v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-06-09 14:20:37    
ক্ষয়রোগ চিকিত্সা ও নিবারণে চীনের প্রাথমিক সাফল্য

cri
    ক্ষয়রোগ হচ্ছে টিউবারকস ব্যাসিলাস-জনিত একধরণের দীঘর্কালস্থায়ী সংক্রামক রোগ । টিউবারকস ব্যাসিলাস মানবদেহের বিভিন্ন যন্ত্র , বিশেষ করে ফুসফুসকে আক্রান্ত করতে পারে । তাই যক্ষ্মারোগ সবচেয়ে বেশী হয় । কিছু কিছু যক্ষ্মারোগ সংক্রামক । সংক্রামক যক্ষ্মারোগের রোগীরা কাসি , হাচি , থু থু ফেলা ইত্যাদির মাধ্যমে টিউবারকস ব্যাসিলাস ছড়াতে পারে । সুস্থ লোকেরা টিউবারকস ব্যাসিলাস ফুসফুসে শুষে নিয়ে আক্রান্ত হতে পারে । কিন্তু মানবদেহের নিদির্ষ্টমাত্রার প্রতিরোধ শক্তি রয়েছে বলে টিউবারকস ব্যাসিলাসের সংস্পর্শে আসা সব লোক আক্রান্ত হয় না । গবেষণা থেকে দেখা গেছে , সংক্রামক যক্ষ্মারোগের একজন রোগী বছরে দশ থেকে পনেরোজন লোককে সংক্রামক করতে পারে ।

    এখন প্রশ্ন জাগে , সাধারণ লোকেরা ক্ষয়রোগ সম্পর্কে অন্তত: কি কি ক্ষেত্রের জ্ঞান জানা দরকার ? চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ক্ষয়রোগ বিশেষজ্ঞ পরামর্শ কমিটির উপদেষ্টা দুয়ান মু হোন চুন বলেছেন ,

    "আমি মনে করি , দুটি জ্ঞান জানা দরকার । প্রথমত: ক্ষয়রোগের উপসর্গ । একটানা তিন সপ্তাহেরও বেশী সময় – স্থায়ী কাসি ও থুথু'র রোগীদের সজাগ হওয়া দরকার । দ্বিতীয়ত: যক্ষ্মারোগী চিণ্হিত হওয়ার পর রোগীদের ছয় থেকে আট মাসের চিকিত্সা নিতে হয় এবং চিকিত্সার প্রক্রিয়ায় ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা চলে না ।"

    তিনি বলেছেন ,যে কোনো লোকের ক্ষয়রোগের সন্দেহজনক উপসর্গ দেখা দিলে তাকে সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নিতে হয় ।

    চীনে বতর্মানে ৪৫ লক্ষ যক্ষ্মারোগী রয়েছে । রোগীদের সংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীতে চীনের স্থান দ্বিতীয় অথার্ত্ ভারতের পরই চীনের স্থান । তাছাড়া চীনে নতুন যক্ষ্মারোগীদের সংখ্যা বছরে ১৪ লক্ষাধিক করে বাড়ছে । ক্ষয়রোগের বিস্তার রোধ এবং জনসাধারণের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য চীন যাবতীয় সংক্রামক যক্ষ্মারোগীদের বিনামূল্যে চিকিত্সা করাচ্ছে এবং এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের অর্থবরাদ্দ বছর বছর বাড়ছে । চীনের উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী লোং দে বলেছেন ,

    "সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষয়রোগ নিয়ন্ত্রণখাতে অর্থবরাদ্দ বাড়িয়েছে । আগেকার প্রতিবছরের চার কোটি রেনমিনপি'র ভিত্তিতে ২০০৪ সালে হয়েছে ২৬ কোটি ৫০ লক্ষ । এই অর্থ প্রধানত: যক্ষ্মারোগীদের বিনামূল্যে চিকিত্সায় প্রয়োজনীয় ওষুধ কেনা এবং রোগীদের আবিষ্কারহার বৃদ্ধি ,স্বাস্থ্যশিক্ষা জোরদার ইত্যাদি তত্পরতা চালানো খাতে ব্যয় করা হয় ।"

    ক্ষয়রোগ নিবারণ ও চিকিত্সা ক্ষেত্রে চীন বৃটেন ,জাপান ও বিশ্ব ব্যাংক ইত্যাদি দেশ ও আন্তজার্তিক সংস্থার সঙ্গেও সহযোগিতা চালিয়েছে । যেমন ধরা যাক ,চীন বিশ্ব ব্যাংকের দেয়া ঋণ ও বৃটেন সরকারের দেয়া চাঁদা ব্যবহার করে হোপেই ,সিনচিয়াং ,অন্তর্মংগোলিয়া ইত্যাদি ১৬টি প্রদেশ ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে ক্ষয়রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প চালিয়েছে । এই প্রকল্প বাস্তবায়নে খুবই ভালো ফল পাওয়া গিয়েছে । এই প্রকল্প ২০০৪ সালে বিশ্ব ব্যাংকের সবোর্চ্চ পুরস্কার "বিশ্ব ব্যাংকের গভর্ণরের পুরস্কার" পেয়েছে ।

    চীনের উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী লোং দে বলেছেন ,প্রচেষ্টার মাধ্যমে চীনের ক্ষয়রোগ নিবারণ ও চিকিত্সা ক্ষেত্রে প্রাথমিক সাফল্য পাওয়া গিয়েছে ।

    "২০০৪ সালের শেষ নাগাদ সারা দেশে নিবন্ধিত নতুন আবিষ্কৃত সংক্রামক যক্ষ্মারোগীদের চিকিত্সায় আরোগ্য লাভের গড়পড়তা হার হয়েছে ৯১.৬ শতাংশ । তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উত্থাপিত ৮৫ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে ।"

জানা গেছে ,বিংশ শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের পর চীনে সংক্রামক যক্ষ্মারোগে আক্রান্তদের সংখ্যা বছরে গড়পড়তা ৩ শতাংশেরও বেশী হারে কমছে ।

    উপরুল্লিখিত সাফল্য পাওয়া গেলেও চীনের ক্ষয়রোগ নিবারণ ও চিকিত্সার কাজ এখনো কিছু অসুবিধা ও সমস্যার সম্মুখীণ । যেমন ভ্রাম্যমান জনসংখ্যার অবিরাম বৃদ্ধি এই কাজকে আরো কঠিন করে তুলেছে । তাই চীনের কিছু কিছু শহর আগেকার শুধু স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে ক্ষয়রোগ নিবারণ ও চিকিত্সার কাজ চালানোর ব্যবস্থা পরিবতর্ন করে বহিরাগত যক্ষ্মারোগীদেরও সময়মত বিনামূল্যে চিকিত্সা করাচ্ছে ।