v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2005-06-08 21:44:03    
বটসোয়ানা

cri
    দেশের নামঃ বটসোয়ানা প্রজাতন্ত্র (ম্যাপ)

    স্বাধীনতা দিবসঃ ৩০ সেপ্টেম্বর (১৯৬৬)

    জাতীয় দিবসঃ ৩০ সেপ্টেম্বর (১৯৬৬)

    জাতীয় পতাকাঃ পতাকার মধ্যকার কালো রংয়ের মানে বটসোয়ানার লোকসংখ্যার মধ্যে অধিকাংশই কৃষ্ণাঙ্গ ;আর সাদা রংয়ের মানে সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গ। নীল রং হলো নীল আকাশ ও জলের প্রতীক। গোটা পতাকার অর্থ হলো আফ্রিকার নীল আকাশে কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান।

    জাতীয় প্রতীকঃ প্রতীকের মাঝখানে খাজঁকাটা ঢাল। ঢালের মাঝখানে হালকা নীল ও সাদা রংয়ের নীচে গরুর মাথা হলো বটসোয়ানার ঐতিহ্যিক পশু-পালন  শিল্পের প্রতীক, উপরের তিনটি গিয়ার হলো গ্রামাঞ্চল ও উন্নত শিল্পের মধ্যে সহযোগিতার প্রতীক। খাজঁকাটা ঢালের বামে একটি হাতির দাঁত, ডানে একটি জোয়ারগাছ, তা হলো কৃষির প্রতীক। দুটি আফ্রিকান জেব্রা ঢালটি ঠেসে ধরছে। হাতির দাঁত ও জেব্রা হলো বটসোয়ানার পশুপাখি। জেব্রার সাদা ও কালো ডোরার মিশ্রণ হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গের সহাবস্থানের প্রতীক। নিচের ফিতায় স্থানীয় ভাষায় লেখা বৃষ্টি ও শিশির হলো জনগণের ভালো আবহাওয়ার আশাআঙ্খা।

    রাষ্ট্র প্রধানঃ প্রেসিডেন্ট ফেস্টাস মোগেই। তিনি ১৯৯৮ সালের ১লা এপ্রিল শপথ গ্রহন করেন। ১৯৯৯ সালে অক্টোবর মাসের নির্বাচনে নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালের অক্টবর মাসে তিনি পুনঃনির্বাচিত হন।

    ভৌগোলিক অবস্থানঃ আয়তন ৫ লক্ষ ৮১ হাজার ৭শ ৩০ বর্গকিলোমিটার। আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড়পড়তা উচ্চতা ১ হাজার মিটার। তার পূর্ব দিকে জিম্বাবুয়ে, পশ্চিমাংশ নামিবিয়ার সঙ্গে সংলগ্ন, উত্তরাংশের প্রতিবেশী জাম্বিয়া, দক্ষিণ সীমান্তের অদূরেই আফ্রিকা । বটসোয়ানা দক্ষিণ আফ্রিকা উচ্চভূমির মধ্যকার কালাহারি মরুভূমিতে অবস্থিত, উত্তর-পশ্চিমাংশে জলাভূমি, দক্ষিণ-পূর্বাংশ ও ফ্রান্সিসটনের নিকটবর্তী পাহাড়ি অঞ্চল। অধিকাংশ অঞ্চল গ্রীষ্মমন্ডলীয় বিশুষ্ক তৃণপ্রধান বৃক্ষহীন আবহাওয়ায় রয়েছে। পশ্চিমাংশ মরুভূমি আবহাওয়া ও অনুরূপ মরুভূমি আবহাওয়ায় অবস্থাতি। গড়পড়তা তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। গড়পড়তা বৃষ্টিপাতের পরিমান ৪০০ মিলিমিটার।

    লোকসংখ্যাঃ ১৬ লক্ষ ৫১ হাজার (২০০০ সালের সরকারী পরিসংখ্যান)। অধিকাংশ মানুষ বান্টু ভাষাভাষী সোয়ানা জাতি (মোট লোকসংখ্যার ৯০ শতাংশ)। সারা দেশে ৮টি প্রধান জাতি আছে। রাষ্ট্র-ভাষা ইংরেজী, সাধারণত মানুষ সোয়ানা ও ইংরেজী ভাষায় কথা বলে। অধিকাংশ মানুষ প্রটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী । গ্রামাঞ্চলের কিছু লোক স্থানীয় ধর্ম পালন করে।

    রাজধানীঃ গাবোরোনে, লোকসংখ্যা ২ লক্ষ ১৩ হাজার(১৯৯৯ সালের সরকারী পরিসংখ্যান)। গড়পড়তা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮.৩ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড, নিম্নতম তাপমাত্রা ১২.৯ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড, গড়পড়তা তাপমাত্রা ২০.৭ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড।

