v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-06-16 19:56:54    
ইমাম ছেন কুয়াংইউয়ান

cri

    পাঁচ শো বছর পুরানো প্রসিদ্ধ তুংসি মসজিদ চীনের রাজধানী পেইচিংয়ের নগর কেন্দ্রের পূর্বাংশে অবস্থিত। সত্তর বছর বয়স্ক জনাব ছেন কুয়াংইউয়ান এ মসজিদের ইমাম। ইমাম হিসেবে তিনি এই মসজিদে নিয়োজিত হয়েছেন ৩৭ বছর হল। তিনি এখন যেমন দেশের অভ্য-তের খ্যাতনামা ইমাম, তেমনি চীনের গণ রাজন্যতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য। তিনি দয়ালু আর সৌহার্দ্যপূর্ণ।

    ১৯৩২ সালে উত্তর চীনের হোপেই প্রদেশের হুই জাতির একটি সাধারণ কৃষক পরিবানে ছেন কুয়াংইউয়ানের জন্ম। ছোট বেলায় তাঁর বাবার অকাল-মৃত্যু হয়। মা চাকির করে চার সন্তানকে খাইয়ে-পরিয়ে মানুষ করেন। তখন বাড়িতে দারুন অভাব ছিল, দুবেলা অন্নপুর্তি দুঃসাধ্যছিলো সন্তানদের লেখাপড়া তো আরো দুরের কথা। এতে তাঁর লেখাপড়া ও জ্ঞান লাভের ক্ষিধে আরো বেড়ে গেছে। ছেন কুয়াংইউয়ান স্মৃতি রোমন্থন করে বলেছেন, যখন আমি দেখলাম অন্যান্য ছেলেমেয়েরা স্কুল পড়তে যায়, তখন আমার ঘন খুব খারাপ ছিল। আমি ভাবতাম যদি তাদের মতো স্কুল যেতে পারতাম, তাহলে আমি কত সুখী হতাম। গুতরাং আমি তাদের কাছে আমাকে লেখা-পড়া শেখানোর জানাই।

    এই ধরনের পদ্ধতি ও প্রচেষ্টর উপর নির্ভর করে ছেন কুয়াংইউয়ান অনেক জ্ঞান অর্জন করেছেন। ১৯৪৪ সালে যখন তাঁর বয়স ১৯ বছর, তখন জীবনের অভাবের দরুন শিষ্য হিসেবে তাকে মসজিদে পাঠানো হয়েছে। মসজিদে তিনি অন্যদের বই ধার করে লিখে নিয়ে পড়তেন। তিনি একাধানে আরবী, ফারসী ও ইসলাম ধমীয় জ্ঞান এবং হান ভাষা অধ্যয়ন করেছেন।

    ১৯৪৯ সালে নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫২ সালে ছেন কুয়াংইউয়ান পরীফায় উত্তীর্ণ হয়ে পেইচিং হুই জাতির আরবী ভাষা প্রশিক্ষন কোর্সে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে লেখাপড়ার কৃতিত্বের জন্য তাকে ইসলাম ধর্মের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান--চীনের ইসলামিক ইনষ্টিটিউটে পাঠানো হয়। ধীরে ধীরে ইসলাম ধম্যের প্রচারের আজ তাকে খুব আকৃষ্ট করেছে। তিনি একজন যোগ্য ইমাম হবার তাগিদ অনুভাব করেন। তিনি বলেছেন, আমি মসজিদের একজন সাধারণ শিষ্য ছিলাম। ইসলাম ধর্মের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি হবার পর আমি আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মীয় প্রশিক্ষন গ্রহণ করেছি। এটা একজন কৃতী ইমাম হওয়ার জন্য মজবৃত ভিত্তি স্থাপন করেছে।

    গত শতাব্দির পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে তিনি পর পর দুটি মসজিদে নিয়োজিত হন। ১৯৬৬ সালে তিনি তুভসি মসজিদের ইমাম হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে তিনি মিসর, ইরাক, ইরান প্রভৃতি ইসলামী দেশ সফর করেছেন। সফরের মাধ্যমে এ সব দেশের মুসলমাদের সঙ্গে তাঁর সমঝোতা ও আদান প্রদান গভীরতর হয়েছে। তিনি সৌদি আরবের মক্কায় হজ করতে গিয়েছিলেন।

    এখন ছেন কুয়াংইউয়ান যেমন একজন কৃতি ইমাম হয়েছেন, তেমনি তিনি চীনের ইসলাম ধর্ম সমিতির চেয়ারম্যঅন আ চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটির স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যা পদে অধিষ্ঠিত হন। তিনি মুসলমানদের জীবনযাপন, ইসলাম ধর্মের প্রচারক প্রশিক্ষণ আর মসজিদের উন্মুক্তার উপর ব্যাপক মনোযোগ দেন। তিনি বলেছেন, মসজিদ উন্মুক্ত করা, ইসলাম ধর্মের অল্পবয়সী প্রচারকদের প্রশিক্ষণ দেয়া আর সংখ্যালঘু জাতীয় রেস্তরাঁর সংখ্যা বাড়াবার জন্য আমি সরকারের কাছে বহুবার প্রস্তাব উপস্থাপন করেছি। চীনের কেন্দ্রীয় সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান আমার এ সব প্রস্তাবের উপর ব্যাপক মনোযোগ দিয়েছে।

    জানা গেছে, চীন মোট ২ কোটি মুসলমান আছে। মূলত: মধ্য ও পশ্চিম চীনের এলঅকাগুলোতে তাদের বাস। চীনের গণ রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের এবারকার বার্যিক অধিবেষনে ছেন কুয়াংইউয়ান পশ্চিম চীনের মুসলমানদের দারিদ্রমোচন সম্পর্কে অধিবেশনের কাছে একটি প্রস্তাব উন্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন, চীন সরকার পশ্চিম চীনে ব্যাপক উন্নয়নের রননীতি বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে। এটা পশ্চিম চীনের মুসলমানদের দারিদ্রবিমোচন ও স্বচ্ছলতা বাস্তবায়নের জন্য উত্তম সুযোগ যুগিয়েছে। মুসলিম যুবক-যুবতীদের যেমন ধর্মায় জ্ঞান, তেমনি নানা রকম উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যাত্ত অধ্যয়ন করতে হবে। এমনি করলেই মুসলমানদের দারিদ্রবিমোচন আর স্বচ্ছলতা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।