রী স্নাতক ডিগ্রি আর চল্লিশাধিক ছাত্রছাত্রী স্নাতকোওর ও ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছেন । তারা চীন ও ভারতের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন । হিন্দী ভাষা প্রশিক্ষণ কোর্সের শিক্ষক চিয়ান চিন খুই ১৯৯৬ সালে হিন্দী ভাষার ডক্তরেট ডিগ্রি পাওয়ার পর পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দী বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন । হিন্দী ভাষার শিক্ষাদান সম্বন্ধে শিক্ষক চিয়ান চিন খুই বলেছেন , দক্ষীন এশিয়ার দেশগুলোর বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে আমরা ছাত্রছাত্রীদের হিন্দী ভাষা শেখানোর সংগে সংগে ইংরাজী ভাষাও শিখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি । ক্লাসে ভাষা শেখার সংগে সংগে ছাত্রছাত্রীরা দক্ষিণ এশিয়ার ধর্ম , সংস্কৃতি ও অর্থনীতি প্রভৃতি ক্ষেত্রের জ্ঞান লাভ করেন । বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা শেষ করে ছাত্রছাত্রীদের কর্মসংস্থান সম্বন্ধে শিক্ষক চিয়ান বলেছেন , এখন যারা পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দী ভাষা শিখেছেন , স্নাতক হওয়ার পর তাদের কর্মসংস্থানের বেশী সমস্যা হবে না , এই বছর দুটি সংস্থায় একটি করে ছাত্র নিয়োগের অবস্থা দেখা দিয়েছে । সরকারী সংস্থা ছাড়া চীনের বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোও আমাদের বিভাগের স্নাতক ছাত্রছাত্রীদের নিয়োগ দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে । চীন ও ভারতের আদানপ্রদান ক্রমেই বাড়ছে বলে যে সব ছাত্রছাত্রী ভালোভাবে পড়াশুনা করেছেন , তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগও বেড়ে চলেছে ।

    আলাপের সময় আমাদের সংবাদদারা এটাও জানতে পেরেছেন যে , চীন ও ভারতের দুটি সরকার দুদেশের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান জোরদারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে । গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভাজপাইয়ের চীন সফরকালে দুটি সরকার নিজ নিজ রাজধানীতে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে , তা ছাড়া ভারতীয় সরকারের সমর্থনে পেইচিংয়ে ভারত গবেষনা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে , ভারত সরকার গবেষনা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রথম পাচঁ বছরে প্রতি বছর দশ লক্ষ রুপি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে , এতে প্রমানিত হয়েছে যে চীন ও ভারতের দুটি সরকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর সংগে সংগে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান করারও প্রয়াজ করছে । শিক্ষক চিয়ান ১৯৮৮ সালে ভারতে পড়াশুনা করার অভিজ্ঞতা স্মরণ করে বলেছেন , ভারতীয় জনগণ অতিথিপরায়ন জনগণ , আমি প্রায়ই আমার সহপাঠী বা শিক্ষকের বাসায় যেতাম , আমি তাদের বাসায় গল্প করতাম , আমরা এক সংগে খেতাম । আমি পশ্চিম বঙ্গেও গিয়েছি , সেখানকার দৃশ্য খুব সুন্দর , তখন আমার হিন্দী ও ইংরাজী ভাষার মান অত ভালো ছিল না , কিন্তু আমার বন্ধুরা উত্সাহের সংগে আমাকে সাহায্য করেন , তারা বলেছেন , তারা চীন পছন্দ করেন এবং আমার মতো এক চীনা বন্ধু পেয়ে খুব আনন্দ বোধ করেন , এই মনোরম জায়গার বন্ধুদের কথা চিরকাল আমার মনে থাকবে ।

    হিন্দী ভাষার ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে আমাদের সংবাদদাতারা উর্দু ভাষার তৃতীয় বর্ষের ছাত্র পাই ইয়ু শির সাক্ষাত্কার নিয়েছেন । পাই ইয়ু শি বলেছেন , উর্দু ভাষার উচ্চারণ চীনা ভাষা ও ইংরাজী ভাষার তুলনায় কঠিন , যেমন কম্পমান ধ্বনি চীনা ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে সহজ নয় । উর্দু ভাষা এক প্রাচীন ভাষা , তার ব্যাকরণেরও বৈশিষ্ট্য আছে , তার লেখা ডান দিক থেকে বামে লেখা হয় , প্রথম দিকে আমরা অসুবিধা বোধ করি , কিন্তু এখন আমরা অভ্যস্ত হয়েছি । আগামী বছর পাই ইয়ু শি পড়াশুনা শেষ করে স্নাতক হয়ে চাকরী করবেন , তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখা উর্দু ভাষা দিয়ে চীন ও পাকিস্তানের মৈত্রী বাড়ানোর জন্য ভুমিকা নেবেন ।