এখন সারা পৃথিবীর ৬০০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সের শিশুদের সংখ্যা প্রায় ১৫০ কোটি, প্রায় মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ। এর মধ্যে প্রায় ১২০ কোটি শিশু উন্নয়নমুখী দেশে বসবাস করে। ২০ কোটির বেশি শিশু শিল্পোন্নত দেশে বসবাস করে। শিশু হচ্ছে মানবজাতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ, মানবজাতির আশা এবং ভবিষ্যত প্রতিনিধি। এখন বিভিন্ন দেশের সরকার ব্যাপকভাবে শিশুদের ভবিষ্যত এবং শিশুর অধিকার রক্ষার উপর মনোযোগ দিচ্ছে। ১৯৯০ সালে জাতি সংঘ "শিশুর অধিকার কনভেনশন " অনুমোদত করেছে। চীন হচ্ছে এই কনভেনশনের প্রণয়নকারী এবং স্বাক্ষরকারী দেশের অন্যতম। একই বছরে চীন "চীন গণ প্রজাতন্ত্রের অপ্রাপ্তবয়স্কদের রক্ষা আইন" প্রকাশ করেছে, এটা বালক-বালিকা ও শিশুদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। শিশুদের সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠার নিশ্চয়তা বিধান করার জন্য চীনের আইন প্রণয়ন ও আইন প্রয়োগকারী বিভাগ এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও সামাজিক গোষ্ঠিগুলো সবই উপযুক্ত সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেস এবং গণ পরামর্শ সম্মেলনে আলাদা আলাদাভাবে নারী ও শিশু বিষয়ক আইন ও তত্ত্বাবধান সংস্থা প্রতিষ্ঠিত আছে।
ভারতঃ
ভারত স্বাধীনতার পর প্রথম সরকারের প্রধানমন্ত্রী নেহরুর জন্মদিন ১৪ নভেম্বর শিশু দিবস নির্ধারণ করেছে। এই দিনে ভারতের শিশুরা বিভিন্ন জাতীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন নাচ গান পরিবেশন করে। সরকারও কিছু উদযাপনী অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
ইসলামি দেশঃ
কিছু মুসলিম দেশ রমজান মাস শেষ হওয়ার পর চৌদ্দতম দিনকে "মিঠাই উত্সব" নির্ধারন করেছে। বাচ্চাদের জন্যে এটা সবচেয়ে আনন্দদায়ক শিশু দিবস। সাধারণতঃ "মিঠাই উত্সব" তিন দিন হয়। ছোট বাচ্চারা এক সাথে নিকটবর্তী প্রতিবেশীদের বাসায় গিয়ে মিঠাই পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। স্থানীয় প্রথা অনুযায়ী, ঐদিন বয়স্ক ব্যক্তিরা শিশুদের আবদার প্রত্যাখ্যান করেন না, তাই বাচ্চারা ঐ দিনে আনন্দচিত্তে ইচ্ছা মতো ঝুড়ি ভরা উপহার নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে।
আফ্রিকান দেশঃ
বেশির ভাগ পশ্চিম আফ্রিকান দেশগুলোর মাস ব্যাপী "শিশু আনন্দোত্সব " আছে। আফ্রিকানরানাচ-গানে পারদর্শী, "শিশু আনন্দোত্সবে" বিভিন্ন লোকদের জীবনযাত্রার মান আলাদা হলেও সকল বাচ্চারা খুব আনন্দ বোধ করে।
ইরাকঃ
উপরোক্ত দেশগুলোর বাচ্চাদের তুলনায় ইরাকের শিশুরা দুর্ভাগ্যবান। বহু দেশের শিশুরা শিশু দিবস পালনের সময় ইরাকের অনেক শিশু মোটেই জানে না, পৃথিবীতে তাদের এক বিশেষ উত্সব আছে।
কিছু ইরাকী লোক জানিয়েছেন, সাদ্দাম ক্ষমতাসীন থাকার বিশাধিক বছরে ১ জুন ইরাকের পেট্রোলিয়াম রাষ্ট্রায়ত্তকরণ দিবস ছিলো। প্রতি বছরের ঐ দিনে ইরাক দেশব্যাপী নানা উদযাপনী তত্পরতা আয়োজন করতো, কিন্তু শিশুদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, তাই বাচ্চারা কখনো শিশু দিবস পালন করে নি। উপেক্ষিত শিশু দিবসে ইরাকের কিন্ডারগাটেন আর প্রাথমিক স্কুলে কোনো উত্সবের পরিবেশ নেই, কোনো উদযাপনী তত্পরতাও নেই।
|