    প্রশাসনিক অঞ্চলঃ সারা দেশে ১০টি প্রশাসনিক অঞ্চল।

    সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ সোয়ানা জাতির লোকেরা ১৩ ও ১৪ শতাব্দীতে বপসোয়ানার বাইরে উত্তর দিকে এসে বসবাস করতে শুরু করে। ১৮৮৫ সালে ব্রিটেনের উপনিবেশ হয়। ১৯৬৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর স্বাধীন হয়, দেশের নাম বদলে বটসোয়ানা প্রজাতন্ত্র । তখন গণতান্ত্রিক পার্টির নেতা গামা প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন। ১৯৮০ সালের জুলাই মাসে গামা মৃত্যুর পর, মাসিলেই প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন। ১৯৮৪, ১৯৮৯ ও ১৯৯৪ সালে গণতান্ত্রিক পার্টি সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়, মাসিলেই তিনবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে মাসিলেই পদত্যাগ করেন, ১লা এপ্রিল ফেস্টাস প্রেসিডেন্ট পদে শপথ গ্রহন করেন।

    রাজনীতিঃ সংবিধান অনুযায়ী, বটসোয়ানায় বহু-দলীয় ও সংসদীয় ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয় এবং আইন প্রণয়ন, প্রশাসন ও বিচার এই তিনটি ক্ষমতার পৃথকীকরণ ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন দেশের নেতা, সরকারী নেতা এবং সেনাবাহিনীর প্রধান। প্রেসিডেন্ট জাতীয় কংগ্রেসের নির্বাচনে নির্বাচিত হন, কার্যমেয়াদ ৫ বছর, পুনঃনির্বাচিত হতে পারেন। যদি প্রেসডেন্টের মৃত্যু হয় বা তিনি পদত্যাগ করেন, তাহলে ভাইস-প্রেসিডেন্ট তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় কংগ্রেস নিয়ে সংসদ গঠিত হয়, তা আইন প্রণয়ন ক্ষমতা পালন করে। জাতীয় কংগ্রেসে গৃহিত প্রস্তাব ও আইন প্রেসিডেন্টের অনুমতি পেলে কার্যকরী হতে পারে। প্রেসিডেন্টের জাতীয় কংগ্রেসের আধিবেশন আহবান অথবা তা বিলুপ্ত করার ক্ষমতা আছে। গোষ্ঠীপতি পরিষদ হলো কংগ্রেসের পরামর্শ সংস্থা, তা ১৫জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়। গোষ্ঠীপতি পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন।

    অর্থনীতিঃ আফ্রিকার অন্যান্য দেশের তুলনায় বটসোয়ানা অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল। হীরক, গবাদিপশু-পালন ও কারখানা শিল্প হলো বটসোয়ানার প্রধান শিল্প। বটসোয়ানায় খনিজ-সম্পদ নানা রকম এবং পরিমান বেশী, তেলের অনুসন্ধান কাজ চলছে। হীরকের মোট পরিমান ও উত্পাদন পরিমান বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে। হীরক প্রধানতঃ রপ্তানি হয়, তার বিক্রি-জনিত আয় দেশের আয়ের প্রধান উত্স। ঐতিহ্যিক হালকা শিল্প প্রধানতঃ পশু-জাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ, এরপর রয়েছে পানীয়, ধাতু প্রক্রিয়াকরণ ও বস্ত্রবয়ন শিল্প। সাম্প্রতিক বছরে,গাড়ী এসেব্লিং শিল্প দ্রুত উন্নত হচ্ছে, তা দেশের আয়ের দ্বিতীয় প্রধান উত্স। কৃষি খুব অনুন্নত , ৮০ শতাংশ খাদ্যশস্য আমদানি হয়। পশু-পালন শিল্পে গরু-পালন প্রধান ভূমিকায় রয়েছে, তা কৃষি ও পশু-পালনের মোট আয়ের ৮০ শতাংশ, বটসোয়ানা জাতীয় অর্থনীতির প্রধান অংশ। বটসোয়ানার পশু-পাখি সম্পদ প্রচুর বলে পর্যটন শিল্প খুব সমৃদ্ধ। দেশের ৩৮ শতাংশ ভূমিতে বন্য-প্রাণী আশ্রয় অঞ্চল স্থাপিত হয়, তাতে ৩টি জাতীয় পার্ক ও ৫টি বন্য-প্রাণী আশ্রয় এলাকা রয়েছে।

    পররাষ্ট্র নীতিঃ এই দেশ জোট-নিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করে, সক্রিয়ভাবে আঞ্চলিক রাজনৈতিক ব্যাপারাদিতে ও অর্থনৈতিক সহযোগিতায় অংশ নেয়।

    চীনের সঙ্গে সম্পর্কঃ ১৯৭৫ সালের ৬ জানুয়ারী, বটসোয়ানা এবং চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।